somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবধান !!! অজ্ঞান পার্টি

০২ রা জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত শুক্রবার ভোরে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বের হই।ঘড়িতে তখন ৫.১২টা।বের হয়েই মনটা ভরে গেল সুন্দর রংধনুটা দেখে।পুরো শীতলক্ষা জুড়ে ওঠা ধনুকের মত বাঁকানো রংধনু।এটা ছিল আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর রংধনু।নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে মন ভরে দেখলাম কিছুক্ষন।তারপর হাঁটা শুরু করলাম।সিএনজি না পেয়ে হেঁটেই গেলাম বাইপাস মোড় পর্যন্ত।পৌঁছতে না পৌঁছতেই পিপিএল সুপার বাস এসে থামল।এটা নরসিংদী টু মহাখালী রুটে চলে।আর আমি ঘোড়াশাল থেকে উঠব।যাহোক, কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে বাসে উঠে সিটে বসলাম।পাশের সিটটা ফাঁকা ছিল।বাস ছেড়ে দিল।সামনেই ঘোড়শাল ব্রীজের গোড়া থেকে কিছু লোক নিয়ে দ্রুত চলতে শুরু করল বাসটি।তখনও আমার পাশের সিটটা ফাঁকা।ভোরে উঠার আতংকে রাতে ভাল ঘুম হয়নি।তাই কেবল ভাবছি এবার একটা ঘুম দিই।এমন সময় অন্য কোন সিটে থাকা একজন এসে আমার পাশে বসলেন।মুখ ভর্তি লম্বা কাঁচা দাড়ি।পরনে লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি।
বসেই জিজ্ঞেস করলেনঃ কোথায় যাবেন?
আমিঃ এত সকালে ঘুম থেকে উঠে এসে ঢাকার বাসে উঠে বসেছি কোথায় যাওয়ার জন্য আপনিই বলেন?
উনিঃ আমি টঙ্গি ব্রীজের নিচে নামব তো তাই বলছিলাম ঘুমিয়ে পড়লে একটু ডেকে দিবেন।
পাত্তা না পেয়ে থেমে গেলেন। আর আমার ঘুমানোর স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল।
তার সাথে কথা না বাড়ানোর কারনটা ছিল ভয়।আমার তখন আগের দিন শামিম ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া কাহিনী মনে পড়তে লাগল।
শামিম ভাই(QC-Manager PCL ) হলেন প্রাণ ক্যান্ডি লি. এর QC ম্যানেজার।ওনার বাড়ি রাজশাহী।উনিও খুব সকালে বাড়ী যাওয়ার জন্য বেড়িয়েছিলেন।ঢাকায় যেয়ে রাজশাহীর বাস ধরবেন।বাসে উঠে বসার কিছুক্ষন পর বাসে একটা হকার ওঠে।সে Mentor’s জাতিয় ক্যান্ডি বেচতে উঠেছে।শামিম ভাই নিজে ক্যান্ডির মানুষ তাই কিউরিসিটি থেকেই একটা ক্যান্ডি নিয়ে মুখে দিয়েছিলেন স্বাদ বোঝার জন্য।কিন্তু স্বাদ বুঝতে ওনার দুই দিন লেগেছিল।স্বাদের বিনিময়ে দিতে হয়েছে বাড়ীর জন্য সাথে নেওয়া টাকা,মোবাইল সহ সাথের সবকিছু।লোকজন তাকে আবিষ্কার করেছিল সেই টঙ্গি ব্রীজের নিচের রাস্তায় অজ্ঞান অবস্থায়।তারপর সোজা টঙ্গির ৫০ সয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে। আজ উনি সুস্থ।
আমি ঘুম তাড়ানোর উপায় হিসেবে ব্যাগ থেকে বই বের করে পড়তে থাকলাম।যদিও পড়াতে মন ছিলনা।বারবার আড়চোখে তাকে ফলো করতে লাগলাম।উপযুক্ত প্রমান না থাকায় কিছু বলতেও পারছিলামনা।হঠাৎ দেখি পাঞ্জাবিটা উপড়ে উঠিয়ে(মেয়েদের মত) লুঙ্গির সাথে ফিতা দিয়ে বাঁধা একটা জিন্সের ব্যাগ(আমাদের এলাকায় এটাকে খুতি বলে।তরকারি ওয়ালারা ব্যবহার করে) থেকে লাল রংয়ের একটা মোবাইল বের করে টিপতে লাগলেন।টিপছেন আর একটু পর পর আমাকে দেখছেন।এবার আমি অভিনয় শুরু করলাম।ঘুমের অভিনয়।একটু ঝিমাই তারপর আবার তাকাই।দেখি তার আমার দিকে তাকানোর পরিমান বেড়ে গেল।হয়ত প্রতিক্ষিত সময়ের অপেক্ষা।যখন তিনি খুব উসখুস করতে লাগলেন ঠিক তখনি আশায় গুড়ে বালি দিয়ে সোজা হয়ে পড়তে শুরু করলাম আর তার মলিন বদনখানি মাঝে মাঝে খেয়াল করলাম।
বাস তখন পুবাইলে।তার ফোনটা বেজে উঠল(একটা ইংরেজি গান)।দুইটা কথা বলল সে।না ভাই এবং জ্বি ভাই।
(কাল্পনিক কথোপকথনঃ
ওপাশ ওয়ালাঃ কিরে কাম হইছে?
খুতিওয়ালাঃ না ভাই।
ওপাশ ওয়ালাঃ তাইলে সময় নষ্ট করিসনা নাইমা পর।
খুতিওয়ালাঃ জ্বি ভাই।)
পুবাইল মোড়েই বাস থামিয়ে আমার আশংকার প্রমান দিয়ে সে সহ চারজন বাস থেকে নেমে পড়ল।বাস তখনও একটু একটু চলছিল।শেষের জনের পা মাটিতে পড়তেই বাসের গতি বেড়ে গেল।আমি জানালা দিয়ে শুধু তাকিয়ে দেখলাম।
আমি সেদিন নিরাপদেই পৌঁছেছিলাম।সে জন্য আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকুর।হয়ত পারতামনা যদি আগের দিন শামিম ভাইয়ের সাথে এটা না ঘটত।আমি ঘটনা দেখে সাবধান হয়েছি,আপনি পড়ে সাবধান হোন।পরিচিতদেরকে সাবধান করুন।আপনি নিরাপদে পথ চলুন এবং অন্যদেরকে নিরাপদে পথ চলতে পরামর্শ দিন।আর সুযোগ হলে এদের ধরিয়ে দিন।আমি না পারলেও কেউ না কেউ পারবেন জানি।
ঘটনা পড়ে কি করবেন ঠিক করুন।
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফিলিস্তিনিদের আত্মদান ধর্মযুদ্ধ নয়; এটি স্বাধীকারের যুদ্ধ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৬ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৬

বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা যেকোন বিষয়কে ধর্মীয় ফ্লেভার দিয়ে উপস্থাপন করে৷ ইসলামের সাথে কতটুকু সম্পৃক্ততা তার ভিত্তিতে কনভারজেন্স নির্ধারিত হয়৷ বাঙালি মুসলমানরা এক্ষেত্রে এক কাঠি ওপরে৷ পক্ষ বিপক্ষ বেছে নেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

--যে পাখি ফুল দিয়ে বাসা সাজায়, যে মাছ সমুদ্রের নীচে বালিতে ডিজাইন করে--

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৬ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৮

মানুষ ছাড়া প্রকৃতিতে এক ধরনের পাখি আছে- যারা ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। এদের বাওয়ার বার্ড নামে ডাকা হয়। এদের মধ্যে ২০ প্রজাতির পাখি পাওয়া যায়। নিউ গিনির জঙ্গলের ধারে একই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওহাবী বাতিল মতবাদের স্বরূপ উন্মোচন

লিখেছেন মীর সাখওয়াত হোসেন, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭

নজদী ওহাবীদের সম্পর্কে আলােচনা করার পূর্বে নজদ দেশ সম্পর্কে আলােকপাত করতে চাই। আরবের মক্কা নগরীর সােজা পূর্ব দিকের একটি প্রদেশের নাম নজদ । এখন উক্ত নজদ দেশটি সৌদি আরবের রাজধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সর্তকতা।

লিখেছেন কাল্পনিক_ভালোবাসা, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর ব্লগারদের কাছে যদি স্থানীয় ঝড়ের অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×