শীতে উষ্ণ ভালোবাসা...
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস নেই মাহিনের। কিন্তু আজকে উঠতে হবে। শুধু উঠতে হবে কি, এই কনকনে শীতের মধ্যে একেবারে কাক ডাকা ভোরেই উঠতে হবে তাকে। মুহিনের মন-মেজাজ দুটোই চড়া হয়! এই শীতে কাক মিয়া পর্যন্ত নির্ঘাত ডাকাডাকি ভুলে যাবে, অথচ তাকে কিনা অবশ্যই উঠতে হবে। অবশ্য কারণ একটা সেই রকমই আছে। আসলে আজকে মুহিনের ভালোবাসার প্রিয় মানুষটির জন্মদিন। প্রিয় মানুষটি বলতে, তার নাম হৃদিকা! মুহিনের সবকিছু!! কোন রকম ঘড়িতে সারে চারটার বেল লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত ভোর পাঁচটায় উঠতে পেরেছে মুহিন। বিশাল একটা ছাত্র মেসের ছোটখাটো একটা রুমে তার বসবাস। হাত-মুখ ধুয়ে কোন নাস্তা-পানি না করেই ছুট লাগালো মনের মানুষটির উদ্দেশ্যে। সেই সাথে রাতে কিনে রাখা রজনীগন্ধা এবং গোলাপ ফুলের তোড়া আর ছোট্ট একটা গিফট নিতে ভুলল না। মুহিনের নিজস্ব কোন মোবাইল ফোন নেই। ভাবা যায়? বর্তমান এই আধুনিক সময়ে কিনা মুহিনের কাছে সামান্য একটা মোবাইল ফোন নেই! অথচ এটাই চমৎকার একটি বাস্তব! এত সকালে স্বভাবতই রিকশা বা অটোর দেখা মুশকিল। মুহিনকে তাই পায়ে হেটেই হৃদিকার হোস্টেলের দিকে যেতে হচ্ছে। অবশ্য সকালের শীতল কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতি বেশ ভালোই লাগছে তার কাছে। মজা পাচ্ছে খুব। গুন গুন করে পরিচিত দু-একটি গানের কলি গাইছে মুহিন। কিন্তু হৃদিকাকে দেখার ইচ্ছাটা এতই মনে কড়া নাড়ছে যে মুখ ফুটে আর কোন শব্দ বেরুতে পারছে না। খুব এক্সাইটেড লাগছে মুহিনের। সম্পর্কের মাত্র তো তিনটে বছর। অথচ মনে হচ্ছে সেই কতকাল ধরেই হৃদিকার জন্য অপেক্ষা করে আসছে মুহিন। এখন কেবল দেখা পেলেই অপেক্ষার প্রহর ফুরোবে। হোস্টেলের খুব কাছে চলে এসেছে মুহিন। দূর থেকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে হৃদিকাকে। কিন্তু একি!! হৃদিকা দৌড়াচ্ছে কেন ওভাবে? তবে আরও বেশি আশ্চর্য মুহিন তখন হল, যখন বুঝতে পারলো সেও দৌড়াতে শুরু করে দিয়েছে। দুজন দুজনার দিকে দৌড়ে যাচ্ছে, খুব অল্প একটা সময় পেরুলো। সামান্য কিছু মূহুর্ত। ফল এটা হল যে, কিছুক্ষণের ভেতরই মুহিন আর হৃদিকা একে অপরের বাহুডোরে মিশে গেল। মুহিন যেন অবুঝ একটি শিশু হয়ে গেল, হাসতে হাসতে রীতিমত গাইতে শুরু করল- হ্যাপি বার্থডে টু ইউ, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ...। এর ফল হল পূর্বেকার চাইতেও অদ্ভূদ। হৃদিকা প্রথমে মিষ্টি হাসি হাসলো, তারপর কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই কেঁদে ফেলল। আর সবশেষে যা করলো, মুহিনকে জড়িয়ে একটি উষ্ণ আদর দিল। তারপরের দৃশ্যটি বোধকরি অনেকটা রূপকথার মত, সপ্তাশ্চর্যের মত। দুজনেরই চোখে জল, দুজনেরই হাতে হাত, দুজনেরই মুখে হাসি, আর দুজনেই একে অপরকে বলছে- তোমায় ভালোবাসি।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা।
অনেক দিন পর আমি আজ এই হোটেলে নাস্তা করেছি। খুব তৃপ্তি করে নাস্তা করেছি। এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা। ঠিকনা: ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডম ভবেরচর, গজারিয়া, মন্সীগঞ্জ। দুইটি তুন্দুল রুটি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন
জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?
জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন