শুধিব মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ
- যাযাবর জীবন
সূর্য তার অক্ষের ওপর ঘুরতে থাকে অবিরত
ক্লান্তি বিহীন প্রতিনিয়ত
দিন কেটে রাত আসে রাত শেষে ভোর
৩৬৫ দিনে বছরটা ঘুরে আসে আবার ১৬ই ডিসেম্বর;
ভোরের প্রথম প্রহরে লোকে লোকারণ্য শহীদ মিনার
তিরিশ লক্ষ শহীদের স্মৃতির মিনার
২১শে ফেব্রুয়ারি, ২৬শে মার্চ আর ১৬ই ডিসেম্বর
ফুলে ফুলে আচ্ছাদিত বছরের কটা দিন
অবহেলায় পড়ে থাকে বাকি সব দিন
ঠিক যেন আমাদের স্মৃতিগুলোর মত;
গণ কবর গুলো ছেয়ে থাকে ঘাসের আস্তরণে
শহীদের লাল রক্তের সার শুষে শুষে, ঘন সবুজ হয়ে ওঠে
রক্ত আর ঘাসে মিলে আর মিশে
স্বাধীন বাংলার পতাকা রূপে।
বিশেষ এই দিনগুলো আসে বছর ঘুরে ঘুরে
ছোটে কবিতার তুবড়ি ব্লগের বাঁধ ভেঙে
বিজয় গাঁথা লেখা হয় পত্রিকার পাতায় পাতায়
গানের স্বরলিপি বাঁধা হয় নতুন আঙ্গিকে
চারিদিকে শতেক সেমিনারে আর সিম্পোজিয়ামে
ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা আর বিজয় দিবসের নামে
বছরের অল্প কটা দিন মাত্র, স্মরণে স্মৃতি অম্লান
তিরিশ লক্ষ শহীদেরই নাম
বছরের বাকি দিনগুলো?
এখনো ভিক্ষে মাগে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা দ্বারে দ্বারে
এখনো অনাহারে শহীদ জননীর দিন কাটে মৃত্যুর প্রতীক্ষায়
এখনো দিলীপ কাকারা রাস্তায় ঘোরে দুমুঠো ভাতের অন্বেষণে
এখনো শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা ঝুঝে বিলুপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটার সনে
হায় স্বাধীনতা হায় বিজয়!
সত্যিকারের বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত হবে বাঙ্গালি জাতি
যেদিন একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারও ভিক্ষে মাগবে না ভাতের অভাবে
যেদিন ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকা পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের হবে আবাসন
বিজয়ের চার দশক পরেও আজো আমরা স্বপ্ন দেখি আসবে সে সুদিন
যেদিন সত্যিই শুধতে পারব আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৩৩