somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

FAQ: মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংগঠিত মানবতা বিরোধী বিচার প্রক্রিয়া চলছে সরকারী উদ্যোগে আর বন্ধের বিরুদ্ধে চলছে বেসরকারী শক্তিশালী উদ্যোগ। যেহেতু আসামী পক্ষ আর্থিক ভাবে বেশ শক্তিশালী এবং মরিয়া সে হিসাবে টোটাল বিচার প্রক্রিয়াটা এখন বেশ ঝুঁকির মধ্যে। যারা সত্যিকার ভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান তারা আসলে সে রকম মরিয়া নয়। তাই আমাদের সকলের উচিত অন্তত জনমত গঠনে নিজ নিজ জায়গা থেকে তাদের ছুড়ে দেয়া প্রশ্ন গুলার যুক্তি সংগত উত্তর দেয়া। যুদ্ধাপরাধী জামাতি শিবিরেরা নানাবিধ ভাবে মানুষকে অলরেডি তাদের পক্ষে সিম্পেথি তৈরীতে সমর্থ হয়েছে। সরকারের নানাবিধ ভুল পদক্ষেপ এবং অজনপ্রিয়তা বিচার হওয়ার পথে বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে গেছে। তারা জনগনকে যে সব ভুল তথ্য দিয়ে বুঝিয়েছে সে গুলার উত্তর জানা এবং দেয়া জরুরী। আমি আমার সীমিত সামর্থ্যে যে গুলো পেরেছি সে গুলো দেয়ার চেষ্টা করছি। আরো তথ্য থাকলে আশা করছি আপনারা যোগ করবেন মন্তব্যে এবং এই পোস্ট শেয়ার করতে কার্পণ্য করবেন না।

প্রশ্ন:1: 1971 সালে সাঈদীর বয়স নাকি ছিল 12 বছর?

সাঈদীর বয়স পাল্টানো এবং ভিন্ন ভিন্ন নামের বিবরণ দেখুন।
View this link
দাখিল পরীক্ষায় তাঁর নাম ছিল মোস্তফা দেলাওয়ার হোসাইন, আলিমে ছিল আবু নাঈম মো. দেলাওয়ার হোসাইন। পরে তা পরিবর্তন করে হন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনটি হুবহু এরকম: ‘আমি দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী জন্ম তারিখ ১-০২-১৯৪০ ইং, পিতা মাওলানা ইউসুফ সাঈদী, বাড়ি নং ৯১৪ শহীদবাগ ঢাকা। আমি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মাদরাসা এডুকেশন বোর্ড বর্তমানে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীন খুলনা জেলাধীন বারুইপাড়া সিদ্দিকীয়া সিনিয়র মাদরাসা হতে আলিম পাস করি।যার পাসের সন ১৯৬০, রোল খুলনা নং ১৭০৭, আলিম পরীক্ষায় আমার জন্ম তারিখ ১-০২-১৯৪০ এর পরিবর্তে ভুলবশত ১-১২-১৯৪৪ লেখা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমার শুদ্ধ ও সঠিক জন্মতারিখ হবে ১-০২-১৯৪০। আমি অদ্য ৮/১১/২০০৮ তারিখে নোটারী পাবলিক, ঢাকা এর সম্মুখে হাজির হয়ে আমার জন্ম তারিখ সংশোধনের বিষয়ে হলফ করছি। দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী, পিতা: মাও ইউসুফ সাঈদী । সংগ্রাম/ পি-৭২৭১/০৮’ সুত্র-
View this link
এ ছাড়াও দেখতে পারেন নির্বাচন কমিশনে দেয়া তথ্যের কপি-
View this link

প্রশ্ন-2- বঙ্গবন্ধু সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেছিলেন, তাই আবার কেন বিচার?

সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার ৫ নং ধারায় বলা হয়ছে:(দালাল আইন)
‘যারা বর্ণিত আদেশের নিচের বর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব ক’টি অভিযোগ থাকবে। ১. ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো অথবা চালানোর চেষ্টা), ২. ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র), ৩. ১২৮ ক (রাষ্ট্রদ্রোহিতা), ৪. ৩০২ (হত্যা), ৫. ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা), ৬. ৩৬৩ (অপহরণ), ৭. ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ) ৮. ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৯. ৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা), ১০. ৩৭৬ (ধর্ষণ), ১১. ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি), ১২. ৩৯৪ (দস্যু বৃত্তিকালে আঘাত), ১৩. ৩৯৫ (ডাকাতি), ১৪. ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি), ১৫. ৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি), ১৬. ৪৩৫ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন), ১৭. ৪৩৬ (বাড়িঘর ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার), ১৮. ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে কোন জলযানের ক্ষতিসাধন) অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান। এসব অপরাধী কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নন।’ সুতরাং বর্তমান ট্রাইবুনালের বিচারের সাথে সাধারণ ক্ষমার ব্যাপারটি কোন ভাবেই যায় না।
এ ছাড়াও বর্তমান সরকারের manifesto তে এ বিচার করার কথা ছিল এবং সরকার এ ব্যাপারে ব্যাপকভাবে জিতে মেন্ডেট প্রাপ্ত ।

প্রশ্ন-3। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে আন্তর্জাতিক বিচারক নাই কেন?

