somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজেকে ভালোবাসুন, আত্মসম্মান বাড়বে

১৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন অনেকেই। আর নিজের প্রতি আস্থা হারানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আত্মসম্মানও কমে যায়। ফলস্বরূপ আজ নিজেকে ভালো লাগলেও কাল হয়ত নিজেকেই নিজের আর ভালো লাগবে না! তবে আত্মসম্মান বাড়া বা কমার ক্ষেত্রে আপনার নিজের পাশাপাশি আশপাশের মানুষেরও কিছু আচার-আচরণ বা মন্তব্য কিংবা দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাব বিস্তার করে।

নিজেকে ভালোবাসবেন এটা চিরন্তন সত্য। কিন্তু কাজের চাপ, রোগ-শোক কিংবা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে নিজের প্রতি বিতশ্রদ্ধ হয়ে যেতে পারেন সহজেই। নিজের প্রতি আস্থা বা বিশ্বাস হারিয়ে অনেকেই বলেন, ‘আমি ভালো না’, ‘আমি কখনও সফল হব না’, কিংবা ‘কেউ আমাকে পছন্দ করে না’ ইত্যাদি ইত্যাদি।

নিজের প্রতি এ ধরনের নেতিবাচক মনোভাব এক সময় আপনার পাশাপাশি আপনার চারপাশের মানুষ কিংবা আপনার চারপাশের মানুষের মতো আপনিও বিশ্বাস করতে শুরু করবেন। আর এ কারণে একটা সময় হয়তো আপনার মনোবল কমে যাবে, নিজের প্রতি সম্মানও হারাবেন তখন।

কিন্তু ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়েই তো আপনাকে এগিয়ে যেতেই হবে। প্রতিকূলতা ভেঙে এগিয়ে যেতে হলে আপনার আত্মসম্মানবোধ থাকতে হবে। আর এই আত্মসম্মান অটুট রাখতে আপনাকে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে। মনোকথার পাঠকদের জন্য সেগুলো তুলে ধরা হলো...



কথা বলুন নিজের সঙ্গে
মানুষ নিজেই তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু এবং সমালোচক হতে পারে। আর তাই নিজের জন্য প্রেরণামূলক, উদ্দীপনামূলক কথা বলুন, ইতিবাচক মন্তব্য করুন। নিজেকে বলুন আপনি সুন্দর, স্মার্ট, বুদ্ধিমান। নিজের কাজের প্রশংসা করুন। ইতিবাচক মনোভঙ্গি দিয়ে আপনার নেতিবাচক বিষয়গুলোকে দুর্বল করে দিন। এভাবে নিজে থেকে নিজেই শক্তি পেলে ধীরে ধীরে আপনার জীবনে আসবে পরিবর্তন।

নিজের প্রতি যত্ন নিন
শরীর ভালো থাকলে মন ভালো থাকে। মন ভালো রাখতে গেলে আপনাকে নিজের প্রতি যত্নবান হতে হবে। খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার, এড়িয়ে চলতে হবে ফাস্টফুড বা জাঙ্কফুড জাতীয় খাবার। নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে দেবে মানসিক শক্তি আর সুস্থতা। সময় বের করে তাই নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করুন।



স্মৃতির আয়নায় দেখুন সাফল্য
এখন আপনার সময় ভালো যাচ্ছে না, যেখানে হাত দিচ্ছেন ইতিবাচক ফল পাচ্ছেন না। শান্ত থাকুন। পিছনে কোনো সাফল্য থাকলে তা স্মৃতির আয়নায় দেখুন।

সেসময় আপনি কোন পরিস্থিতিতে কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা কীভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেকে এগিয়ে নিয়েছেন তা খুঁজে দেখুন। পেছনের সফলতার স্মৃতিচারণ যোগাবে উৎসাহ, সেই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলারও পথ বাতলে দেবে।

