২ এপ্রিল বুধবার, ঢাকার প্রশস্ত রাজপথ মানিক মিয়া অ্যাভনিউ। চৈত্রের কাঠফাটা রোদ। ইউনিফর্ম পরা শত শত স্কুলছাত্র অপেক্ষমাণ। আরও আছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অগণিত ছাত্রছাত্রী। সঙ্গে বিশাল বিশাল সাউন্ড সিস্টেমের গাড়ি, ক্যামেরা হাতে অস্থির প্রতীক্ষা।
Published : 03 Apr 2014, 08:51 PM
তারুণ্য যেন ছটফট করছিল ঢাকার রাজপথে আচমকা ‘চার ছক্কা হইহই’ ছন্দে নেচে উঠতে! কিন্তু বিধি বাম!
‘বেরসিক’ পুলিশ কিছুতেই এই ‘ব্লক বাস্টার’ ফ্ল্যাশ মব করতে দিতে রাজি নন। পুলিশের অকাট্য যুক্তি, অনুমতি ছাড়া জাতীয় সংসদ সংলগ্ন রাস্তায় (বা যে কোনো রাস্তায়) বিশালসংখক মানুষের উপস্থিতিতে এত বড় আয়োজন ঘটতে দেওয়া অসম্ভব। একসঙ্গে এত মানুষের উপস্থিতিতে সবার নিরাপত্তা বিধানও পুলিশেরই কর্তব্য বলেও জানানো হ্য়।
শেরে বাংলানগর থানার পরিদর্শক তদন্ত, সাব্বির আহমেদ ব্যস্ত ওয়াকিটকি নিয়ে। অধীনস্ত কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়ার ফাঁকেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, “যথাযথ অনুমতি না থাকায় আমাদের পক্ষে এই আয়োজন করতে দেওয়া সম্ভব নয়।”
আয়োজকরা তখনই ফ্ল্যাশ মবটি আবাহনী মাঠে করবার সিদ্ধান্ত নেন।
চৈত্রের রোদ মাথায় করে মানিক মিয়া অ্যাভনিউ থেকে আবাহনী মাঠ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। তারপরও সমস্ত ‘হতাশা’ ভুলে বেশ অংশগ্রহণকারীদের পায়ে হেঁটে হাসিমুখে প্রায় ২ কিমি রাস্তা পাড়ি দিতে দেখা গেল।
যদিও বেশিরভাগ স্কুলছাত্রকেই পরে অনুপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
“এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্ল্যাশ মবে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৭শ’। আমাদের আজকের আয়োজনে তার থেকে অনেক বেশি সমাগম হয়েছে। তবে আইনকে অশ্রদ্ধা করে তো কিছু করা উচিত না।”-- অনেকটা মন খারাপ করেই বললেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা গ্রের একজন উপস্থিত কর্মকর্তা।
তবে ভিডিওচিত্র গ্রহণের সবচাইতে বড় চমক ছিল ‘ড্রোন’ ক্যামেরার ব্যবহার। যা হেলিক্যাম নামেও পরিচিতি। হেলিকপ্টারে যে প্রযুক্তি ব্যবহার হয়, সেভাবেই উড়ানো হয় এই ক্যামেরা।
উচ্ছাসিত কণ্ঠে ‘ফিল্ম ফ্যাক্টরি’র রহমান বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি ফ্ল্যাশ মবে এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিত্র ধারণ করা হল।”
তবে পড়ন্ত বিকেলে লাল সূর্যের দিকে মুখ ঘুরিয়ে ধুলিময় আবাহনী মাঠে আইসিসি বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টি ২০১৪ থেকে বাদ পড়া টাইগার ফ্যানদের ‘চার ছক্কা হইহই’র মূর্ছনায় মুহূর্তেই পাল্টে গেল দৃশ্যপট। কোথায় গেল কাঠফাটা রোদে ২ কিমি হাঁটার ক্লান্তি, কোথায় গেল চৈত্রের মাঠে দমবন্ধ করা ধুলার অত্যাচার!
মাঠে আগে থেকেই যারা ক্রিকেট প্র্যাকটিস করছিলেন, সাগ্রহে তারাও এসে দাঁড়ালেন দর্শকসারিতে। চওড়া রাস্তা মানিক মিয়া থেকে সরে আবাহনী মাঠ যেন বরণ করে নিল তারুণ্যের আবাহন!
জয়তু বাংলাদেশি ক্রিকেট ফ্যানস।
* ভিডিওচিত্রটি প্রতিবেদকের মোবাইল ফোনে ধারণকৃত। এছাড়া আয়োজক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তৈরি ভিডিওচিত্রটি যথাসময়ে আপলোড করা হবে।