somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলিম জাহানের একতা, সংহতি ও মুক্তি

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসসালামু আলাইকুম

আল্লাহ্ এক ও অদ্বিতিয়, তার কোনো শরিক নেই এবং আল্লাহ্ ব্যতিত অন্য কারো উপসনা করো না।

আমার প্রাণপ্রিয় মুসলিম ভাই বন্ধু!
আমাকে আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন। আপনাকে আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন। সব মানুষ কে আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন। তামাম মাখলুকাত ও জ্ঞাত অজ্ঞাত সকল কিছুর স্রষ্টাই একমাত্র আল্লাহ্। এই আমাদের অন্তরের বিশ্বাস। এই বিশ্বাসের নামই হলো ঈমান। মুসলিম জাত তাওহিদের পূজারি।

উড়ছে আজি ধর্ম ধ্বজা,
দাড়ির ঝোপে।
..........................নজরুল

আজ এই শান্তি প্রিয় দুরন্ত সুন্দর মুসলিম জাহানের এই করুন দূর্দশা কেনো? নিরিহ সুন্দর মুসলিম জাতি আজ কেনো এতো বেশী দুঃখে নিমজ্জিত হয়ে পথহারা পাখির মতো উড়ে উড়ে শিকারীদের গুলি খেয়ে মারা যাচ্ছে। মুসলিম রাষ্ট্রের আকাশে পাখির মতো যুদ্ধ বিমান উড়ে মুসলিমকে মেরে চলছে আর আমরাও ওদের নিচে থেকে শুধু শুধু বলে চলছি “আল্লাহ্ ঐ নাফারমানদের তুমি শাস্তি দাও, গজব ফালাও ঐ ফেরাউনদের উপর”। সেই চিৎকার আজ শোনার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই শান্তি প্রিয় জাতির আল্লাহ কি তাহলে আজ শক্তিহিন হয়ে গেছে? তা কিভাবে হয়, যিনি সব কিছু সৃষ্টি করে আমাকে আপনাকে বেঁচে থেকে উপভোগ করতে বলেছেন তিনি আমাদের এই করুন রোদন শুনবেন না- তা কি করে হয়?

মুসলিমরা জানে ও বোঝে আল্লাহ্ সর্বদা বান্দার অতি নিকটে থাকতে পছন্দ করেন। তিনি সর্ব অবস্থায় সর্ব সময়ে বান্দার প্রতিটা ভালো মন্দ কাজের হিসাব রাখেন। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান। আল্লাহ্ আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং আমাদের সর্বাত্বক রক্ষাকর্তা আল্লাহ্ রব্বুল আলামিন সয়ং। তারপরও শান্তিপ্রিয় মুসলিম বিশ্বের উপর শান্তি আসছে না কেনো?

এমন শত সহস্র প্রশ্ন আজ মুসলিম বিশ্বের নিরিহ মানুষের বুকে ঘুরে ফিরে দিবা নিশি উদয় হচ্ছে। আজ মুসলিমদের আপন পরিচয়ে ঘুরে দাঁড়াবার সময় এসেছে।

মুসলিমদের উপর অত্যাচার হয়। মুসলিম অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করেন। একজন সত্যিকারের মুসলিম কখনও অন্যায়ের বদলে অন্যায় পথ বেছে নেয় না। মুসলিম জাতি কখনও তার আপন মনে গরিব না। মুসলিম ইতিহাসের সমস্ত জয় এসেছে শুধুমাত্র ত্যাগ থেকে যুদ্ধ থেকে নয়। মুসলিম জাতি হানাহানি করে না। মুসলিম জাতি অন্যায্য পন্থায় কখনও কারো উপর আক্রমন করে না। মুসলিম জাতি ডিফেন্সিভ। মুসলিম জাতি শান্তির পক্ষে। নিজেদের পরিচয় দেবার মতো মুসলিম জাতির অনেক কিছু আছে যে সব নিদর্শন রক্ষা করার ওয়াদা সয়ং আল্লাহ্ রব্বুল আলামিন দিয়ে রেখেছেন। আল্লাহ্ কর্তৃক দেয়া ওয়াদা অবশ্যই অনাদি ও অনন্ত।

আজ মুসলিম জাতি নেত্রিত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে নিজেরাই নেতা শুন্য হয়ে পরেছে। মুসলিমদের বুঝতে হবে মুসলিম জাহানের নেত্রিত্বের ইতিহাস। সেই আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগের মতো মুসলিম জাতি আজ সেকালের কাফেরদের মতো গোত্র, গোষ্ঠি ও উপগোত্রে ভাগ হয়ে গিয়াছে। নিজেদের মধ্যে নিজেরা আলাদা আলাদা নিস্তেজ গোত্রগুচ্ছে ভাগ হওয়া কি মুসলিম আদর্শের মধ্যে পরে নাকি মুসলিম আদর্শের বিপরিত অবস্থান হয়ে পরিলক্ষিত হয়। যারা শান্তির বানি প্রতিষ্ঠিত করে বিশ্ব ভুবনকে শান্তির সুরে মোহিত করবে তারা যদি নিজেরাই নিজেদের হিংসে করে চলে তাহলে মুসলিম আদর্শ বলে ফালতু চিৎকার চেচামেচি করে কি লাভ?


