somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

***** জগন্নাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে কিছু ক্ষোভ ,কিছু বিড়ম্বনা ,কিছু হতাশা এবং কিছু প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি *****

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এমমিতেই এতদিন মানুষজন জানতো , হল সংকট ,শিক্ষক সংকট সহ এক বস্তা অভিযোগ নিয়ে ঘুনে ধরা পুরনো কলেজের কিছু ভবন নিয়ে মাত্র ১১.১১ একর আয়তনের জমির উপর প্রতিষ্ঠিত নাম মাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় । তাই অনেকে যেন এখনো এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতিই দিতে পারছেনা । অনেক জ্ঞানী-গুনী , উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত অনেকের কাছে এখনো একটি শব্দ যখন শুনতে হয় তখন মনে মনে কিছুটা হতাশ হতে হয় । তারা কথায় কথায় জগন্নাথকে এখন কলেজ বলে সম্বোধন করে ! রিক্সায় করে যখন ক্যাম্পাসে যাই এমন কোন রিক্সাওয়ালাকে দেখলামনা যে অন্তত জানে জগন্নাথ এখন আর কলেজ নয় । এটা একটা বিশ্ববিদ্যালয় । পুরনো ঢাকার অনেক বাড়িওয়ালাকেও বলতে শোনা যায় জগন্নাথ কলেজ । এ যেন কাঁটা ঘাঁয়ে নুনের ছিটা ! এমনকী আশেপাশের স্কুল কলেজের কিছু ছেলে-মেয়েদের মুখেও একই গালি জগন্নাথ কলেজ ! এটার একমাত্র কারন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ৭ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে । কিন্তু প্রশাসনের অবহেলা ও দূর্নীতি , অপ-ছাত্ররাজনীতির আগ্রাসনের কারনে ৮ তলার একটি নতুন ভবনের নির্মান ব্যাতীত প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত আর কোন উন্নতি এখনো লক্ষ করা যায়নি । অথচ হল নির্মাণের জন্য অনেক আগেই ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার ।

দেশের অন্যতম সেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে মাথা তুলে দাঁড় করানোর জন্য একদল মেধাবী তরুণ ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক- শিক্ষীকা যেখানে মনে প্রানে কাজ করে যাচ্ছিল সেখানে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু মুঁখোশ পরা সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে অশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আসছে । কিছুদিন পর হয়তো ছাত্রদল ও শিবিরের ও আগ্রাসনও বাড়বে । তাদের বিশৃংখলতার জন্য অধিকাংশ বাবা মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে জগন্নাথে ভর্তি করানোর ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেন ।

সম্প্রতি তারা ঠান্ডা মাথায় একজন নিরীহ পথচারীকে খুন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎকে আরও কয়েকধাপ পিছিয়ে দিল !! এখন রাস্তা ঘাটে , চায়ের দোকানে চলাফেরার সময় কান পাতলেই একটা কথা শোনা যায় জগন্নাথের ছেলেরা খুব খারাপ , উচ্ছৃংখল !!!
কারও কাছে জগন্নাথের পরিচয় দিতে গেলে আগে যেখানে বুক ফুলিয়ে বলতে ইচ্ছা করতো এখন সেখানে জগন্নাথে পড়ি এই পরিচয় দিতে লজ্জায় পড়তে হয় । কোন কোন বন্ধু অভিযোগ করে বলেছে জগন্নাথের পরিচয় দিয়ে গালিও খেতে হয়েছে ! কেউ কেউ আশংকায় আছে পরিচয় দিতে গিয়ে আবার মার না খেতে হয় ! আরেকজন বলল সে কিছুদিন আগে একটি টিউশনি পেয়েছিলো । যখন ক্লাশ সেভেনে পড়ুয়া তার ছাত্র জানতে পারলো তাকে জগন্নাথে পড়ুয়া একজন পড়াবে তখন সে বললো সে দরকার হলে ঢাকা কলেজের কারো কাছে পড়বে তবুও জগন্নাথের শিক্ষার্থীর কাছে পড়বেনা ! কেউ কেউ আশংকা করছে চাকরীর ইন্টারভিউতে না আবার জগন্নাথের পরিচয় দিয়ে গালি খেতে হয় :)
___________________অপরদিকে পুলিশের ভয়তো আছেই । বাইরে বের হলে আইডি কার্ড রেখে বাসায় রেখে যেতে হয় । পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জগন্নাথে পড়ি জানলে যদি আমাকে আবার বিশ্বজিৎ হত্যার আসামী বলে চালিয়ে দেয়া হয় ? অথচ আগে রাস্তা ঘাটে পুলিশ ধরলে জগন্নাথের নাম বললেই এক ধরনের সম্মান পাওয়া যেত পুলিশের কাছে ।

এত কিছুর পরেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শুধু মারামারিই হয় তা কিন্তু নয় । একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বিকভাবে যেসব সুযোগ সুবিধা থাকা উচিত ছিল তা হয়তো এখানে এখনো নেই । কিন্তু ক্লাশ-পরীক্ষা নিয়মিতই হয় । এখানকার বেশির ভাগ ছেলেমেয়েই মন দিয়ে পড়াশোনা করে । চাকরী ক্ষেত্রে মেধার কম্পিটিশনে তারা ঢাকা ভার্সিটির স্টুডেন্টদের থেকে কোন অংশে কম নয় , এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে এগিয়ে । বৈরী পরিবেশে থেকে থেকে তারা শিখছে কিভাবে প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ করে সংগ্রাম করে বাঁচতে হয় । তাদের থাকার জন্য হল নেই , পড়ার জন্য লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই নেই , পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই , যাতায়েতের জন্য পর্যাপ্ত বাস নেই । তবুও তাদের মনে গর্ব বিরাজ করে যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ,চোখে স্বপ্ন ঝিলমিল করে তারা একদিন বড় হবে , তাদের বিশ্ববিদ্যালয় একদিন দেশ বিদেশে অনেক সুনাম করবে ।
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×