somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটা পিএসসি রেজাল্ট এবং দু'টো জেএসসি মৃত্যু।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা ছোট্ট ভাই আছে। কাজিন। পিএসসি পরীক্ষা দিলো। ১০ বছরও হয়নি বয়েস। গ্রামের বাড়িতে গেলে সারাদিন পিছে পিছে ঘোরে। বছর খানেক আগে একবার বীরশ্রেষ্টদের নাম, জাতীয় দিবস গুলো জিজ্ঞাসা করেছিলাম। সব পারেনি। বলেছিলাম, 'এর পর আর একবারও যদি না পারিস তো আমার সাথে কথা বলবি না'। এরপর থেকে এগুলো সব জেনে রেখেছে। গেলেই বলে আমার পড়া ধরো। বলেই টপাটপ মুখস্ত বলে যায়।

গতকাল ওর পিএসসি রেজাল্ট দিয়েছে। মা গতকাল দুপুরে ফোন দিয়ে বললো, 'রণি, রূপমের রেজাল্ট খারাপ হইছে। ওদের বাসার সবার মন খারাপ। ফোন দিস'। ফোন রূপমকে দিতেই জিজ্ঞাসা করলাম, 'কি-রে? কত পাইছিস?'। ওপাশ চুপ। কোনো কথা নেই। আবার জিজ্ঞাসাইলাম, 'কিরে? এই? কী হইছে?' আমার সারাদিন মুখ হাসিহাসি করে রাখা ভাইটা ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো, 'আমার রেজাল্ট খারাপ হইছে'।

ওর বাবাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, 'কিসে ফেল করছে রূপম?' খুব মন খারাপ করে আমাকে বললো, 'ফেল করবে ক্যান? 'এ প্লাস' পায় নাই। বাংলা আর বিজ্ঞানে 'এ' পাইছে। পয়েন্ট ৪.৬৬'। আমার আর কিছু বলার ইচ্ছে হয়নি।

আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই পড়লাম ১৩/১৪ বছরের দুটো বাচ্চা ছেলে জেএসসিতে 'এ প্লাস' পায়নি বলে আত্মহত্যা করেছে। কথাটা যত সহজ শোনাচ্ছে তত সহজ না। পূর্ণ বয়স্কদের আত্মহত্যার কথা শুনেছি। পোষ্টমর্টেম করতে গিয়ে যত লাশ দেখেছি তার সবই পূর্ণ বয়স্ক। হয়তো জীবন যুদ্ধে হারতে হারতে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেওয়া। কিন্তু দু'টো ১৩/১৪ বছরের শিশু? কিভাবে সম্ভব? কতটা চাপ প্রয়োগ করলে এরা এটা চিন্তা করতে পারে তাই ভাবতেই মাথাটা ধরে যাচ্ছে! সিস্টেমটাই এমন হয়ে গেছে যে 'এ প্লাস' না পাওয়াটাই ফেল এর কাতারে ধরা হচ্ছে। 'এ প্লাস' না পেলেই প্রতিযোগীতার বাজার থেকে ছুটে যাচ্ছে ভাবা হচ্ছে। ফলে জীবনের শুরুতেই জড় করে দেওয়া হচ্ছে পাহাড় সমান প্রত্যাশা। আর এই পাহাড়ে পিষ্ঠ হয়েই আত্মহত্যাকে বেঁচে নিতে হলো এ দু'টো শিশুর। রাষ্ট্রযন্ত্র একদিক দিয়ে সফল। এখন জিপিএ এর ভিত্তিতে মানুষ মরতেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:০৫
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×