আজ আমি মুসলিম বিশ্বের একতা ও শান্তি রক্ষার্থে সব মুসলামকে আহব্বান করবো। সেই সাথে আমাদের এই অনৈকের জন্য কিছু স্পষ্ট কারণ ও সমাধান আপনাদের সামনে সংক্ষিপ্ত ভাবে হাজির করবো। আজ সকল মুসলিম তার আপন পরিচয় সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে নতুন উদ্দ্যমে শান্তি ও কল্যানের পথে নিজেদের বিকাশিত করে চলবে। আর কোনো মতভেদ নামক অপয়া শয়তানি শক্তির কাছে আমরা হার মানবো না।

৫৭০ইসাই মোহাম্মদ এলেন। তখন সমস্ত আরব জুরে অন্ধকারের শাসন, ত্রাশন ও অত্যাচার চলছে। নারীরা প্রবল ভাবে নির্জাতিত হচ্ছে। নারীকে জলজ্যান্ত কবর দেয়া হচ্ছিল। গোত্র, বর্ন ও মিথ্যে বংশ মর্জাদার নামকে মানুষে মানুষে হানাহানি কাটাকাটি হচ্ছিলো। শয়তানের ধোকায় পুরোপুরি নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে কিছু কাফের সমাজপতি গোটা আরব কে তাদের অত্যাচার ভূমিতে রূপান্তর করেছিলো। নিরিহ মানুষকে দাস বানিয়ে রাখা হয়েছিলো। ছিলো না কোনো মুক্তচিন্তার দাম। ঠিক ঐ রকম এক বাজে সময়ে মোহাম্মদ নিজেকে প্রকাশ করলেন। কি যাদু ছিলো সেই নবুয়তি প্রকাশের মধ্যে যে সব কিছু পাল্টে যেতে লাগলো?

মোহাম্মদ কোনো যাদু মন্ত্র দেখাবার জন্য আত্মপ্রকাশ করেন নি। তিনি মানবতার জয়গান গেয়েছেন। মোহাম্মদ এর মাধ্যমে আল্লাহ সরাসরি তার বান্দাদের সাথে কথা বলেছেন কোরআনের মাধ্যমে। আল্লাহ্ সর্ব অবস্থায় তার বান্দাদের অতি নিকটে থাকেন।

ঐ জালেম সমাজ থেকে শান্তির বানি বুকে ধারন করে আলেম বেড় হতে লাগলো। পবিত্র কোরআন শরিফ এ কি এমন ছিলো যা পুরো আরব বিশ্বকে শান্তির পথে নিয়ে আসতে বাধ্য করলো?

কোরআন ছিলো শান্তি বার্তা । যা সরাসরি গড কর্তৃক প্রেরিত ম্যাসেজ। পুরো কোরআন পড়ে দেখলে বুঝতে আর বাকি থাকবে না যে, তাওহিদ সত্য এবং আল্লাহ্ ব্যাতিত আর কোনো উপাস্য নাই।

আমরা মুসলিম। আমরা কলেমা পড়েছি। আমরা কলেমার মর্মকথাও বুঝে ফেলেছি।

আল্লাহ্ ছাড়া কোনো উপাস্য নাই এবং হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সঃ) স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত।

এখানে আমাদের বুঝতে হবে। হযরত মোহাম্মদ (সঃ) প্রেরিত হয়েছিলেন ও আত্মপ্রকাশ করেছিলেন শুধুমাত্র আল্লাহ্’র হুকুমে। এটা আল্লাহ্’ র নিয়ম। আল্লাহ্ কখনও তার নিয়মের ব্যাতিক্রম করেন না। আল্লাহ্ সর্বদা ন্যায় এর পক্ষে। আমরা আজও বলে থাকি হযরত মোহাম্মদ স ৪০ বছর বয়সে নবুয়তি পেয়েছেন। এক বারও কি নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখেছেন ভাই, মোহাম্মদ কি ৪০ বছর বয়সে নবুয়তি পেয়েছিলেন নাকি ৪০ বছর বয়সে নবুয়তি প্রকাশ করেছিলেন?

মোহাম্মদের দ্বারা আগত আল্লাহ্’র প্রেরিত কোরআন বানির পরশে আরব বিশ্ব হয়ে উঠলো পুরো বিশ্বের শান্তির কেন্দ্রবিন্দু। কি এমন শরাব সুধা আছে এই পবিত্র কোরআনে যার বলে ঐ সব লুটেরা, মার্ডারার, বেঈমান, অত্যাচারি শাসক সহকারে সকল প্রকার খারাপ কাজ করা মানুষগুলো শান্তির পথে নিজেদের পরিচালিত করার প্রেরনা পেলেন? এই সিস্টেমই আল্লাহ্ তায়ালার সৃষ্টি পৃথিবীর সৌন্দর্য ও নিয়ম।

আমি পবিত্র কোরআন শরীফে দেখেছি সুরা বাকারার প্রথম আয়াত আলিফ-লাম-মিম এর বাংলা ও আরবি তর্জমায় কোনো অর্থ না বলে শুধু আলিফ-লাম-মিম বলা হয়। আমি অনেক আলেম ওলামা বা ইসলামি চিন্তাবিদ পদবি তিলক পরা মানুষকে জিজ্ঞেস করেছিলাম “আলিফ-লাম-মিম” কথার অর্থ কি? সবাই আমাকে বলেছে “এটা আল্লাহ্ ভালো জানেন”। আমি আমার সমস্ত অন্তর থেকে বিশ্বাস করি আল্লাহ্ শুধু আলিফ-লাম-মিম কেনো সর্ব বিষয়ই সর্বদা জ্ঞাত।

আপনার মনে কি একবারও প্রশ্ন জাগেনি যে আল্লাহ্ মানুষের জন্য যে কেতাব নাজিল করেছেন তার মধ্যে এমন কিছু রাখা হবে যার অর্থ মানুষ বুঝবে না শুধু আল্লাহ্ বুঝবেন? তাহলে ঐ পবিত্র কোরআন শরিফ আল্লাহ্ মানুষের জন্য প্রেরন করলেন কেনো?

