somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষমতাবানের গায়ে জরানো থাকে রাজ হংসের পালক, যেখানে পঙ্কিলতার দাগ লেগে থাকে না।

১২ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কোন কথাটি ন্যায় আর কোনটি অন্যায় এটা কি কাউকে বলে বোঝাতে হয়? হয় না। কারণ ঐ বোধটুকু মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন তার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানব কুলের মগজে দিয়ে দিয়েছেন।

কিন্তু বিরোধটা বাধে তখনই যখন অলিখিত নিয়ম হয়ে যায় যে, সব সত্য বলতে নেই। সব অন্যায় দেখতে নেই। ক্ষমতাবানদের ক্ষমতার অপব্যবহার দেখেও না দেখার ভান করে থাকতে হয়। তাদের অন্যায় আচরণ ক্ষমতাহীনদের দেখতে নেই। তার প্রতিবাদ করতে নেই। যদি কোন ক্ষমতাহীন এই বিধান লঙ্ঘন করে তার ঘাড়ের উপর খড়গ নেমে আসবে এটাই স্বাভাবিক।

নিয়ম হল আপনাকে প্রতিবাদী হয়ে উঠার পূর্বেই ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে হবে। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটা হাস্যকর; কারণ আপনি যখন ক্ষমতাধর হয়ে উঠবেন তখন আর আপনি প্রতিবাদী থাকবেন না। প্রতিবাদ আর ক্ষমতা একই দেহ অবলম্বন করে থাকতে পারে না। ক্ষমতাধর তার ক্ষমতা ধরে রাখতেই হয়ে উঠেন আপোষ কামী। ব্যতিক্রম যে একেবারেই নেই তা হয়ত নয়। তবে তা কালে ভদ্রে। অতি ভাগ্যবান কোন কোন জাতীর ক্ষেত্রে কালে ভদ্রে এমন প্রতিবাদী ক্ষমতাধর মহান পুরুষের আবির্ভাব হয়। তবে তাকেও আজন্ম লড়েই যেতে হয় শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে।
যাই হোক, বলছিলাম ক্ষমতা আর সততার একত্রে বাস দুঢ়হ। বলা যায় এটা পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম শাসকের ক্ষেত্রেই লক্ষ করা গেছে। যে সব ক্ষমতাশালীরা সত্যিই সৎ ছিলেন তারা আজো পরম পূজনীয় হয়ে আছেন তাদের এই বিরল গুনটির জন্যে। একজন ক্ষমতাবান মানুষ সাধারণ মানুষের সমালোচনাকে কিংবা তার কোন ভুল ধরিয়ে দেয়াকে হাসি মুখে মেনে নিবেন। এটা তো অনেক বড় বিষয় যা তাকে মহামানবের কাতারে উন্নীত করে দিতে সক্ষম। দুর্ভাগ্য, ক্ষমতাধরদের পরম পূজনীয় হওয়ার সাধ খুব কমই হয়। এটা সচারচর ঘটে না।

ক্ষমতা, সততা আর সহনশীলতা এই তিনের রসায়ন আদৌ হয়ে ওঠে না। আর তাই অনেক সৎ প্রভাবশালীকেও নৃশংস হয়ে উঠতে দেখা যায় কেবলমাত্র সহনশীলতার অভাবে। আর তাই বোধ হয় প্রভাবশালীদের মাঝ থেকে সৎ প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর খুব কমই শোনা যায়। ওটা বঞ্চিত শ্রেণীর মধ্য থেকেই উঠে আসে।
এই সব সাধারণ কণ্ঠস্বরকে আবার একটা সীমারেখা মানতেই হয়। এটাই নিয়ম। প্রতিবাদ করবেন করুন। আগে পেছনে চেয়ে দেখুন আপনার মাথা বাঁচাতে ভিন্ন স্বার্থে হলেও কোন ক্ষমতাধরের ছায়া আছে কিনা। সেই সাথে এটাও ভাবুন; কার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে তা সামাল দিতে পারবেন তো?

আপনার হাতের খাবারটি কেড়ে নিয়ে কোন ক্ষুধার্ত নিজ মুখে পুড়ে দিলে আপনি তাকে মারুন, কাটুন কোন অসুবিধা নেই। আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন রাস্তার শত শত মানুষ। তারাও মনের সুখে পেটাবে সেই হাভাতেকে। শেষ পর্যন্ত হয়ত সেই পিটুনিতে সে মারাই পড়বে। তাতেও সমস্যা নেই।

কেউ আপনার গালে দুটো চড় মাড়া তো দুরের কথা আপনাকে সামান্য ভৎসনাও করবে না। কিন্তু এই আপনিই যদি এলাকার শীর্ষ চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেন। আপনার পাশে এসে তো কেউ দাঁড়াবেই না উলটো অপদস্থ করবে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন সকলের কাছ থেকেই পাবেন বৈরি আচরণ। কারণ ঐ একটাই আপনি এখানে ক্ষমতাধর নন। প্রতিবাদ করার আগে এটা তো জেনে নিন, ক্ষমতাবানেরা অন্যায় করেন না। তাদের গায়ে জরানো থাকে রাজ হংসের পালক, যেখানে পঙ্কিলতার দাগ লেগে থাকে না।

[email protected]
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×