ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলে তল্লাশি চালিয়ে হাতবোমা, রড, চাপাতি ও রামদাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
Published : 11 Apr 2014, 06:16 PM
তবে এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।
শুক্রবার দুপুরে সংঘর্ষের পর বিকাল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত হলে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে এবং আবাসিক শিক্ষকদের সহায়তায় হলের বিভিন্ন রুম তল্লাশি করা হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।
তল্লাশিতে অংশ নেয়া শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক শাহেদ আলী জানান, হলের ৪৫৪ নম্বর কক্ষ থেকে ককটেল ভর্তি একটি কার্টন উদ্ধার করা হয়, যাতে ১৫টির মতো তাজা হাতবোমা ছিল।
এছাড়া হলের ২৪০ নম্বর কক্ষ থেকে একটি রামদা এবং বিভিন্ন কক্ষ থেকে রড, লাঠি, চাপাতিসহ শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, জুমার নামাজের পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সূর্যসেন হল ক্যাফেটেরিয়ার সামনে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোবারক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আরেফিন সিদ্দিক সুজনের দুই অনুসারীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
পরে হল ক্যাফেটেরিয়ায় খেতে গেলে ওই ঘটনার জের ধরে দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
একপর্যায়ে জসীমউদদীন হলের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।
সংঘর্ষের সময় হলের ওই এলাকায় পরপর তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমজাদ আলী, হল প্রাধ্যক্ষ একেএম মাকসুদ কামাল এবং ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেহেদি হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।
সংঘর্ষের পর সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ হলের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এসময় কাউকে ঢুকতে বা বেরোতে দেয়া হয়নি। এরপর হলের বিভিন্ন তলায় পুলিশি তল্লাশি চালানো হয়।
মাকসুদ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “দুপুরে ছাত্রদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে হাতবোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়ায় হলে এ তল্লাশি চালানো হয়।”
হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন বলেন, “এই হলে আমার অনুসারীদের মাত্র ছয়টি রুম আছে। আর বাকি সব রুম সভাপতির অনুসারীদের দখলে।
“আমি এ বিষয় নিয়ে কখনো অভিযোগ করিনি। তবে আজকে আমার এক অনুসারীকে সভাপতির কর্মীরা বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে। আমি দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মোবারক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
যেসব কক্ষে হাতবোমা ও অন্যান্য অস্ত্র-শস্ত্র পাওয়া গেছে সেগুলো সিলগালা করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে হল প্রাধ্যক্ষ মাকসুদ কামাল বলেন, “ঘটনা তদন্তের জন্য খুব শিগগিরই তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হবে।”
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষীরা যে দলেরই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।