মালয়েশীয় বিমান উধাও হয়ে যাওয়ার পেছনে ছিনতাইয়ের পাশাপাশি বিমানটির ক্যাপ্টেন অথবা কো-পাইলটের আত্মহুতির সম্ভাবনার বিষয়টিও জোরের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
Published : 18 Mar 2014, 02:29 PM
ককপিট থেকে শোনা যাওয়া শেষ কথাটি বিমানটির কো-পাইলট বলেছিলেন বলে সোমবার এয়ারলাইনের প্রধান নির্বাহী আহমেদ জুহারি ইয়াহিয়া নিশ্চিত করেছেন।
৮ মার্চ ২৩৯ জন আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর থেকে মালয়শীয় এয়ারলাইনের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ বিমানটির আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বোয়িং কোম্পানির ৭৭৭-২০০ইআর মডেলের বিমানের বিষয়ে গভীর জ্ঞান রাখে এবং বাণিজ্যিক বিমান চালনা বিষয়ে অত্যন্ত অভিজ্ঞ কেউ বিমানটিকে এর নির্দিষ্ট গন্তব্য থেকে সরিয়ে অন্যপথে কয়েক হাজার মাইল দূরে নিয়ে গেছে, ক্রমেই তদন্তকারীদের মধ্যে এমন ধারণা জোরালো হয়ে উঠছে।
উত্তরে কাস্পিয়ান সাগরের তীর থেকে দক্ষিণ ভারত মহাসাগর পর্যন্ত বিশাল এলাকায় বিমানটির খোঁজে নতুন অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। নিখোঁজ বিমানের খোঁজে এত বড় এলাকা নিয়ে এত বড় অভিযান নজিরবিহীন।
সংবাদ সম্মেলনে এয়ারলাইনের প্রধান জুহারি আরো বলেছেন, বিমানটির একটি স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং সিস্টেম (এসিএআরএস) কখন অকার্যকর করা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। তার এই বক্তব্য মালয়শীয় সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের সঙ্গে মেলে না।
বিমানটি ছিনতাই হয়েছে বা নাশকতার শিকার হয়েছে এমন ধারণা করা আরো কঠিন হয়ে যায় যখন রোববার দেশটির কর্মকর্তারা বলেন, বিমানটি থেকে পাঠানো শেষ বেতার বার্তাটি ছিল সাধারণ একটি সম্ভাষণ, “সব ঠিক আছে, শুভরাত্রি”, যা বলা হয়েছিল বিমানটির ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ করে দেয়ার পর।
কে এই শেষ কথাটি বলেছে এটি জিজ্ঞেস করা হলে আহমেদ জুহারি বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে এটি কো-পাইলট বলেছিলেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, টেপের রেকর্ড অনুযায়ী উনিই শেষের কথাগুলো বলেছিলেন।”
রাত ১টা ১৯ মিনিটে মালয়শীয় আকাশপথ ছাড়ার আগ মুহূর্তে বেইজিংগামী বিমানটি থেকে কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে এটিই ছিল শেষ যোগাযোগ।
বিমানটির স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং সিস্টেম এসিএআরএস (বিমানের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে বার্তা প্রেরণকারী কম্পিউটার) থেকে পাওয়া শেষ বার্তাটি আসে রাত ১টা সাত মিনিটে। বিমানটি তখন মালয়শিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকূল ছেড়ে থাইল্যান্ড উপসাগরের দিকে এগিযে যাচ্ছিল।
“এরপর কখন এসিএআরএস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আমরা জানি না। ৩০ মিনিট পরে এর পরবর্তী বার্তাটি পাঠানোর কথা ছিল, কিন্তু এরপর আর কোনো বার্তাই পাওয়া যায়নি,” বলেন জুহারি।
মালয়শীয় কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, থাইল্যান্ড উপসাগরের আকাশে থাকার সময় বিমানটির কেউ একজন এর যোগাযোগ ব্যবস্থাগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল।
বিমান নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কোনো সূত্র পাওয়া যায় কিনা, সেই লক্ষ্যে বিমানটির পাইলট, ফ্লাইট ও গ্রাউন্ডকর্মীদের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে মালয়শীয় পুলিশ। এই তদন্তকে অপরাধ তদন্ত হিসেবে বিবেচনা করছে তারা।
এই তদন্ত পাইলট ও কো-পাইলটের আত্মহত্যার লাইন ধরে এগোচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মালয়শিয়ার ভারপ্রাপ্ত পরিবহনমন্ত্রী হিশামুদ্দিন হুসেন বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখছি আমরা, তবে যে পথগুলো ধরে তদন্ত করা হচ্ছে এটি তাদের অন্যতম।”