somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাজ্জাল ও তার গুপ্তচরের কাহিনী

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমের বিন শুরাহিল থেকে বর্ণিত, তিনি ফাতেমা বিনতে কায়েস (রাঃ)-কে বললেন- সরাসরি নবী করীম (সাঃ) থেকে শুনেছেন, এমন একটি হাদিস আমাকে শুনান! ফাতেমা (রাঃ) বললেন- আমার কাছে সেরকম হাদিসই আছে! বর্ণনাকারী বললেন- তাহলে শুনান! বলতে লাগলেন- “একদা মুয়াজ্জিনের নামায দাঁড়িয়েছে- ঘোষণা শুনে মসজিদে গেলাম। পুরুষদের পেছনে মহিলাদের কাতারে দাড়িয়ে নবীজীর ইমামতিতে আমরা নামায আদায় করলাম। নামায শেষে মৃদু হাঁসি নিয়ে নবীজী মিম্বরে বসলেন।
● বললেন, সবাই নিজ নিজ স্থানে বসে থাক! কিছুক্ষণ পর বললেন- বুঝতে পেরেছ? কি জন্য তোমাদের বসতে বলেছি!!
● সবাই বলল- আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূলই বেশি জানেন!!
● বললেন- আল্লাহ্‌র শপথ! কোন উৎসাহ বা ভীতিপ্রদর্শনের জন্য তোমাদের বসতে বলিনি। তামিম দারী একজন খৃষ্টান ছিল। এখানে এসে ইসলাম গ্রহণ করেছে। মাছীহ দাজ্জাল সম্পর্কে তোমাদের কাছে যা বলতাম, সেও আমাকে সে রকম কিছু শুনিয়েছে। বলেছে- একদা লাখম ও জুযাম গোত্রদ্বয়ের কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে সে সমুদ্র ভ্রমণে বের হয়। অতঃপর সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে তারা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এক মাস পর্যন্ত ঢেও তাদের নিয়ে খেলা করতে থাকে। অবশেষে একদিন সূর্য প্রস্থানের সময় তাদের জাহাজটি এক অচিন দ্বীপে গিয়ে ভিড়ে। জাহাজ থেকে অবতরণ মাত্রই এক অদ্ভুত প্রাণীর সাথে তাদের সাক্ষাত ঘটে। চুল দিয়ে সারা গা ঢাকা থাকায় সামন-পেছন বুঝা যাচ্ছিল না।
● তারা বলল- কপাল পুড়ুক তোর! কে তুই?
● প্রাণীটি বলল- আমি হলাম গুপ্তচর!
● গুপ্তচর মানে?
● এত কিছু জেনে তোমাদের লাভ নেই! ঐ জনশূন্য প্রান্তরে এক ব্যক্তি অধির আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষা করছে। যাও! তাঁর সাথে গিয়ে সাক্ষাত কর!
● তামীম বলল- অতঃপর শয়তান মনে করে আমার তার থেকে কেটে পড়লাম। জনশূন্য প্রান্তরে (দুর্গ সদৃশ) গিয়ে দেখি এক মহা মানব। দু-হাত ঘাড় পর্যন্ত এবং দু-হাটু থেকে পায়ের গিঁঠ পর্যন্ত লোহার শিকলে বাঁধা। এমন সুবিশাল মানব এবং শক্তি বাধনযুক্ত বরকতই ব্যক্তি ইতিপূর্বে কোনদিন আমরা দেখিনি।
● বললাম- ধ্বংস হোক তোর! কে তুই!
● মহা মানব বলল- এসেই যখন পড়েছ! তবে অচিরেই জানতে পারবে।
● আগে বল- তোমরা কারা?
● আমরা আরব্য জাতি। নৌ ভ্রমণে বেরিয়ে ছিলাম। ঝড়ের কবলে পড়ে দীর্ঘ এক মাস দিকভ্রান্ত থাকার পর অবশেষে জাহাজ এই দ্বীপে এসে ভিড়েছে। জাহাজের নিকটেই আমরা বসেছিলাম। হঠাৎ এক অদ্ভুত প্রাণীর দেখা মিলল। সে নিজের পরিচয় গোপন রেখে তার কাছে আসতে বলল। তুই নাকি আমাদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিস!
