এমএইচ 370 বিমানটির সর্বশেষ খবর -এখন পর্যন্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক বলেছেন, ভেতর থেকেই বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরেও বিমানটি 7 ঘণ্টা আকাশে উড়েছিল ! ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে বিমানটি চীন সাগরে ক্রাশ হয়েছে । যাইহোক ৭ ঘণ্টা কিন্তু মোটেই কম সময় নয় ! মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কথা সত্য হলে এই ৭ ঘণ্টায় বিমান কর্তৃপক্ষ কি আঙ্গুল চুষেছিল ? কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ৭ ঘণ্টা ধরে কি করে কর্তৃপক্ষ চুপ থাকে ?
ফেসবুকের এক মালয়শিয়ান বন্ধু আমাকে জানালেন- আসলেই বিমানটিকে মালয়শিয়া সরকার ও যুক্তরাস্ট্রের সিআইয়ে গায়েব করে দিয়েছে ! কথাটি সত্য কিনা জানি না । এরপিছনে তার যুক্তি হল-দেশের অর্থনৈতিক মন্দা ও প্রধান বিরোধী দলীয় নেতাকে কেন্দ্র করে দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি থেকে মানুষের মনোযোগ ঘুরিয়ে দিতেই এই বিমান নিখোঁজের নাটকটি করা হয়েছে। অবশ্য বিমান নিখোজ হওয়ার কয়েকদিন আগেই মালয়শিয়ার প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের সমকামিতার অভিযোগে পাঁচ বছর জেল দিয়েছে মালয়শিয়ার উচ্চ আদালত ।অবশ্য এর আগে নিম্ন আদালতে আনোয়ার ইব্রাহিম বেকসুল খালাস পেয়েছিলেন । আনোয়ার ইব্রাহিম মালয়শিয়ার একজন রাজনৈতিক নেতা হলেও সারা বিশ্বে তিনি ব্যপক সুপরিচিত। আনোয়ার ইব্রাহিম সাবেক মালয়শিয় প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের যোগ্য উত্তরসুরি ও উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন।মালয়শিয়ায় স্বাধীনতার পর থেকেই শাসনকারী দল বরিশান ন্যাশনাল পার্টির জন্য হুমকি সৃষ্টি করছেন আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন দল! গত নির্বাচনে খুবই অল্প ব্যবধানে জয়লাভ করে ক্ষমতাসীন পার্টি যদিও আনোয়ার ইব্রাহিম ব্যাপক ভোটকারচুপির অভিযোগ আনেন।আর সেই আনোয়ার ইব্রাহিমকে রাজনৈতিকভাবে শেষ করে দিতেই আদালত কর্তৃক নিষ্পত্তি হওয়া সমকামিতার মামলায় আনোয়ারকে শাস্তি দেওয়া হল। এতে মালয়শিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত ! তবে তার আরো যুক্তি হল-দু’বছর আগে মালয়শিয়ার আরো একটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান আকাশ থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ! দেশের ও বিদেশের মানুষের মনোযোগ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার এরচেয়ে অন্য কোনো সহজ পদ্ধতির তুলনা হয় না ।
মালয়েশিয় সরকার কর্তৃক বিমান নিখোঁজ করা না মেনে নিলে আমাদের মানতে হবে বিমানটি ছিনতাই হয়েছে অথবা সাগরেই পতিত হয়েছে অথবা মহাকাশে উধাও হয়ে গেছে !
এইসব সম্ভবনাময় ঘটনার যে কোনো একটি ঘটতে পারে সেক্ষত্রে আমাদের জানতে হবে পেসেন্জার বিমান কখনই নির্দৃষ্ট উচ্চতার উপরে উঠতে পারে না আর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম কেউ বন্ধ না করলে কোনো ভাবেই নিকটতম কন্ট্রোল টাওয়ার এর সাথে যোগা যোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা নয়। সে ক্ষেত্রে বলতে পারি বিমানটি হাইজ্যাক হয়েছে ! প্রশ্ন দাড়ায় হাইজ্যাক কে বা কারা করল ?
কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বা দল সেই কাজটি করতে পারে । এরকম নজির বিশ্বের ইতিহাসে অনেক আছে যেমন ব্লাক সেপটেম্বর । যাইহোক, তবে তারা একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই করে যেমন তাদের দাবি দাওয়া থাকে, তাদের স্বার্থ থাকে। সেই দাবি দাওয়া আদায় হলেই তারা বিমানসমেত যাত্রীদের মুক্তি দেয়, কিন্তু এক্ষেত্রে এরকমটি ঘটেনি । তাই কোনো সন্ত্রাসী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী হয়তো একাজটি করেনি আর মালয়শিয়ার এরকম দুর্ধর্ষ কোনো গোষ্টীও নেই ! তারপরেও কোনো সন্ত্রাসী বা দুর্ধর্ষ বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো গোষ্ঠী বিমান ছিনতাই করলে নিশ্চয় তা এতদিনে জানা যেত !
মহাকাশে উধাও হওয়া কল্প কাহিনী ছাড়া কিছুই নয়। বিমানটি যদি নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে নির্দিষ্ট বেগে গতিশীল হয় তাহলে ঐ অবস্থায় মাধ্যাকর্ষণ শক্তি শুণ্য হতে পারে অর্থাৎ বিমানটি ওজনহীন অনুভব করবে কিন্তু সেটা ঘটলেও মহাকাশে উধাও হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই-এজন্য মুক্তিবেগে অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কি.মি বেগে উর্ধাকাশে বিমানটিকে ছুটতে হবে । এই বেগ অর্জন করতে বিমানে প্রচুর জ্বালানির প্রয়োজন হবে আর বাস্তবিক পক্ষে যাত্রীবাহী বিমানের পক্ষে এই বেগ অর্জন করা সম্ভব নয় আর এই আর করলেও সেটা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাটিয়ে মহাকাশে যাওয়ার আগেই বিমানটিতে প্রচন্ত তাপ উৎপন্ন হবে ও সেটা আকাশেই পুড়ে ভষ্ম হয়ে যাবে। আর থাকল-সাগরে পতিত হওয়া।দক্ষিণ চীন সাগর আহমারি তেমনি বড় কিছু নয়। চীন যেখানে নিজেই ১০ টিরও বেশি স্যাটেলাইট ও অত্যাধুনিক সব জাহাজ দ্বারা তন্ন তন্ন করে খুঁজতেছে, এরসঙ্গে সহায়তাকারী হিসাবে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের প্রযুক্তিগত উন্নত অনেক দেশ ও বিমান নিখোঁজ হওয়ার মুহূর্তের আলামতগুলি যতই উদ্ভাসিত হচ্ছে ততই সন্দেহ ঘণীভূত হচ্ছে যে বিমানটিকে গায়েব করে দেওয়া হয়েছে।
পাশ্চাত্যের অনেক মিডিয়া ইতিমধ্যেই বলা শুরু করেছেন যে বিমানটি মার্কিন যুক্তরাস্ট্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ডিয়াগো গার্সিয়ায় অবতরণ করেছে ! তবে জল্পনা কল্পনা যাইহোক
আমার কাছে আমার ঐ মালয়শিয়ান বন্ধুর কথাই বেশি যুক্তযুক্ত মনে হচ্ছে ! কারণ দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদেরা পারে না এমন কিছু নেই !