somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

: স্বামী-স্ত্রীর অধিকার

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের বৈবাহিক জীবনের কতেক ফলাফল এবং প্রয়োজনীয় চাহিদা রয়েছে। আর বিয়ে হচ্ছে এমন একটি সম্পর্ক যা স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই পারস্পরিক অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই অধিকারগুলো হচ্ছে শারীরিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, এবং অর্থনৈতিক অধিকার।
এ কারণেই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের এটা অবশ্য কর্তব্য যে, তারা সৌহার্দ্যপূর্ণ জীবন যাপন করবে এবং কোনো প্রকার মানসিক অসন্তুষ্টি ও দ্বিধা বাতিরেকেই তাদের যা কিছু আছে একে অন্যের জন্য অকাতরে ব্যয় করবে! আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন :
﴿وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ﴾ [النساء: ١٩]
‘আর তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সাথে উত্তম ব্যবহার কর।’ [সূরা আন-নিসা: ১৯]
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন :
﴿وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِي عَلَيۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَيۡهِنَّ دَرَجَةٞۗ ﴾ [البقرة: ٢٢٨]
‘আর স্ত্রীদের যা কিছু পাওনা রয়েছে তা উত্তম আচরণের মাধ্যমে পৌঁছে দাও। আর তাদের উপর পুরুষদের একটি উঁচু মর্যাদা রয়েছে।’ [সূরা আল-বাকারাহ: ২২৮]
স্ত্রীর জন্য তার স্বামীর যেরূপ অর্থ-সম্পদ ব্যয় করা কর্তব্য, তেমনিভাবে স্ত্রীরও এটা কর্তব্য যে সে যেন তার স্বামীর জন্য তার সাধ্যানুসারে যা প্রদান করার তা প্রদান করে। আর এভাবেই যখন স্বামী-স্ত্রী উভয়ই তাদের পারস্পরিক কর্তব্যগুলো আদায় করার জন্য প্রস্তুত হবে, তখনই তাদের উভয়ের জীবন হবে অতীব সুখময় এবং তাদের সম্পর্ক হবে চিরস্থায়ী। আর যদি এর বিপরীত হয়, তাহলে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ ও বিচ্ছেদ দেখা দেবে বৈকি। ফলে তাদের জীবন হয়ে পড়বে পুঁতিগন্ধময়।
স্ত্রীলোকদের সঠিক অবস্থার প্রতি দৃষ্টি রেখে তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার ও উপদেশ দানের ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য বাণী উদ্ধৃত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
«اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ، فَإِنَّ المَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلاَهُ، فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ، فَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ»
‘স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে তোমরা কল্যাণের উপদেশ গ্রহণ কর। কেননা তাদেরকে তৈরীই করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে, আর পাজরের যা সবচেয়ে বক্র তা উপরের অংশে থাকে। তুমি যদি তা সোজা করতে যাও তবে তা ভেঙ্গে যাবে। আর যদি এমনি ছেড়ে দাও তবে তা চিরদিন বক্রই থেকে যাবে। অতএব, তাদের ব্যাপারে কল্যাণের অসিয়ত গ্রহণ কর ।’
অন্য একটি বর্ণনায় আছে-
«إِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ لَنْ تَسْتَقِيمَ لَكَ عَلَى طَرِيقَةٍ، فَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَبِهَا عِوَجٌ، وَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا، كَسَرْتَهَا وَكَسْرُهَا طَلَاقُهَا»
