আগামীতে উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও দলীয়ভাবে করার সুযোগ তৈরি করে আইন সংশোধনের ইঙ্গিত দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
Published : 03 Mar 2014, 05:07 PM
বর্তমান আইনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়ার সুযোগ না থাকলেও প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা দেখা দেয়।
চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও এই তৎপরতা দেখা গেছে, এর মধ্যেই ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক আইনি বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ইঙ্গিত দিলেন।
সোমবার মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “স্থানীয় নির্বাচনে কেউ দলীয় প্রতীক ও দলের নাম ব্যবহার করতে পারবে না কেন? কেন লুকোচুরি থাকবে? দলগতভাবে কেন অংশ নিতে পারব না।
“গণমাধ্যমে বলা হয়, আওয়ামী লীগ এত পেল, বিএনপি এত পেল। কী করে বুঝব যে এরা আওয়ামী লীগ, তারা বিএনপি।”
এই অবস্থার পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইনটি পরীক্ষা করতে বলেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “স্থানীয় সরকারকে গতিময় করতে আইন সংশোধন জরুরি। আশা করি, শিগগিরই একটি ড্রাফট বিল সংসদে তুলতে পারব।”
স্থানীয় সরকারকে রাজনৈতিক শাসন ব্যবস্থায় বাইরে যারা রাখতে চান, তারা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় বিশ্বাস করেন না বলে দাবি করেন আশরাফ।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে দুই ধরনের শাসন ব্যবস্থা চলছে। একটা হচ্ছে সংসদীয় শাসন, আরেকটা হচ্ছে রাষ্ট্রপতির শাসন। এক দেশে দুই ধরনের শাসন কেন থাকবে?
“স্থানীয় সরকারে এখন ব্যক্তির শাসন চলে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এক ব্যক্তি। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আইন সংশোধনের প্রয়োজন।সংসদীয় পদ্ধতিতে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে।”
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “খালেদা জিয়ার আমলে একটা পৌরসভাতেও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তিনি উপজেলায় বিশ্বাস করেন না।
“১৯৯১ সালে যখন ক্ষমতায় আসলেন তখন নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ ছিল। উনি পরিষদ বাতিল করে সকল চেয়ারম্যানদের বরখাস্ত করেছেন। তাহলে এখন কেন নির্বাচনে এলেন?”
নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামার মাধ্যমে রাজনীতিকদের চরিত্র ‘হনন’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে এই সংক্রান্ত আইন সংশোধনের কথা বলেছেন আশরাফ।
“আমি ইনকাম ট্যাক্স দেই, আপনারাও দেন। সেখানেই আমার সব হিসাব-নিকাশ থাকে। কিন্তু আমি যখন নির্বাচনে অংশ নিতে চাই, তখন আমার ক্ষেত্রে আইনের ব্যতিক্রম কেন হবে?”
“হলফনামার মাধ্যমে একজন রাজনীতিবিদকে দুর্নীতিবাজ, দখলদার, সন্ত্রাসী হিসেবে দেখানো হয়। রাজনীতিবিদদের কলুষিত করতে এটা ব্যবহার করা হচ্ছে।”
নির্বাচন কমিশনে দেয়া প্রার্থীদের হলফনামায় দেয়া তথ্য ধরে গণমাধ্যমে রাজনীতিকদের সম্পদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যা আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন কয়েকজনের সম্পদের অনুসন্ধানও শুরু করেছে।
“হলফনামার আইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে,” বলেন আশরাফ।
সম্মেলনে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া রাজপথ ‘দখলে’ রাখতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে পাকিস্তান-সোমালিয়া বানাতে চান। উনাকে বলবো-শান্তির পথে আসুন।”
মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আগাখাঁন মিন্টুর সভাপতিত্বে সম্শেলনে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজ, স্থানীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক প্রমুখ।