টিফিনের পরে লেবু আমার সঙ্গে লাইব্রেরিতে দেখা করে যেও।বলে তিনি চলে গেলেন।একটু পরে লেবু এসে লাইব্রেরিতে ঢুকলে তিনি বললেন,'কাল থেকে তুমি মৌলভি সাহেবের সঙ্গে স্কুলে আসবে-কখনও একলা আসবে না,বলা রইল।এ কথা বলার জন্যই তোমাকে আসতে বলেছিলাম।আচ্ছা,এবার তুমি যেতে পারো।'
লেবু চলে গেল।এ নতুন ব্যাবস্থাটা কিন্তু মৌলভি সাহেবের মোটেই মনমতো হলো না।তিনি প্রকাশ্যেই বললেন,'আমার ঘাড়ে আবার এই ইবলিসটাকে চাপালেন কেন হেডমাস্টার মশাই?
হেডমাস্টার মশাই হেসে বললেন,'ইবলিস বলুন আর যাই বলুন,ছেলেটা কিন্তু ইনটেলিজেনট।এ ধরনের ছেলেদের বলতে পারেন,'অ্যাবভ অ্যাভারেজ,-সাধারণের ব্যাতিক্রম।সুযোগ পেলে,সুপথে চালিত হলে এরাই একদিন মানুষের মতো মানুষ হয়।'
এরপর মৌলভি সাহেব আর দ্বিরুক্তি করা সঙ্গত মনে করলেন না।মৌলভি সাহেব ভিন্ন জেলার লোক।লেবুদের পাড়ায় কাজী বাড়িতে জায়গির থাকেন।এ ব্যাবস্থার পর থেকে লেবুকে রোজই মৌলভি সাহেবের সঙ্গে স্কুলে আসতে হয়-পথে কারও সঙ্গে দুষ্টুমি করার তেমন সুযোগ আর হয় না।
কিছুদিন পরে স্কুলে শুরু হয়েছে হাফ-ইয়ার্লি পরীক্ষা।রুটিন মাফিক পরীক্ষার শেষের দিনে মৌলভি সাহেবের ওপর ভার পড়েছে ফোর্থ ক্লাসে গার্ড দেবার।সবাইকে বাদ দিয়ে লেবুর ওপর তাঁর সতর্ক দৃষ্টি।রাত-দিন দুষ্টুমি আর বাঁদরামি করে ছেলেটা পরীক্ষায় কি করে ভালো নম্বর পায়,আজ সে রহস্য তিনি ভেদ করবেন।নিয়মিত পড়াশোনা না করেও ভালো নম্বর পাবার সহজ পথ হলো পরীক্ষার সময় নকল করা।লেবু যা ছেলে,তার পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়।
আড়চোখে কিছুক্ষণ লেবুর হাবভাব লক্ষ করে মৌলভি সাহেবের মনে হলো অনুমানটা তাঁর যেন মিথ্যে নয়।লেবু কিছুক্ষণ পর পরেই বুক পকেটে বাঁ হাতের আঙ্গুল দিয়ে ফাঁক করে কি যেন দেখে নিচ্ছে,তারপর আবার লেখায় মন দিচ্ছে।
ব্যাপারটা দু-একবার দেখেই মৌলভি সাহেব লেবুর কাছে এগিয়ে এসে হঠাৎ বললেন,'দেখি তোমার জামার পকেটে কি আছে?
লেবু আমতা আমতা করে বলল,'ও কিছুই না স্যার।'
'কিছুই না কি রকম দেখি।'বলেই তিনি লেবুর বুক পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বের করলেন সিগারেটের একটা প্যাকেট।আর যায় কোথায়।মৌলভি সাহেব বলে উঠলেন,ছেলের এ বিদেও হয়েছে দেখছি।সাধে কি আর হোপলেস বলি?বলেই তিনি সিগারেটের প্যাকেটটা যেমনি খুলেছেন অমনি একটা অদ্ভুত কাণ্ড ঘটে গেল।হঠাৎ তিনি তিড়িং করে লাফিয়ে উঠলেন।ব্যাপারটা হলো-
চলবে.......