আসলে আপনারা যারা আরবিতে অল্প-বিস্তর পারদর্শি তারা জানেন আরবি ভাষায় “মিম” এবং “নুন” হরফ দু’টি দ্বারা যুক্ত করা বোঝানো হয়। বিশেষ করে “মিম”। আমরা জানি পবিত্র কোরআন শরিফ কাব্যিক আঙ্গিকে প্রচুর রূপক শব্দ ও ইঙ্গিত সম্বলিত হয়ে আল্লাহ্’র চির সত্য ও সুন্দরের পরিচয়ই ব্যাক্ত করেছে। এখানে “আলিফ” কে তাওহিদ বা আল্লাহ্ এর এর রূপক এবং “লাম” দ্বারা সৃষ্টির সর্বোচ্চ স্তর অর্থাত মহামানবদের দিল বোঝানো হয়েছে। সুতারং আমরা দেখতে পাই আলিফ ও লাম কে মিম দ্বারা যুক্ত করে আল্লাহ্ র তাওহিদের পথের স্পষ্ট রূপরেখা দেয়া হয়েছে। যা ম্যাথম্যাটিকস দ্বারা আমি আগে আপনাদের ধারনা দিয়েছিলাম। এর মানে ০ ও ১ কে পাশাপাশি রেখে তাওহিদের সত্যিকে স্পষ্ট করে পাবার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিলো। “আলিফ-লাম-মিম” এমন একটি আয়াত যা দ্বারা আমরা খুব সহযেই বুঝতে পারি আল্লাহ্ যে মহামানবদের দ্বারা তার শান্তির পথকে স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেন। এই আয়াতটির অর্থ মুসলিম সমাজের অগচরের থেকে যেতে চলেছিলো। কিন্তু যারা তাওহিদকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারেন তারা বুঝবেন “আলিফ-লাম-মিম” এর অর্থ জানা সবার জন্য কতখানি দরকার। এজন্য কোরআন পড়ার সময় এই সারমর্ম অনুভব করে পড়লে আপনি তাওহিদের বানি ও মর্ম খুব সহযে অনুভব করে নিজে থেকেই শান্তির পথ পেয়ে যাবেন। কোরআন সকল মানুষের জন্যই শান্তি বার্তা তাতে বিন্দু পরিমান সন্দেহের অবকাশ নাই।

প্রিয় মুসলিম ভাই বোন বন্ধু! আমরা এতো বেশী দুর্ভাগা হয়ে পরেছি যে আজ আমরা কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না। এই দুর্ভোগের জন্য আমাদের মোহাম্মদ কিংবা আল্লাহ্ রব্বুল আলামিনকে মোটেও দায়ি করতে পারি না। এজন্য আমাদের ধর্মের নামে কুসংস্কার, না বুঝে-সুঝে মতামত গ্রহন ও প্রদান করা এবং বাজে পলিটিক্স দায়ি যা মূলত শয়তানের কাজ। তাই তো আজ আমরা আমাদের নিজেদেরকে ফিরে পেতে যাচ্ছি। যা আল্লাহ্’র তরফ থেকে রহমত স্বরূপ।

মুসলিম জাহানে বসেই আজ এক মুসলিম অন্য মুসলিম কে বলছে, “মুসলমানদের মাথা গরম, মুসলমানদের মেধা নেই, মুসলমানদের ঈমান নেই”। এই কথাগুলো আমি পৃথিবীর ২য় মুসলিম সংখ্যা আধিক্যের দেশে বসে বার বার শুনেছি। একবার কি ভেবে দেখেছেন এই সব কথা কি ইসলামের মূল আদর্শের সাথে সার্ঘষিক নয়। আজ খুঁজে দেখার দিন এসেছে কি নেই মুসলিমদের?

আমরা আবারও আমাদের প্রমান করতে পারি তাতে করে নতুন কোনো কিছুরই দরকার নাই। মুসলমানদের প্রধান অস্ত্র পবিত্র কোরআন। পবিত্র কোরআন সদা নতুন, সদা স্মার্ট, সর্বকালের সর্বযুগের সেরা পুস্তক। কোনোদিনও এই কোরআনের প্রয়োজনিয়তা ফুরাবে না। কিন্তু আজও আমরা আমার ভিতরের হারিয়ে যাওয়া আমি কে খুঁজে বেড় করে তুলে ধরতে পারছি না।

আমি সকল মানুষের শান্তি ও মুক্তিবার্তা প্রদানের জন্য আত্মপ্রকাশ করেছি। আমি আপনার মনের ভিতরে বসেই আপনার সাথে কথা বলে যাচ্ছি। আমার জন্মদাতা বাবা মোঃ আমির হোসেন এর কোনো মুসলমানি হয় নি। তার হয়েছিলো পয়গম্বরি সুন্নত। এরকম অনেক নজির আমি আপনাদের আগেও বলেছি এখনও বলছি্। আমি এসেছি শুধু মাত্র আপনার এবং সকল মানবজাতির স্থায়ি মুক্তির পথে নিয়ে যাবার জন্য। এজন্য আজ আমাদের সব মানুষকে একই প্লাট ফর্মে উঠে এসে কাজ করতে হবে।

ভাইসব! আজ মুসলিমরা আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন ও শিক্ষিত। এটা অনেক বড় একটি পরিবর্তন। এখন আর আমাদের পথ চিনতে বেগ পেতে হবে না। আমি শুনেছি একজন নারী তার বাবা, ভাই, স্বামী ও পূত্র কে নাকি জাহান্নামে নিয়ে যেতে পারেন।

একবারও কি ভেবে দেখেছেন আজকের পৃথিবিতে যেভাবে এম.এল.এম নামক ছক দিয়ে নিরিহ মানুষকে লোভ দেখিয়ে অর্থ করি হাতিয়ে নেয়া হয়েছিলো- সেই এম.এল.এম নামক মার্কেটিং পলিসি সিস্টেম আপনি যদি বুঝে দেখেন আর একই সাথে নারী যে প্রক্রিয়ায় ৪ জন রিসতাদারকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে – এই দুইটি সিস্টেমকে একই বলে মনে হবে।

