বিএনপিতে এক দল খেলোয়াড়কে স্বাগত জানিয়ে আগামী দিনে তরুণদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেয়ার কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।
Published : 05 Mar 2014, 10:21 PM
“আগামী দিনে তরুণরাই দেশের নেতৃত্ব দেবে। আমরা জ্যেষ্ঠরা অভিভাবক হিসেবে তাদের পাশে থাকব,” বলেছেন তিনি।
বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে বিএনপি চেয়ারপারসন পুরনো ধ্যান-ধারণা বাদ দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন।
গুলশানে নিজের কার্যালয়ে বুধবার রাতে যে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বক্তব্য রাখেন, তাতে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকসহ ১৫ জন খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠক যোগ দেন।
আমিনুলের নেতৃত্বে তারা খালেদার হাতে ফুল দিয়ে তারা বিএনপিতে যোগ দেন। অন্য ফুটবলাররা হলেন ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, মাসুদ রানা, মিজানুর রহমান ডন, এনামুল হক, মেজবাহ উদ্দিন, জিয়াউর রহমান, অরূপ কুমার।
ফুটবলারদের সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় রাসেল কবির সুমন এবং ক্রীড়া সংগঠক কাজী শামীম তারেক, সালাহউদ্দিন হায়দার খোকন, জিয়াউর রহমান তপু, মাসুদ করীম, বজলুর রহমানও বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে যোগদানকারীদের মধ্যে আমিনুল, মেজবাহ ও নকীব বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ক্রীড়াঙ্গনে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্রীড়া ক্ষেত্রে নিজের সরকারের সময় গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন খালেদা।
“এই সরকার কোনো কাজ করছে না, শুধু নাম ফলক লাগায়। আমাদের আমলে ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি, আজ তা হচ্ছে না।”
সরকার খেলোয়াড় ও ক্লাবগুলোতে দলীয়করণ করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এতে খেলার মান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
খেলোয়াড়দের যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম ওসমান ফারুক, ফজলুর রহমান পটল, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীমও উপস্থিত ছিলেন।
‘এই সরকার আছে গায়ের জোরে’
বাংলাদেশে ‘বৈধ’ কোনো সরকার নেই দাবি করে খালেদা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বলেন, “তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে, ক্ষমতায় থাকার জন্য জাতিকে বিভক্ত করতে নানা রকম অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেয়া সঠিক ছিল বলে দাবি করেন তিনি। “ওই নির্বাচনে আমাদের ডাকেই জনগণ ভোট দিতে যায়নি।”
গত তিন মাসে বিরোধী জোটের ৩০৪ জন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে পুলিশ হত্যা করেছে দাবি করে তিনি বলেন, “এই সময়ে ৫৬ জনকে গুমও করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।”
সরকারি দমন-পীড়নের কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। সীমান্ত হত্যা বন্ধে সরকারের ‘নীরবতার’ কঠোর সমালোচনাও করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা।
দেশের মানুষ এই অবস্থার পরিবর্তন চায় দাবি করে এর সপক্ষে চলমান উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরেন তিনি।
“উপজেলা নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি বলে সরকারের গায়ে জ্বালা ধরেছে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের বিরুদ্ধে যেরকম অশ্লীল ভাষায় কথা বলা হচ্ছে, তা আমরা বলতে চাই না।”
উপজেলা নির্বাচনের পরবর্তী ধাপে সরকার ব্যাপক কারচুপির ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
“আমি তাদের বলব, উপজেলা নির্বাচন থেকে জনমত বুঝতে চেষ্টা করুন। আপনারা এমন অবস্থায় চলে যাবেন না, যাতে ক্রেইন দিয়ে আপনাদের টেনে তুলতে হয়।”
নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা যদি এতই জনপ্রিয় হয়ে থাকেন, তা হলে কেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছেন।”