এটি আন্তর্জাতিক আইনের প্রেক্ষিতে গঠিত একটি ডমেস্টিক আদালত। “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এ্যাক্ট” এর নাম অনুসারে এটির নামকরণ করা হয় বলে অনেকে এটিকে ভুল বুঝাতে চেষ্টা করেছেন। যেহেতু এটা মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার তাই এটার জন্য আন্তর্জাতিক আদালত গঠনের প্রয়োজন নাই। আসামী এবং বাদী উভয়েই যেহেতু একই দেশের সে জন্য আন্তর্জাতিক আদালত গঠন জরুরী নয়।
এ ব্যাপারে পড়তে চাইলে- দুই পর্বে -
বিভিন্ন দেশের ট্রাইবুনাল গঠন প্রক্রিয়া আইন গত ভিত্তি.
View this link

প্রশ্ন-4: তারা নাকি বিচার বানচালের জন্য কিছুই করছে না?

উত্তর:সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়া মাত্র জামায়াতের পুরোনো প্রভু আমেরিকান সরকারের কাছে লবি করবার জন্য আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয়ে নিয়োগ দেন Cassidy and Associates কে । শুধু তাই নয়, এই বিচার ঠেকাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে একের পর এক বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক,সরকারী কর্মকর্তাকে কিনে নিচ্ছেন এই যুদ্ধাপরাধী।
Cassidy and Associates গিয়ে Client Country বাংলাদেশ দিয়ে সার্চ করার পর প্রথমেই আসে জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর নাম। যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালের জন্য এই জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলী এবং মীর মাসুম আলী ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত লবিষ্ট ফার্ম Cassidy and Associates কে নিয়োগ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য। ইতিমধ্যে তারা Cassidy and Associates কে প্রায় তিনকোটি টাকাও দিয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই খাতে জামায়াতের বাজেট ২৫ মিলিয়ন ডলার বা ১৭০ কোটি বলে রিপোর্ট করেছে। জামাতের ঢাকা মহানগরের আমির রফিকুল ইসলামের ডায়েরিতে পাওয়া যায় তাদের নজরে থাকা বুদ্ধিজীবীদের নাম এবং তাদের 11 কৌশলের কথা। তাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সহিংসতা দেখে মনে হয় তারা লবিস্টদের উপদেশ দ্বারা আদৃষ্ট এবং টকশোতে বুদ্ধিজীবীদের ট্রেন্ড এবং প্রকাশভঙ্গি বুঝতে হলে পড়তে হবে তার ডায়েরিতে লিখা প্ল্যান গুলি এবং এতেই বুঝতে পারবেন মীর কাশেম আলীর টাকা কথা বলতে শুরু করেছে।
View this link
View this link

প্রশ্ন-5. এ প্রসংগ আসলেই তারা স্কাইপি কেলেংকারির কথা বলে কোড করে” সরকার পাগল হয়ে গেছে রায়ের জন্য?

উত্তর: কারো ব্যাক্তিগত বিষয় হ্যাকিং করা নৈতিক ভাবে এবং আইনগত ভাবে অপরাধ হলেও তারা সেটা বেমালুম চেপে যায়। “সংলাপে উল্লেখ আছে যে ‘গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া, তারা একটি রায় চায়।’ এতে অবাক হওয়ারও কিছু নাই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এ বিষয়ে তারা জনগণের কাছে রায় চেয়েছেন এবং পেয়েছেনও। সরকারের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছর, সুতরাং সরকার চাইবে যে একটি সফল বিচার কাজ শেষ করে জনগণের কাছে তাদের দেয়া ওয়াদা সম্পূর্ণ করে পরবর্তী মেয়াদের জন্য রায় চাইবে। এর চাইতে বড় বিষয় হচ্ছে এই বিচার কাজটি নির্বিঘ্নে করা যাচ্ছে না। অভিযুক্ত পক্ষ এটি নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক তোড়জোড় করছেন। আন্তর্জাতিক মিডিয়া কেনা হচ্ছে, দামি দামি লবিস্ট এবং আইনজীবীরা তোলপাড় করছেন। দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি, নাশকতা, আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর হামলা চলছে অব্যাহতভাবে। সরকারের একটা বড় শক্তি নিয়োগ করে রাখতে হচ্ছে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায়। সুতরাং সরকারপক্ষ অবশ্যই চাইবেন যাতে করে বিচারটি শেষ হয়ে যায় এবং তারা এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে যেতে পারেন।
কিন্তু এই আলোচনার স্ক্রিপ্ট পড়ে প্রণিধানযোগ্য যে, বিচারপতি নিজে এই চাপকে আমলে নিচ্ছেন না। তিনি বরং বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। আরিফ জেবতিক এর কলাম থেকে।View this link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×