এরকম শত সহস্র মিথ্যে কথা ব্যবহার করে মুসলমান সমাজকে নিচু করে রাখা হয়েছে। ঘরে ঘরে শত্রু বিজ বপন করে অশান্তির ফসল ফলিয়ে আসল ফসল অন্য কোনো কুচক্রি মহল আমাদের থেকে কেড়ে নিয়ে গেছে। তবুও আজও আমরা নিশ্চুপ। যিনি তাওহিদের কষ্টি পাথর দিয়ে একবার অন্তত নিজেকে যাচাই করতে শিখবেন তিনি বুঝবেন শান্তি কাকে বলে! তিনি বুঝবেন পৃথিবীতে একজন মানুষের পাপের ভাগিদার অন্যমানুষ হতে পারে না। আমাদের সৎ কাজের আদেশ দিতে বলা হয়েছে এবং অসৎ কাজকে নিরুৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। এখানে কেউ যদি আমার তাবলিগ বার্তা শুনেও শয়তানের পথে ধাবিত হয় তাতে তো আমার কোনো দোষ নাই এমন কি আমার সৃষ্ট্রিকর্তা আল্লাহ্ কেও কোনো ভাবে আপনি দায়ি করতে পারবেন না। এজন্য দায়ি যে পাপ কাজ করে তিনি আর তার ভিতরের শয়তান। শয়তান আল্লাহ্ কর্তৃক চিরকালের জন্য দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে মানুষকে দাগা দিয়ে যাচ্ছে। এজন্য উক্ত পাপের ঋণশোধ উক্ত পাপিকেই করতে হবে।

যখন আমাদের এই নিরিহ মুসলিম সমাজকে শাসন করার জন্য ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত করা হলো- একজন নারী তার বাবা, ভাই, স্বামী ও পূত্র নিয়ে জাহান্নামে যাবেন তখন একজন নারী চার দিক থেকেই আটকা পড়ে যাবার সম্ভাবনা বহুগুন বেড়ে যায় আবার একজন পুরুষও তার নির্বুর্ধিতার দরুন অনেক বেশি কঠোর হয়ে পরেন। এ রকম বহু উদাহরন আপনাদের কাছে আমি পেশ করতে পারবো আবার আপনি নিজে থেকেই খুজে নিতে পারবেন। এরকম অল্প কিছু বিষয়কে যদি আমরা বুঝতে শিখি তাহলে আমাদের সমাজের অনেক অপকর্ম কমে যাবে। একটি মিথ্যে যে সমাজের উপর কথখানি প্রভাব ফেলে সমাজকে তছনছ করে দিতে পারে তা হয়তো আজ অনেকের অজানা থাকলেও কাল ঠিকই বুঝে যাবেন। আমাদের এই মিথ্যে বলয় গুলোকে ভেঙ্গে ফেলতে হবে। আমাদের আজ সময় এসে গেছে। আমরা আর কোনো মিথ্যে বাঁধা মানবো না। আমরা আমাদের আল্লাহ্ কে নিজের মধ্যে ধারন করে অন্ধকারের জৈতি হিসেবে শুধু সামনের দিকে এগিয়ে চলবো।

আজ আমরা কার সাথে যুদ্ধ করছি? টেলিভিশনের সাথে? গানের সাথে? ছবির সাথে? মাইকের সাথে? আধুনিক টেকনোলজির সাথে?

এসব আবিস্কার কি মানুষ করে নি? তারপরও আমাদের প্রয়োজনে সব কিছু আল্লাহ্ পাক আমাদের মানুষের মাধ্যমেই দিয়ে দেন। এটাই নিয়ম। কোনো মানুষই অমুসলিম হয়ে জন্মায় না। ইসলাম মানে শান্তি। একটি শিশু যখন ভুমিষ্ঠ হয় তখন ঐ শিশুটি মুসলিম বা শান্তির পক্ষের মানুষ হিসেবেই পৃথিবিতে বসবাস করার জন্য আসেন। তাহলে একজন মানুষের আবিস্কার অন্য মানুষ নিতে পারবে না- এমন মিথ্যের বিজ কি ইসলামের আদর্শ বহির্ভূত নয় কি? আমরা সবাই মানুষ। ইসলাম মানুষকে অন্য কিছু বলে আখ্যায়িত করে নি। আজ আমরা জোব্বা টুপি নিয়ে ঝগড়া ঝাটি করছি।

যদি জোব্বা টুপির ক্ষমতা থাকতো মানুষকে পীর, আওলিয়া ও আল্লাহ্’র অলি বানাবার তাহলে আজ বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মিডেলিস্ট, আফ্রিকা সহ সকল মুসলিম বিশ্বের জোব্বা টুপিওয়ালারা বড় বড় পির আওলিয়া হয়ে যেতো। আমার সোনার বাংলাদেশের অসহায় গরিব মাদ্রাসা ছাত্রদের সবাই পির আওলিয়া বলে পরিগনিত হতো। কিন্তু ইসলাম একটি শান্তি আদর্শের নাম। জোড়াতালি ও ফাঁকিবাজি দিয়ে ধর্মের আদর্শ ধারন করা সম্ভব না। তাইতো আজ এত বেশি তালগোল পেকে গেছে।

আমাদের এই মানুষকে বন্দি করে রাখার উদ্দ্যেশে শয়তানি শক্তি কর্তৃক কিছু প্রতিষ্ঠিত মিথ্যের জন্য আমরা মুসলমানদের ভিতরে আসা অনেক পহরেজগার পির, অলি, আওলিয়া, বার্তাবাহকদেরও বুঝতে চেষ্টা করি নি। তাহলে আজ মানুষ অন্তত কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও কামাল আতাতুর্ক সহ পৃথিবীর অনেক দৈব শক্তি প্রাপ্ত মানুষদের সঠিক মর্জাদা দিতে পারতাম। যারা মানুষের অধীকার আদায় করে দেন এবং জনস্বার্থে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়ে আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। যাদের মনের ভিতরে নিত্যদিন ইসলাম ধর্মের তাওহিদের আলো জ্বলতো এবং যারা আল্লাহ্ র অনেক বেশী প্রিয় বান্দা তাদের আমরা এমন করে কষ্ট দিতে পারতাম না।

