কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই শুধু ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে তার এভারেস্ট জয়ের মতো অর্জন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুসা ইব্রাহিম।
Published : 04 Apr 2014, 05:10 PM
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মুসা বলেন, “সামান্য কোনো প্রমাণ ছাড়া স্রেফ ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে এমন একটি অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলে ভবিষ্যতে শুধু পর্বতারোহণ কেন, অন্য কোনো ক্ষেত্রেই কাউকে উৎসাহিত করা যাবে না।”
সম্প্রতি এভারেস্টজয়ীদের নিয়ে প্রকাশিত নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং নেপাল মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশনা ‘নেপাল পর্বত’-এ মুসা ইব্রাহীমের নাম পাওয়া যায়নি।
এভারেস্টজয়ী প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মুসা ইব্রাহীম স্বীকৃতি পেলেও তার এই কৃতিত্ব নিয়ে বাংলাদেশের অনেকেই সন্দেহ পোষণ করে আসছেন।
বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলার মধ্যেই শনিবার বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরের এক প্রতিবেদনে ‘নেপাল পর্বত’ এর তালিকায় মুসার নাম না থাকার বিষয়টি প্রকাশিত হয়।
এর পরপরই মুসা ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে নেপালের লাংসিসা-রি পর্বতশৃঙ্গ জয় না করেই সনদ নেয়ার অভিযোগ তোলেন ওই অভিযানে মুসার সঙ্গে থাকা পর্বতারোহী মীর শামসুল আলম বাবু।
পরে গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিজের ওয়ালে এক পোস্টে মুসা বলেন, এভারেস্ট জয়ের যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ তার কাছে আছে।
পারিবারিক কাজে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন উল্লেখ করে ওই পোস্টে মুসা বলেন, “দেশে ফিরে এসে গণমাধ্যমের কাছে এভারেস্ট জয় করা নিয়ে আমার কাছে থাকা সমস্ত তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হবে।”
শুক্রবার পাঠানো বিবৃতিতে মুসা বলেন, “বাংলাদেশকে ৬৭তম এভারেস্টজয়ী দেশ হিসাবে পরিণত করার পর থেকেই কিছু মানুষ জাতীয় এ অর্জনকে খাটো করার চেষ্টা করে আসছেন। ২০১০ সালেই অনলাইনে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক ও গবেষণা হয়। যারা সন্দেহ করছিলেন, তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণের পর তারা শেষ পর্যন্ত স্বীকার করে নেন, মুসা ইব্রাহীম সত্যি সত্যি এভারেস্ট জয় করেছেন।
“চার বছর পর আবারও একটি পক্ষ সন্দেহের আঙুল তুলেছেন। এদের মধ্যে আমার পরে এভারেস্ট জয় করা তিনজন এভারেস্টজয়ী পর্যন্ত রয়েছেন, তাদের সাফল্যে আমি আন্তরিকভাবে আনন্দিত ও গর্বিত। আমি বিশ্বাস করি, তারা সম্ভবত কারও প্ররোচণায় ঈর্ষাকাতর হয়ে এ সন্দেহমূলক বিবৃতি দিয়েছেন। আমি বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করছি, তারা শুধু সন্দেহই প্রকাশ করেছেন। কোনো তথ্যপ্রমাণ হাজির করেননি।”
‘নেপাল পর্বত’ এ এভারেস্টজয়ীদের নামের তালিকায় ভুল রয়েছে দাবি করে মুসা বলেন, প্রকাশনাটির ওই তালিকায় এভারেস্টজয়ী প্রথম নারী পর্বতারোহী জুনকো তাবেইয়ের নেই। ১৯৭৫ সালে এভারেস্ট জয় করা জাপানের এই পর্বতারোহী ৩৮তম এভারেস্টজয়ী।
এছাড়া বাংলাদেশের এম এ মুহিত ২০১১ সালের ২১ মে এভারেস্ট জয় করলেও স্মরণিকায় তার নামের পাশে লেখা আছে ২০১২ সাল।
এ ধরনের আরও বেশ কিছু ‘গুরুতর’ ভুল ওই প্রকাশনায় রয়েছে বলে দাবি মুসার।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি তার সংগঠন নর্থ আলপাইন ক্লাব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই স্মরণিকার প্রকাশক নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আং শেরিং শেরপার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। চায়না-তিব্বতের দিক দিয়ে যারা এভারেস্ট জয় করেছেন তাদের নাম নেপালের তালিকায় রাখা হয় না বলে শেরিং শেরপা তাদের জানিয়েছেন।
মুসা ইব্রাহীম জানান, গত বছর ওই প্রকাশনা বের করার সময় নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন জিম্বা জাংবু শেরপা।
তিনি তাদের সংগঠনকে বলেছেন, “ওই প্রকাশনায় অসাবধানতাবশত কিছু ভুল হয়ে গেছে।”
খুব শিগগিরই ভুল সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জাংবু শেরপা জানিয়েছেন বলে মুসা তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।