‘মেয়েলোককে পাঁজরের হাড় থেকে তৈরী করা হয়েছে। তুমি কোনো অবস্থায়ই সোজাপথে দৃঢ় পাবে না। তার কাছ থেকে ফায়দা গ্রহণ করতে চাইলে তা গ্রহণ কর, কিন্তু তার মধ্যে বক্রতা থাকবেই । তুমি যদি তা সোজা করতে চাও, তবে তা ভেঙ্গে যাবে, আর ভেঙ্গে যাবার শেষ পরিণতি হচ্ছে বিচ্ছেদ বা তালাক ।’
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
«لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً، إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ»
‘কোন মুমিন পুরুষ যেন কেন মমিন স্ত্রীকে তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞা না করে। তার আচার আচরনের কোনো একটি অপছন্দনীয় হলেও অন্যটি সন্তোষজনক হতে পারে ।’
আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এসব হাদীসে পুরুষ লোকেরা তাদের স্ত্রীদের সাথে কি ধরনের আচরন করবে সে ব্যাপারে তার উম্মাতের প্রতি দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি এটাই জানাচ্ছেন যে, পুরুষদের কর্তব্য হচ্ছে এই যে, সহজ উপায়ে তাদের নিকট থেকে যতটুকু সুব্যবহার পাওয়া সম্ভব, তারা যেন তাই গ্রহণ করে। কারণ, সৃষ্টিগত কারণেই তাদের প্রকৃতির মধ্যে পুরুষদের চেয়ে কিছুটা অসম্পূর্ণতা রয়েছে, পূর্ণভাবে কোনো কিছু তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, তাদের মধ্যে একটি বক্রতা রয়েছে। অতএব, যাদেরকে যে প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করা হয়েছে, তাকে অস্বীকার করে তাদের কাছ থেকে কোনো প্রকার কল্যাণ বা ফায়দা লাভ করা সম্ভব নয়।
তাছাড়া এসব হাদীসে আরও এসেছে যে, মানুষের কর্তব্য হচ্ছে স্ত্রীলোকদের মধ্যকার ভালো ও মন্দ স্বাভাবগুলো তুলনা করে দেখা। এটা এজন্য যে, যদি কোনো পুরুষ তার কোনো আচরণে ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট হয় তাহলে এমন একটি স্বভাবের সাথে তা তুলনা করে দেখা প্রয়োজন যা দ্বারা সে সন্তুষ্ট হতে পারে। তার প্রতি শুধু ঘৃণা ও রাগস্বরে তাকাবে না।
আর অনেক পুরুষ এমন রয়েছে যারা তাদের স্ত্রীদের মধ্যে পরিপূর্ণ অবস্থা প্রত্যাশা করে অথচ বস্তুত:ই এটা সম্ভব নয়। আর এ কারণেই একটি তিক্ততা সৃষ্টি হয় তাদের মধ্যে ! আর সে জন্যই তাদের স্ত্রীদের দ্বারা তারা কোনো প্রকার উপকৃত হতে পারে না। বরং অধিকন্তু এই তিক্ততা সৃষ্টিতাপূর্ণ অবস্থা তাদেরকে বিচ্ছেদের দিকে ধাবিত করে। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘তুমি যদি তাকে সোজা করতে চাও তা হলে ভেঙ্গে ফেলবে- আর এর চুড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে তালাক।’ এমতাবস্থায় পুরুষের কর্তব্য হচ্ছে দ্বীন এবং শরীয়তের পরিপন্থী নয় এমন কিছু কাজ যা স্ত্রী করে সে ব্যাপারে সে যেন সহজভাবে গ্রহণ করে এবং দেখেও না দেখার অবস্থায় থাকা।
স্বামীর ওপর স্ত্রীর অধিকার এই যে, স্বামী তার খাবার, পোশাক পরিচ্ছদ, বাসস্থান এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সরবরাহ করবে। আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কালামে বলেছেন :
﴿وَعَلَى ٱلۡمَوۡلُودِ لَهُۥ رِزۡقُهُنَّ وَكِسۡوَتُهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ﴾ [البقرة: ٢٣٣]
‘স্ত্রীলোকদের খোর-পোষ এবং পরিধেয় বস্ত্র উত্তমভাবে সরবরাহ করা তাদের ওপর অবশ্য কর্তব্য।’ [সূরা আল-বাকারাহ: ২৩৩]
রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ»