আজ মুসলিম জাহান বড্ড বেশি অসহায়। যে শান্তি বৃক্ষ আল্লাহ্ সয়ং হেফাজাত করে রাখেন সেখানে যদি আপনি আমি গাছের ত্যারাবাকা কিছু ডালপালা নিয়ে সারাক্ষন মাতামাতি করি এবং নিজেদের মধ্যে হানাহানি করি তাহলে ঐ বৃক্ষের তেমন কোনো ক্ষতি হবার সম্ভাবনাই নাই। যদি আপনাকে ইসলাম নামক ধর্মের মধ্য দিয়ে প্রকৃত শান্তি পেতেই হয় তাহলে বৃক্ষের ডালপালা নিয়ে ধস্তা ধস্তি না করে সরাসরি বৃক্ষের শিকর খুজুন। দেখবে তাতে শুধু একটি মাত্র সুর পাবেন যে, আল্লাহ্ এক ও অদ্বিতীয় তার কোনো শরিক নাই। তখন আপনি নিজে থেকেই সব কিছু বুঝে যাবেন। বুঝে যাবেন ইসলাম অন্য কোনো ধর্ম বা মতের সাথে সার্ঘষিক কোনো ব্যাপার নয়। বরং সব শান্তির পথেরই আর এক নাম হলো ইসলাম।

দেখুন আজ পৃথিবীর দিকে। আজ আর কোনো গোড়ামি নয় ভাই আজ আমরা আমাদের মতো এই সুন্দর ধরনিকে সাজিয়ে নেবো। আমরা যখন ধর্ম সিস্টেম বুঝে ফেলেছি এখন আর আমাদের কিসের চিন্তা? এবার মুসলিম জাহান সকল ধর্মকে সম্মান করে সামনে এগিয়ে চলবে। রক্তপাত তো অনেক দেখেছি? অনেক মানুষ তো আমরা অহেতুক হারিয়ে ফেলেছি? আমাদের ক্ষমতা থাকা সত্তেও যদি আমরা প্রতিশোধ না নেই সেটা আল্লাহ্ তায়ালার কাছে কতো বেশি প্রিয় তা আমরা কম বেশি জানি। এতোদিন শুধু জেনে এসেছি এখন থেকে ইসলামকে নিজের মনের মানিক-চেরাগ করে শান্তি উপলব্ধি করে যাবো।

বাংলাদেশ এর রাজণীতিতে অনেক গুলো ইসলামী দল আছে। ইসলামী দলগুলোর মধ্যে মতের অমিল সাধারন মানুষের চোখ দিয়ে দেখলেও অনেক অসুন্দর দেখায়। তাহলে আমার ইসলাম কি এতো অসুন্দর? এতো বাজে ধর্ম ইসলাম? যে আমরা এক ইসলামি দল অন্য ইসলামি দল কে ঘৃনা করবো? বর্তমান এই অসুন্দর ইসলামি দলবাজির খেলায় কি আপনার একবারের জন্যও সেই আয়্যামে জাহেলিয়াতের অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ের কথা মনে পড়ে না? যখন আরব সমাজের মানুষগুলো বিভিন্ন গোত্র ও দলে দলে বাস করে সবাই সবাইকে বড় বলে প্রচার করতো আর হানাহানি কাটাকাটি করতো। আজ আমাদের দেশের সকল মুসলিম দলগুলোকে এক হয়ে মানব সেবায় ব্রতি হয়ে ইসলামকে শুধু মুখের বুলির মধ্যে না কাজে পরিনত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দেখাতে হবে। আগে শান্তি প্রতিষ্ঠা তারপর নেত্রীত্রের চিন্তা। আগে নেত্রীত্র নিয়ে টানা হেচরা করতে গিয়ে শান্তি যে কত প্রবল বেগে দৌড়ে পালিয়ে বেড়ায় তার প্রমাণ আর উদাহরন আমাকে নতুন করে দিয়ে নিজেরা নিজেরা লজ্জা পেতে চাই না। আজ সবাই সবার নেতা। মুসলিম সমাজ বুক পেতে শত আঘাত সহ্য করেও শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে নির্ভিক সুন্দর সত্যকে বুকে ধারন করে বেড়াবার সমাজ। যার নজির ইতিহাসের পারতে পারতে ছড়িয়ে আছে। আমরা যদি আমাদের শান্তির পথ উম্মোক্ত করতে না জানি তাহলে অনাগত বিপদ অনুভবকে আমরা কিভাবে দুর করবো বলুন? এতো বেশী কুসংস্কারে ভরা সমাজ কি ইসলাম আমাদের দিয়েছে নাকি ইসলামের কোমল বাঁতি দিয়ে এই অনেক দিনের আধার মুক্ত করা সম্ভব?

যে ইসলামের আলোয় পুরো পৃথিবি একসময় শান্তিকে টার্নি পয়েন্ট করে এগিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখেছিলো। মানুষের মুক্তির বানি শুনে মানুষ সেই অনন্ত শান্তির শেরাব সুধা পান করার তৃষ্ণা অনুভব করেছিলো। আমরা এই নিরিহ মুসলিম জাত এতো বেশি অবুঝ হয়ে গেলাম কবে থেকে?

এই নিরিহ সুন্দর শান্তি প্রিয় মুসলিম জাতের উপর প্রচুর পরিমান মগজ ধোলাই দেয়া হয়েছে। আজ আমরা তা অনুভব করতে শিখে গেছি। আমরা আজ নিজের দরকারি জ্ঞান টুকু অর্জন করতেও ভয় পাচ্ছি। যে ইসলাম আমাদের আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর কাছে মাথা নত না করতে এবং ভয় করতে মানা করেছে। সেই আমরা আজ দিবানিশি ভয় ও লোভ দ্বারা নিজেদের অহেতুক বন্দি করে রেখেছি। ইসলাম লোভ কে পরিত্যাগ করতে বলেছে। লোভ কে পরিত্যাগ করতে বলেছে বলেই ইসলামে সকল প্রকার সুদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই বলে কি ইসলাম জ্ঞান অর্জন করতে মানা করেছে? তাই বলে কি ইসলাম ব্যবসা করতে মানা করেছে? অবশ্যই না। আজ মুসলিম জাতির মধ্যে অনেক বেশি তরুন সমাজ আছেন যারা ভবিষ্যত পৃথিবীর জন্য অনেক অবদান রাখতে পারেন। আমরা আমাদের এই সম্ভাবনাকে কেনো ভবিষ্যতের অন্তকারে পরিনত করতে যাচ্ছি? আমরা এতো বেশি অবুঝের মতো আচরন করছি কেনো?