● মহা মানব বলল- বাইছান এলাকার খেজুর বাগানের কি অবস্থা?
● মানে?
● অর্থাৎ বৃক্ষ গুলি থেকে কি এখনো খেজুর হয়?
● বললাম- হাঁ…!
● অচিরেই খেজুর বন্ধ হয়ে যাবে!
● মহা মানব বলল- বুহাইরা তাবারিয়ার কি অবস্থা?
● মানে?
● সেই লেকে কি এখনো পানি আছে?
● হাঁ…! ওখানে প্রচুর পানি!
● অচিরেই সেই পানি চলে যাবে।
● মহা মানব বলল- যুগার ঝর্ণার কি অবস্থা?
● মানে?
● ঝর্ণায় কি আদৌ পানি অবশিষ্ট আছে? নাকি শুকিয়ে গেছে! স্থানীয় লোকেরা কি চাষাবাদের জন্য ঝর্ণার পানি ব্যবহার করতে পারে?
● হাঁ…! ঐ ঝর্ণা থেকে প্রচুর পানি প্রবাহিত হয়। স্থানীয়রা চাষাবাদে সে পানি ব্যবহার করে থাকে।
● মহা মানব বলল- আরবের শেষ নবী সম্পর্কে আমাকে বল! সে কি কি করেছে!!
বললাম- তিনি মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে গেছেন।
● আরব জাতি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি?
● হাঁ…! করেছে।
● ফলাফল কি?
● আশপাশের আরবদের উপর তিনি বিজয়ী হয়েছেন সবাই তার অনুসরণে এগিয়ে আসছে।
বাস্তবেই এমনটা হয়ে গেছে!
● হাঁ…!
● তাঁকে অনুসরণের মাঝেই আরবের কল্যাণ নিহিত।
● মহা মানব বলল- আমি এখন নিজের পরিচয় দিচ্ছি। শুন! আমি হলাম মাছীহ দাজ্জাল! অচিরেই আমাকে বাঁধন মুক্ত করা হবে। আমি বের হয়ে চল্লিশ দিনে সারাবিশ্ব ভ্রমণ করব। তবে মক্কা এবং তাইবায় আমাকে ঢুকতে দেয়া হবে না। যখনই এলাকা দ্বয়ে ঢুকতে চাইব, তরবারি হাতে ফেরেস্তা আমাকে ধাওয়া করবে। সেদিন মক্কা-মদিনার সড়কে ফেরেস্তারা প্রহরী থাকবে।

দীর্ঘ হাদিসটি বর্ণনার পর লাঠি দিয়ে মাটিতে আঘাত করে নবীজী বলতে লাগলেন- এটাই হচ্ছে তাইবা নগরী, এটাই হচ্ছে তাইবা নগরী, এটাই হচ্ছে তাইবা নগরী (অর্থাৎ মদিনার অপর নাম তাইবা)! আমি কি তোমাদের কাছে স্পষ্ট রূপে বর্ণনা করতে পেরেছি?!! সকলেই এজবাক্যে বলল- হাঁ…! অতঃপর নবীজী বললেন- দাজ্জাল সম্পর্কে আমি তোমাদের কাছে যা বর্ণনা করতাম, অনেকাংশেই তা শামের সাগরে আছে অথবা ইয়েমেনের সাগরে আছে; না…! বরং সে পূর্ব দিকে আছে… পূর্ব দিকে আছে… পূর্ব দিকে আছে…!!! (পূর্ব দিকে হাতে ইশারা করেছিলেন), বর্ণনাকারী ফাতেমা (রা:) বলেন- নবীজীর এই হাদিসটি আমি উত্তমরূপে স্মরণ রেখেছি!!…[মুসলিম - ৭০২৮]
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:১৬
২টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×