‘তোমাদের (পুরুষদের) ওপর কর্তব্য হচ্ছে তাদের খাদ্য-সামগ্রী এবং বস্ত্রাদি প্রদান করা।’ [মুসলিম, ১২১৮]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এই মর্মে প্রশ্ন করা হলো যে, আমাদের কারো স্ত্রী থাকলে তার ওপর স্ত্রীর কি অধিকার রয়েছে। তিনি বললেন :
«أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ، أَوِ اكْتَسَبْتَ، وَلَا تَضْرِبِ الْوَجْهَ، وَلَا تُقَبِّحْ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ»
‘তুমি খেয়ে থাকলে তাকেও খাওয়াবে, তুমি পরিধান করল তাকেও পরিধেয় বস্ত্র প্রদান করবে, আর তার মুখমণ্ডলে কখনো আঘাত করবে না এবং তাকে গালিও দিবে না এবং তাকে ঘর ছাড়া অন্য কোথাও ত্যাগ করবে না’ । (আবু দাউদ)।
স্ত্রীর অধিকারের মধ্যে আরেকটি অধিকার হচ্ছে এই যে, স্বামীর যদি একাধিক স্ত্রী থাকে তাহলে তাদের মধ্যে সে ইনসাফ কায়েম করবে। ইনসাফ কায়েম করতে হবে তাকে তাদের খাদ্য-সামগ্রী, বাসস্থান এবং সহঅবস্থানের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ সার্বিক ব্যাপারেই তাদের সাথে সম্ভাব্য আদল রক্ষা করতে হবে। তাদের একজনের দিকে অত্যাধিক ঝুঁকে পড়া বড় বড় গুণাহসমূহের মধ্যে একটি।
রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ كَانَتْ لَهُ امْرَأَتَانِ فَمَالَ إِلَى إِحْدَاهُمَا، جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّهُ مَائِلٌ»
‘যদি কারো দু’জন স্ত্রী থাকে এবং তার একজনের দিকে যদি সে বেশী ঝুকে পড়ে তাহলে সে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপনীত হবে যে, তার শরীরের একাংশ অনুরূপ ঝুঁকে থাকবে ।’
কিন্তু প্রেম ও ভালোবাসা এবং অন্তরের প্রশান্তি ইত্যাদির ব্যাপারে মানুষের কোনো হাত থাকে না। কারণ এগুলো একান্তই মানসিক ব্যাপার। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে যদি আদল সম্ভব না হয় এবং কিছুটা তারতম্য ঘটে তা হলে তাতে কোনো পাপ হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿ وَلَن تَسۡتَطِيعُوٓاْ أَن تَعۡدِلُواْ بَيۡنَ ٱلنِّسَآءِ وَلَوۡ حَرَصۡتُمۡۖ﴾ [النساء: ١٢٩]
‘তোমাদের ইচ্ছা থাকলেও (একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে) তোমরা আদল রক্ষা করতে সক্ষম হবে না।’ [সূরা আন-নিসা: ১২৯]
রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিবিদের ক্ষেত্রে (সময়) বণ্টন করে নিতেন এবং আদল রক্ষা করতেন। তিনি এ ব্যাপারে এই বলে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতেন:
«اللَّهُمَّ هَذَا قَسْمِي، فِيمَا أَمْلِكُ فَلَا تَلُمْنِي، فِيمَا تَمْلِكُ، وَلَا أَمْلِكُ»
‘হে আল্লাহ ! যে ব্যাপারে আমার কর্তৃত্ব ও মালিকানা রয়েছে সে ব্যাপারে আমার বন্টন ব্যবস্থা এই। আর যে ব্যাপারে আমার কোনো মালিকানা বা কর্তৃত্ব নেই বরং তুমিই তার মালিক সে ব্যাপারে আমাকে ভৎর্সনা করো না ।’
কিন্তু দু’জন স্ত্রীর ক্ষেত্রে এক জনের সম্মতিক্রমে যদি দ্বিতীয় জনের সাথে অবস্থানের অনুমতি নেওয়া হয়, তবে তাতে কোনো ক্ষতি নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ দৃষ্টান্ত রয়েছে যে, তিনি আয়েশার জন্য তার (প্রাপ্য) দিনটি এবং সাওদা কর্তৃক আয়েশার জন্য প্রদত্ত দিনটিও আয়েশার জন্য বণ্টন করে দিয়েছেন। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু শয্যায় শায়িত অবস্থায়ও জিজ্ঞেস করছিলেন,
«أَيْنَ أَنَا غَدًا؟ أَيْنَ أَنَا غَدًا؟»
‘আমি আগামীকাল কোথায় থাকব? আমি আগামীকাল কোথায় থাকবো?’