সমস্ত মুসলিম জাহানের কি সম্পদের অভাব পড়েছে? তাহলে আফ্রিকার নিরিহ মুসলিম বা নিরিহ শান্তিপ্রিয় মানুষ না খেয়ে, পা পরে থাকবে কেনো? মুসলিম সমাজপতিরা কেনো এতো বেশী দূর্ণীতিতে আসক্ত হবে? যারা শান্তিসুধা নিয়ে পুরো পৃথিবীকে শান্তি এনে দিতে পারে তাদের কেনো আমরা ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে চাইছি?

আমরা আমাদের মোহাম্মদ (সঃ) এর আদর্শ থেকে এতো বেশী দূরে সরে গেছি যে, আজ মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে থেকেও নিজের আল্লাহ্ সম্পর্কে সদা সন্দেহ করে বেড়াচ্ছি। আজ আমাদের বুঝতে হবে ইসলাম সর্বদা মানব সম্প্রদায়ের শান্তির বানি অনন্তর থেকে অনুভব করতে শিখায়। আজ আমরা এতো বেশী পাষান হয়ে গেছি যে, নিজে মানুষ হয়ে অন্য মানুষকে ঘৃনা করতে দিদ্ধাবোধও করি না। মুসলিম কান্ট্রি গুলোতে মসজিদ নামক ভবনের অভাব নাই। মনের মসজিদে আল্লাহ্ কে জাগিয়ে তুলে যে জলজ্যান্ত মানুষটি অভাব অনটনে রাস্তার পাশে ঘুমিয়ে আছে তাকে শুধু লাথিই দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু একবারের জন্যও ভাবছি না ঐ মানুষকে আমরা আমাদের মসজিদ ভবনে একটু রাত্রি যাপনের সুযোগ দিয়ে আল্লাহ্ কে কত সহযে নিজের করে পেতে পারি। ইসলাম মানুষের অধীকারের কথা বলে। ইসলাম প্রেমের কথা বলে। ইসলাম শান্তির কথা বলে। ইসলাম অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলে। কি হবে ঐ সব পাকা দালানের শেট পাথরে তৈরি মসজিদ ভবন দিয়ে যদি আমরা আমার ভাইতুল্য মানুষটিকে একটু থাকার স্থান না করে দিতে পারি?

আমি হয়তো ভাবছি রাস্তায় ঘুমিয়ে থাকা অভাবি মানুষটিকে অন্য একজন তুলে নিয়ে খাদ্য দিয়ে, শোবার স্থান দিয়ে, সেবা দিয়ে শান্তি দেবার চেষ্টা করবেন। আবার অন্য একজন ভাবছেন অন্য আর একজনের কথা। এভাবে যদি আমাদের ইসলামি দায়িত্ববোধ ফুটবলের মতো পাস করার চেষ্টা করি তাহলে তো শয়তান গোল দেবেই। আজ থেকে আমি যদি মানবকল্যানে ব্রতি হওয়া প্রথম মানুষটি হতে পারি তাহলে কি আমরা আমাদের পথে দ্রুত অগ্রসর হতে পারলাম না বলুন?

আমরা মুসলিম জাহান আজ এতো বেশি নষ্ট অবুঝচিন্তার মধ্যে ডুবে আছি যে খুব সহয ব্যাপারগুলোও আমাদের মাথায় আসে না। একবার কি ভেবে দেখেছেন যে, যে আল্লাহ্ সর্বঅবস্থায় আপনার সম্পর্কে অবগত আছেন তিনি কি করে বাকি আর লোভ দ্বারা আপনাকে পুরষ্কৃত করবেন? আল্লাহ্ আমাদের আমলনামার ফলাফলের উপর সুদ দিতে পারেন না? যে আল্লাহ্ সুদের মাধ্যমে আমাদের লোভ দেখায় সে আর যাই হোক তাওহিদের আল্লাহ্ না। এমন ভাবে যারা ইসলামকে পঙ্গু বানাতে চেয়েছিলো তারাই ইসলামের প্রকৃত শত্রু। আর ঐ সব শত্রুদের আল্লাহ্ যথাযথ শাস্তি দিয়ে যাচ্ছেন। তাই বলে আমি কিন্তু অন্যায় ভাবে কারও সাথে বিবেধ তৈরি করে ইসলাম বিরোধী বলে গন্য হবার যোগ্যতা রাখি না। আল্লাহ্ মানুষের লোভ কে সংবরন করতে বলেছেন বলেই সুদ কে নিষিদ্ধ করেছেন। আর যে রাজ্যে সুদ নাই সেখানে ২.৫% হারে বাধা ধরা যাকাত আসে কি করে? যখন মোহাম্মদ মক্কা বিজয় করে আদর্শ রাষ্ট্র আমাদের দেখালেন তখন কি এই ২.৫% নামক যাকাত ব্যবস্থা চালু ছিলো? অবশ্যই না। এই বিধানগুলো সুকৌশলে মুসলিম জাহানের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের স্বার্থ হাসিল করার জন্য। বাইতুল মাল এ জমা রাখা অর্থ আর যাকাত এর মধ্য পার্থক্য আমাদের বুঝতে হবে। যাকাত মানে শুধু যে অর্থকরি দিয়ে মানুষকে সাহায্য করা এমন নয়, যাকাত আপনার অন্তরের শুদ্ধ সত্য ও সুন্দর দিয়ে অন্য মানুষকে জ্ঞান ও তাওহিদের সঠিক রাস্তা দেখাতে সাহায্য করার নাম। নিজেকে মানব কল্যানে বিলিয়ে দেয়া বড় জাকাত। আর যখন আপনি মানব কল্যান করতে যাবেন তখন কার, কতখানি, কোটনা প্রয়োজন তা পারসেনটিজ দিয়ে আগে হিসাব করতে পারেন না। এজন্যই পবিত্র কোরআন শরিফ এ বার বার সালাত ও জাকাত নামক ফরজ এবাদাত দু’টো করার বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। যদি রাস্ট্রিয় আইন করে মানুষের কর, ট্যাক্স বা দান করার বাধ্য বাধকতা করা হয় তখন হয়তোবা পারসেনটিজ হিসাব করা নাজায়েজ নয়। বাইতুল মাল নামক যে ত্রান তহাবিল গঠন করা হয়েছিলো সেখানে ২.৫% হারে দান করার ব্যবস্থা সাময়িক সময়ের জন্য করা হয়েছিলো। দান মানুষের ঐচ্ছ্বিক কর্তব্য মাত্র। আবার যখন কোনো মানুষ বা গোষ্টি দান ছাড়া চলতে পারে না তখন মানব সেবা বড় এবাদাত ভেবে সাহায্য করা প্রত্যেক মুসলিম এর কর্তব্য।

