চতুর্থ পর্বের ভোটে ৯১টি উপজেলার মধ্যে ৪৬টিতে ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করে ক্ষমতাসীন দল ব্যালটে সিল মেরেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
Published : 23 Mar 2014, 05:03 PM
বিচ্ছিন্ন গোলযোগের মধ্যে রোববার ৪৩ জেলার ৯১ উপজেলায় ভোটগ্রহণের পর বিকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, “চতুর্থ দফায় এখন সরকারি দল নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে ভোট ছিনতাই করে নিয়েছে। উদ্দেশ্য উপজেলা নির্বাচনে জোর করে চেয়ারম্যান পদ দখল করা।”
উপজেলায় আগের তিন পর্বের ভোটে বিজয়ের হিসেবে এগিয়ে থাকা বিএনপি রোববারের ভোটে কারচুপির শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিল।
নির্বাচন কমিশনের কড়া হুঁশিয়ারির মধ্যে রোববার ভোটের মধ্যে কয়েকটি স্থানে ব্যালট বক্স ছিনতাই হয়েছে। সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিনজন।
রিজভী বলেন, ৪৬টি উপজেলায় ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে একতরফা সিল মেরেছে।
এই ৪৬টি উপজেলা হচ্ছে- বরিশালের আগৈলঝাড়া, বানারীপাড়া, উজিরপুর, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা, বাঁশখালী, মৌলভীবাজার সদর, সিলেট সদর, কানাইঘাট, কুমিল্লার বরুড়া, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগর, আখাউড়া, যশোর সদর, কেশবপুর, ফেনীর ফুলগাজী, সোনাগাজী, খুলনার বাটিয়াঘাটা, দাকোপ, ফুলতলা, তেরখাদা, রূপসা, বরগুনার বেতাগী, রাজশাহীর বাগমারা, ঝালকাঠী সদর, নলছিটি, রাজাপুর, কাঁঠালিয়া, বাগেরহাটের মোল্লারহাট, গাজীপুরের কালিয়াকৈর, নড়াইল সদর, পাবনার ঈশ্বরদী, ফরিদপুর, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর, ভোলার তজুমদ্দিন, মনপুরা, দৌলতখান, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর, নাগরপুর, পটুয়াখালী সদর, বাউফল, পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়া এবং ঢাকার ধামরাই।
রিজভী বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ক্ষমতা বদল হয় না। তারপরও সরকার ক্ষমতার লোভে যেভাবে উপজেলা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট ছিনতাই করেছে। এ থেকে প্রমাণ হয়, তাদের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে কী হত।”
‘সেনা মোতায়েন লোক দেখানো’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘‘ উপজেলা নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল ‘লোক দেখানো’।
চতুর্থ পর্বের নির্বাচনে সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে তিনি দুপুরে ভোটগ্রহণের মধ্যে নয়া পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
সালাউদ্দিন বলেন, “সেনাবাহিনীকে ভূমিকা রাখতে গতকাল নির্বাচন কমিশনের চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলো। কিন্তু আজকে কী দেখা গেল? এ থেকে বোঝা যায়, সেনাবাহিনীকে লোকদেখানো নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
“সরকার নির্বাচন কমিশনকে ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে। সেনাবাহিনীকে ভূমিকার রাখা সংক্রান্ত ইসির ওই চিঠি এবং সরকারের রহস্যজনক কারণে আজকে আমাদের জাতীয় সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বিনষ্টের পায়তারা করা হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।”
সালাহউদ্দিন বলেন, “‘ সিআরপিসি‘র ১৩১ ধারা অনুযায়ী ভোটের সময়ে সেনাবাহিনী ভূমিকা রাখতে পারে। ১৮৯৮ সাল থেকে এ বিধানে তারা এই কাজ করে আসছে।
“কী রহস্যজনক কারণে এখন সেনাবাহিনী তার ভূমিকা রাখতে পারছে না, এ বিষয়ে জাতি জানতে চায়।”