অতঃপর তাঁর স্ত্রীগণ তাঁকে এই মর্মে অনুমতি দিলেন যে তিনি যেখানে ইচ্ছা সেখানেই থাকতে পারেন। অতঃপর তিনি আয়েশার গৃহেই অবস্থান করেন এবং সেখানেই মারা যান।
স্ত্রীর ওপর স্বামীর অধিকার স্ত্রীর অধিকারের চেয়েও বড়। কারণ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِي عَلَيۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَيۡهِنَّ دَرَجَةٞۗ ﴾ [البقرة: ٢٢٨]
‘তাদের ওপর যে রূপ সদাচার প্রয়োজন, তাদের জন্যও অনুরূপ প্রয়োজন এবং তাদের ওপর পুরুষদের একটি মর্যাদা রয়েছে।’ [সূরা আল-বাকারাহ: ২২৮]
পুরুষই হচ্ছে স্ত্রীর পরিচালক। কারণ পুরুষ লোক স্ত্রী লোকের সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ, শিষ্টাচার শিক্ষাদান এবং দেখা-শোনার ব্যাপারে দায়িত্বশীল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿ ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ وَبِمَآ أَنفَقُواْ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡۚ﴾ [النساء: ٣٤]
‘পুরুষগণ মহিলাদের অভিভাবক এবং দায়িত্বশীল। এটা এজন্য যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের একের ওপর অন্যদের বিশিষ্টতা দান করেছেন এবং যেহেতু পুরুষগণ তাদের সম্পদ থেকে তাদের স্ত্রীদের জন্য ব্যয় করে থাকে।’ [সূরা আন-নিসা: ৩৪]
স্ত্রীর ওপর পুরুষের অধিকারের মধ্যে আরও রয়েছে, আল্লাহর অবাধ্যতা ব্যতিরেকে সর্বক্ষেত্রে সে তার স্বামীর আনুগত্য করবে এবং তার ধন-সম্পদ ও তার গোপনীয়তার সংরক্ষণ করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ المَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا»
‘যদি আমি কোনো মানুষ অপর কারও জন্য সিজদা করার অনুমতি দিতাম, তবে মহিলাকে তার স্বামীকে সিজদা করতে নির্দেশ দিতাম’ ।
অন্য হাদীসে এসেছে,
«إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا المَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ»
‘যদি কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সাথে শয্যাশায়ী হতে আহ্বান জানায় এবং যদি উক্ত স্ত্রী তা অস্বীকার করে এবং স্বামী তার ওপর রাগাম্বিত অবস্থায় রাত কাটায়, তাহলে সকাল পর্যন্ত ফিরিশতাগণ তার ওপর অভিশম্পাত বর্ষণ করেন’ ।
স্ত্রীর ওপর স্বামীর আরেকটি অধিকার এই যে, স্বামীর কোনো বৈধ স্বার্থে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে এমন কোনো কাজ স্ত্রী করবে না, চাই তা কোনো (নফল) ইবাদতের মাধ্যমেই হোক না কেন। রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
«لاَ يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَصُومَ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ إِلَّا بِإِذْنِهِ، وَلاَ تَأْذَنَ فِي بَيْتِهِ إِلَّا بِإِذْنِهِ»
স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে স্ত্রীর রোজা (নফল) রাখাও জায়েয হবে না এবং স্বামীর অনুমতি ব্যতিত তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়াও স্ত্রীর জন্য বৈধ নয় ।’
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতে প্রবেশের উপায়সমূহের মধ্যে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর সন্তোষকে একটি অন্যতম উপায় বলে গণ্য করেছেন। উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَنْهَا رَاضٍ دَخَلَتِ الجَنَّةَ»
‘যদি কোনো স্ত্রী এমতাবস্থায় মারা যায় যে তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট, তা হলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ [তিরমিযী, ১১৬১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×