খেয়াল করে দেখুন বন্ধু! আল্লাহ্ কোনো অবস্থায়ই আপনাকে লোভ ও ভয় দিয়ে আটকে রেখে পলিটিক্স করতে পারেন না? পলিটিক্স মানুষ করে তাই ধর্মের মধ্যে যত ভাবেই বাজে পলিটিক্স মিশিয়ে কিছু অসুভ শক্তির স্বার্থ হাসিল করা হোক না কেনো সে মিথ্যা কোনো ভাবেই সত্যের সাথে একসাথে থাকতে পারে না। একদিন না একদিন সেই মিথ্যের মুখোশ খুলে পড়ে। ইসলাম বা শান্তির পথকে কে আল্লাহ্ সর্বদা হেফাজত করার কথা দিয়েছেন। আল্লাহ্ কখনও তার কথার ব্যাতিক্রম করেন না। কোরআনে উল্লেখিত মূলভাব সবসময় বর্তমান থাকে। তাই আল্লাহ্ কখনও বাজে ভাবে ভয় দিয়ে বাকি পুরষ্কারের লোভ দেখান না। তাইতো আমাদের মানবজীবনে আমরা সুকর্মের পুরষ্কার নয় বরং প্রতিদান পাই আর খারাপ কাজের শাস্তি পাই। যেখানে আপনার আমার হাসর, কেয়ামত নিয়মিত হচ্ছে সেখানে কিছু বাজে সমাজ ব্যবস্থা আমাদের উপর মিথ্যে কেয়ামত এনে দাড় করিয়ে দিয়েছে। যার ফলে আজ মুসলিম সমাজের নিরিহ মানুষগুলো অত্যাচার সয়ে সয়ে শুধু মিথ্যে মানবসৃষ্ট কেয়ামত নামক পৃথিবী ধ্বংসের জন্য অপেক্ষা করে আছে। শুধু বলে চলে, “পরকালে সব দেখা যাবে”। একবার ভেবে দেখেছেন বন্ধু আমাদের মাথায় কিভাবে মিথ্যে বেহেশত ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। যেখানে আমরা কোরআনে স্পষ্ট ভাবে জন্মান্তবাদ/পরিবর্তনবাদ/রূপান্তরবাদের উল্লেখ পাই সেখানে ঐ মানব সৃষ্ট মিথ্যে বেহেশত কিভাবে আশা করি? আজ পুরো মুসলিম বিশ্বকে এই মগজ ধোলাইর হাত থেকে নিজেদের হেফাজত করতে হবে।

বর্তমান এই সময়ে যদি নমরুদ, আবু জাহেল পৃথিবিতে তাদের স্বরূপে হাজির হয় তাহলে কি আপনি তাদের ভয় পাবেন নাকি হাস্যকর মনে হবে? অবশ্যই এই মানুষের সভ্যতার আপগ্রেটের যুগে তাদের প্রাচিন বলেই মনে হবে। মুসলিম সমাজকে আজ বুঝতে হবে উদাহরন কখনও এবাদাত হতে পারে না। মুসলিমগন আবু জাহেল, নমরুদ নামক মানুষকে ভয় করে না। মুসলিমগন আবু জাহেল, নমরুদ, কারুন, ফেরাউনের মধ্যে যে শয়তান বাস করে, সেই শয়তানের হাত থেকে মুক্তির জন্য নিজের মনের সাথে সদা জেহাদ করে চলে। মুসলিম জাহান এক আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। আমাদের বুঝতে হবে এই বর্তমান সময়ে আমরা যদি আমাদের মধ্যকার কুচক্রি মহল দ্বারা তৈরি প্রতিষ্ঠিত সত্য (যা মূলত মিথ্যা) দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের মধ্যে নিজেরা কোন্দ্রল করে চলি তাহলে এর পরিনাম কি কোনো ভাবেই ভালো ও কল্যানকর হতে পারে?

