আদালত অবমাননার অভিযোগে সাংবাদিকদের নিষ্কৃতি পাওয়ার ঘটনায় সংবাদপত্রে প্রকৃত সত্য তুলে না ধরায় আইনজীবী শাহদীন মালিককে তিরস্কার করেছে আদালত।
Published : 13 Mar 2014, 09:13 PM
এক পর্যায়ে আদালতে ভুল স্বীকার করে শাহদীন মালিক নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নেন।
আদালত অবমাননার অভিযোগে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে রায় প্রদানের আগে বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের বেঞ্চে তিনি তিরস্কৃত হন।
রায়ের আগে বিচারকরা এজলাসে আসার পর ওই বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাঈমা হায়দার বলেন, “সাংবাদিকদের অব্যাহতি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে কিছু কথা আছে, সেটা আমার ব্রাদার (কনিষ্ঠ বিচারপতি) বলবেন।”
তখন ওই বেঞ্চের অপর বিচারপতি জাফর আহমদ বলেন, “গতকাল সাংবাদিকদের অব্যাহতি নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো ‘আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন সাংবাদিকেরা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। প্রথম পৃষ্ঠায় শুরু হওয়া এই সংবাদ শেষ হয়েছে ৯পৃষ্ঠায়।
“এই খবরের সর্বশেষে বলা হয়েছে, রায়ের পর শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালত প্রসিডিং ড্রপ করে রায় দিয়েছেন। ফলে তাঁরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন’।”
বিচারক বলেন, “তারা যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে অব্যাহতি পেয়েছেন, সেটা আপনি বলেছেন কি-না।”
শাহদীন মালিক তার অবস্থানে ব্যাখ্যা দিতে চাইলে আদালত বলে, “ব্যাখ্যা শুনতে চাই না। আপনি বলেছেন কি-না, সেটা বলেন। আপনার কোর্টে এসে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবেন কিন্তু বাইরে গেলে সেটা বলবেন না। এটা কেমন হয়? বলেন, আপনারা ক্ষমা চেয়েছেন কি-না?”
কয়েকবার জিজ্ঞেস করার পর এই আইনজীবী বলেন, “আমরা ক্ষমা চেয়েছি, মাই লর্ড। তবে অর্ডার (লিখিত) না পাওয়ায় পুরোটা বলতে পারিনি।”
“আপনি বলেছেন (ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি) কি-না, সেটা বলেন,” আদালতের এই বক্তব্যের জবাবে শাহদীন মালিক ‘না’ সূচক উত্তর দেন।
শাহদীন মালিক বলেন, “এখানে একটা মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে।”
তখন আদালত বলে, “আপনি কি অফিসার অব দ্য কোর্ট হিসাবে আপনার দায়িত্ব পালন করছেন? এই খবরে দেয়া আপনার মন্তব্যে মনে হবে, এখানে কোনো ক্ষমা প্রার্থনার বিষয় ছিল না।
“কিন্তু এটা তো নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার ফলে হয়েছে। অথচ সেখানে ভুল রিপোর্টিং হয়েছে। পুরো বিষয়টা না বলার কারণেই মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে।”
তখন শাহদীন মালিক বলেন, “বুঝতে না পারার জন্য আমি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”