যা ভালো লাগে তা করুন
হয়তো আপনি ছবি আঁকতে, গান শুনতে, বই পড়তে, ফাঁকা মাঠ বা রাস্তায় কিংবা পার্কে হাঁটতে, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে পছন্দ করেন। আপনি যে কাজগুলো পছন্দ করেন তার একটি তালিকা করুন। প্রতিদিন এগুলোর একটি বা দু’টির চর্চা করুন। দেখবেন আপনার ভালো লাগবে। কখনো যদি খুব কষ্ট হয়, চিৎকার করতে ইচ্ছে হয় তবে তাই করুন।



ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ‍মানানসই বাসঘর
অ্যাপার্টমেন্ট, বাড়ি, ছোট বা বড় যেমন জায়গাতেই আপনি থাকুন না কেন তা যেন আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই হয়। কেননা সারাদিনের কাজ শেষে আপনার প্রশান্তির জায়গা আপনার ঘর। ঘরের পরিবেশ এমন রাখার চেষ্টা করুন যেন তা আপনাকে শান্তি আর প্রশান্তিতে ভরিয়ে তোলে। ঘর যেনো সত্যিই ঘর হয়, সে ঘর যেনো আপনাকে টানতে থাকে।

ছোট ছোট লক্ষ্য
ছোট ছোট বালুকণা, বিন্দু বিন্দু জলে মহাদেশ-সাগর যেমন তৈরি হয়, তেমনি আপনার ছোট ছোট সাফল্যই আপনাকে পৌঁছে দেবে চূড়ান্ত সাফল্যের দোরগোড়ায়। প্রথমে বড় কোনো পরিকল্পনা হাতে না নিয়ে ছোট ছোট পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করে হাত পাকিয়ে নিন, তারপর বড় কোনো কিছুতে হাত দিন। ছোট ছোট পরিকল্পনায় সফলতা আপনাকে বড় কিছু করতে সাহস যোগাবে।



ব্যর্থতায় লুকায়িত সাফল্য
ইংরেজিতে একটা কথা আছে, Failure is the piller of success. কোনো লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন, তাই বলে কি হাত গুটিয়ে মন খারাপ করে বসে থাকবেন! তাহলেই কি সমাধান আসবে? আবার পরিকল্পনা আঁটুন, সনাক্ত করুন প্রথম চেষ্টায় আপনার ব্যর্থতা কোথায় ছিল। পরবর্তী চেষ্টায় পূর্ববর্তী পদ্ধতিতে আনতে পারেন পরিবর্তন।

দক্ষতা বাড়াতে নতুন কিছু শিখুন
নতুন কোনো কাজ বা বিষয় শিখুন। এতে আর্থিক কোনো লাভ না থাকলেও তা আপনার দক্ষতা হিসেবে কাজ করবে, আপনার ভেতরে আলাদা একটি শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করবে। তথ্য জানার মধ্যে থাকতে হবে। আপনার কর্মজীবন বা শিক্ষা জীবনের জন্য প্রয়োজনী বিষয়ে পড়াশোনা করুন।



নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা, অন্যের সঙ্গে নয়
আপনি নিজেই আপনার প্রতিদ্বন্দ্বি। কখনোই নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না। আপনাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো কোনো কিছু অন্যের মধ্যে খুঁজে পেলে আপনি আঘাত পাবেন, আপনার মনোকষ্ট বাড়বে। অন্যের সাফল্যে নজর না দিয়ে নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করুন। গতকালকের আপনাকে আজকের আপনি ছাড়িয়ে যাবেন-এ মনোভাব নিয়ে এগুতে থাকুন।

নিজেকে ক্ষমা করুন
আমরা সবাই ভুল করি। মানুষ মাত্রই ভুল করবে। ভুল না করলে শেখা যায় না। ভুলকে শেখার সুযোগ মনে করুন। নিজেকে ক্ষমা করে দেওয়ার মানসিকতা আপনার আত্মসম্মান বাড়াবে, কমাবে না।
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×