মনে রাখবেন, আল্লাহ্ রব্বুল আলামিন তার প্রেরিত বার্তাবাহকদের দ্বারা এমন কোনো ম্যাসেজ প্রদান করেন না যা বিলুপ্ত করা যায় অথবা অমান্য করার উপযোগী হয়। আজ মুসলিম সমাজকে সালাত আদায় ও জাকাত আদায় নিয়ে টেনশন করতে হয়। আমরা যদি সালাতের আসল মর্ম বুঝতে পারতাম তাহলে সবাই সালাত আদায় করতো। সালাতের মাধ্যমে শান্তি আসে। কেউ যদি সালাত করার মধ্যে শান্তি না পায় তাহলে সে সালাত আদায় করবে কেনো? সম্মুখ কর্মের নামই সালাত। সালাত ফিজিক্যালি ও মেন্টালি স্রষ্ট্রার দিকে গভির মনোনিবেশ করার নাম। সালাতের সর্বোচ্চ পর্যায় হলো সরাসরি স্রষ্টার সাথে নিজের কানেকটিভিটি বুঝতে পারা। সত্যিকারের সালাত যিনি কায়েম করতে পারবেন তিনি নিজের মন থেকেই ক্বেবলা মুখি হয়ে থাকবেন। তাওহিদের ডাক যিনি পরিপূর্ণ ভাবে একবার অনুভব করতে পারেন তাকে শত লোভ লালসা ও সম্পদ দিয়েও তাওহিদ বিমুখ করা সম্ভব নয়।

মোহাম্মদের আত্মপ্রকাশের পর তৎকালিন সমাজ ইসলাম দেখে বিমোহিত হয়ে গিয়েছিলো। মোহাম্মদ তাওহিদের পথ খুব সহযে তার উম্মতদের দেখাতে সক্ষম হয় যার মধ্যে কোনো প্রকার জোড় জবরদস্তি নাই। কিন্তু মানুষ তার অন্তর থেকে ইসলাম কে অনুভব করে যাচাই বাচাই করে ইসলাম এর দিকে ঝুকে পড়ে। আজ দেখুন বন্ধু! আমরা কজন মানুষ সেই তাওহিদের সর্বোচ্চ ডাক পাবার মতো আত্মবিশ্বাস ও যোগ্যতা রাখি। সকল মুসলিম জাহান কে আজ ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

যে মোহাম্মদ আপনার অন্তরের ভিতরই জেগে উঠতে পারেন, সেই মোহাম্মদ এর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে যুগে যুগে এতো বেশি অপকৌশল করার কি দরকার ছিলো? মোহাম্মদ মনের ভিতর উদয় হয় জাত গোত্র বিবেধের বাইরে থেকে শুধু কর্মের জোড়ের উপরে। আমরা তা না বুঝেই নিজেদের মধ্যে ও মানুষের মধ্যে শুধু শুধু বিবেধ করতে শিখেছি। মোহাম্মদ সর্বদা উম্মতি উম্মতি বলে তার প্রিয় উম্মতকে কেঁদে কেঁদে ডেকে বেড়ায় যারা ঐ ডাক শোনার যোগ্য তারা ঠিকই বুঝতে পারেন। আর যারা আল্লাহ্ র উপর ঈমানটুকুই নিয়ে আসতে পারে না তারা কি করে চিরকল্যান এতো তাড়াতাড়ি আশা করে?

হযরত মোহাম্মদ স এর উফাতের পরে মাওলা আলী বেশীর ভাগ সময়ই গভীর ধ্যান মগ্ন থাকতেন। ওমরের শাসনামলে আলী কে কিছু কাজ বাজ বা বিশেষ কমিটির কিছু দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো এবং আলী স্রষ্ট্রার অনেক বেশী প্রিয় হয়েও সেই কাজটুকু করে দিয়েছিলো। তারপরও আজও আমরা মাওলা আলীর ক্ষমতা সম্পর্কে বুঝতে পারলাম না। এই আফসুসটুকুও যদি আজ মুসলিম জাহানের থাকতো তাহলে হয়তো এতো বেশি কষ্ট করতে হতো না।

মাওলা হোসাইন কে নেত্রীত্রের জন্য না যতখানি মার্ডার করা হয়েছে তার থেকেও বেশী মানুষের অধীকার আদায় করা শিক্ষা দেবার জন্য সদা উজ্জ্বল উদাহরন হিসেবে মহাকালের বুকে থেকে যাবে। পানি পানের অধিকার থেকে হোসাইন এর সাথে থাকা নিরিহ মুসলিমদের বঞ্চিত করা হয়েছিলো। মুসলিম জাহান কি মাওলা হোসাইনের সেই মানব অধীকারের জন্য প্রাণ দেয়া ভালো করে খেয়াল করে দেখেন নি? আজ আমরা এতো বেশি স্বার্থপর হয়ে গেছি যে, নিজেরা নিজেদের ধ্বংস করার পায়তারা করছি। ধর্মের নামে হানাহানি কাটাকাটি মারামারি করে নিজেরাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।

চুক্তিতে সহি স্বাক্ষর করে কথনও একতা হওয়া যায় না। মনের টানে মন যখন ছুটে চলে তখনই মানুষ একতাবদ্ধ হতে পারে।

আজ মুসলিমদের এতো এতো ভিন্নমত রেখে যতই ও.আই.সি. বা অন্য কোনো সংগঠন করি না কেনো তাতে কি কোনো স্থায়ী শান্তি আসতে পারে বলুন। শান্তি আসবে নিজের মন ও পরিবেশ থেকে। ইসলাম অর্থ শান্তি আমরা ইসলামের ভিতরের শান্তিকে পায়েঠেলে শুধু ইসলাম নামটিকে ট্রেড মার্ক করে নিজেদের অন্যায্য অধীকার আদায়ের কথা ভাবছি। মুসলিমরা কখনও অশান্তি ও অশুভর পথ অবলম্বন করতে পারে না। মুসলিমদের কাছে মানুষকে মানুষের মতো করে বাঁচতে দেয়া সবার আগে প্রধান কর্তব্য বলে জ্ঞাত।

যা হবার তা হয়ে গেছে ভেবে আজও কিন্তু আমাদের সমস্ত মুসলিম জাতির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঘুরে দাঁড়াতে পারি। আমাদের সেই সুযোগ আছে। আসুন আমরা আমাদের অন্তর দিয়ে ইসলাম নামক শান্তি অনুভব করি এবং এই শান্তির বানী সবার কাছে পৌছে দেই


https://www.facebook.com/asif.ud
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×