somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাল্পনিক_ভালোবাসা
বহুদিন আগে কোন এক বারান্দায় শেষ বিকেলের আলোয় আলোকিত উড়ন্ত খোলা চুলের এক তীক্ষ্ণ হৃদয়হরনকারী দৃষ্টি সম্পন্ন তরুনীকে দেখে ভেবেছিলাম, আমি যাদুকর হব। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিব সারাটি জীবন।

যুদ্ধপরাধী এবং আপনার বিবেকের কথা। আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কোন পক্ষে?

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্প্রতি লক্ষ্য করেছি, যুদ্ধপরাধীদের নিয়ে লিখা হলে, কিছু কিছু মানুষ ছাত্রলীগের বা ছাত্রদলের কূর্মের কথা তুলে ধরেন। ব্যাপারটা এমন যেন, ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল কি কম আকাম করছে, তারা কি কম অপরাধ করছে? তাদের অনাচারের যদি বিচার না হয়, তাহলে জামাত শিবিরের পিছে লাগা কেন? এই ধরনের মনোভাব যারা পোষন করেন তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি, যুদ্ধোপরাধ এবং অন্যান্য ছাত্র সংঘটনের অনাচার দয়া করে এক শ্রেনীতে ফেলবেন না। আমি বলছি না, তাদের অপরাধের কোন জবাবদিহীতা নেই, কোন শাস্তি নেই, কোন বিচার নেই। আমি অবশ্যই যে কোন অপরাধ বা অন্যায়ের বিচার চাই এবং তা যেই করুক না কেন

আমাদের দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কোনটাই দুধে ধোঁয়া তুলসী পাতা নয়। এটা একটি বাস্তব সত্য কথা। তবে যেহেতু আমাদের দেশপ্রেম 'দেশ' কেন্দ্রিক না হয়ে 'দল' কেন্দ্রিক তাই আমরা নিজেদের সমর্থন জানানো দলের কোন অপরাধ চোখে দেখি না কিংবা দেখলেও সেটা অপব্যাখ্যার মাধ্যমে অন্য দলের উপর চাপাই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা বহুল প্রচলিত এবং স্বাভাবিক একটি বিষয়।

কিন্তু তাই বলে যুদ্ধোপরাধ এবং অন্যান্য ছাত্র সংঘটনগুলোর অপরাধ কোন ভাবেই একই পাল্লায় বিচারযোগ্য বিষয় নয়। দুইটা সর্ম্পূন ভিন্ন ব্যাপার।

যেমন ধরুন, একজন সরকারী অফিসার তার চাকরী জীবনের তিল তিল করে জমানো টাকা দিয়ে একটি গাড়ি কিনলেন। রাস্তায় বের হলেন। গিয়ে পড়লেন ছাত্রলীগ কিংবা ছাত্রদলের কোন মিছিলের খপ্পরে। শুরু হলো ভাংচুর, এক পর্যায়ে তার গাড়ীটাও ভেঙে ফেলে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা। একজন বয়ঃবৃদ্ধ ব্যক্তি সবার হাতে পায়ে ধরাধরি করছেন যেন আগুন লাগানো না হয়। কিন্তু সেখানে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এবং যাওয়ার সময় বলা হয় জয় বাংলা কিংবা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। তখন আর যাই হোক, তাদেরকে মানুষ বলে মনে হবার কোন কারন নাই।

আবার মনে করুন আপনার বাসায় হঠাৎ ডাকাত পড়ল, তারা বাসায় প্রবেশ করে মারধোর শুরু করল। আপনার মাকে অত্যাচার করল, আপনার বৃদ্ধ বাবাকে মেরে রক্তাক্ত করল, আপনার বোন হয়ত অন্য রুমে লুকিয়ে ছিল। হঠাৎ দেখলেন, আপনার বাসার কাজের ছেলে কিংবা দারোয়ান সেই ডাকাত দলের সাথে মিলে গিয়েছে এবং ডাকাতি করছে। আপনার বাসার কাজের ছেলের সহয়তায় ডাকাতরা আপনার বোনকে সেই রুম থেকে খুঁজে বের করে আপনার বাবা মার সামনেই তার উপর শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছে। হয়ত পাড়া প্রতিবেশী কিংবা পুলিশ যে কোন কারনেই হোক না কেন ডাকাতরা পালিয়ে যায়। আপনি চোখের সামনেই সব দেখলেন কিন্তু কিছুই করতে পারলেন না। বলুন তো আপনার কেমন লাগবে?? আপনার কি ইচ্ছে করবে না তাদেরকে খুঁজে বের করে একটা একটা করে হত্যা করতে? যে কাজের ছেলেটি আপনাদের বাড়ীতে খেয়ে বড় হয়েছে, সে যখন এমন করবে, তখন তার প্রতি আপনার কেমন ঘৃনা থাকবে?? আপনি চাইবেন না তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে সব কিছুর প্রতিশোধ নিতে। আপনার বাবা হয়ত যা হয়েছে ভালোর জন্যই হয়েছে, সবই উপরওয়ালার ইচ্ছা বলে সেই সব জানোয়ারদেরকে মাফ করেও দিতে পারে। কিন্তু আপনি কি পারবেন তাদের ক্ষমা করতে?? পারবেন না। অন্তত মানুষ হলে পারার কথা না।

প্রিয় পাঠক, ঠিক এমন কাজই আমাদের দেশের রাজাকাররা করেছিল একাত্তরে। এই দেশ তো আমাদের মা বা মাতৃভুমি। যারা আমাদের মা, বোনকে ধর্ষন করেছে, আমাদের বাবা ভাইকে হত্যা করেছে তাদের অপরাধের সাথে আমরা কি করে অন্য অপরাধকে মিলাই? কিভাবে আমরা তুলনা করি? শুরুতেই বলেছি, ছাত্রদল, ছাত্রলীগ এরা কেউই দুধে ধোঁয়া তুলসীপাতা নয়। প্রত্যেকেরই হাঁড়ির খবর জনগন জানে। যেমনটা জানে জামাত শিবিরের গোমরও। জামাত শিবির এর কেন্দ্রিয় নেতারা আমাদের জাতির সাথে যেই বেঈমানী করেছে, যে নির্মম ভাবে মানুষ হত্যা করেছে, তারা এখন পর্যন্ত কোন ক্ষমা তো দূরে থাক, তাদের ভূল পর্যন্ত স্বীকার করে নি।

এমতাবস্থায়, যারা এই দলটিকে অন্য কোন ছাত্র সংঘটন কিংবা রাজনৈতিক দলের সাথে একই দাড়িপাল্লায় মাপেন, আমি মনে করি তারাও ঘৃনার সমতূল্য এবং যুদ্ধপরাধীদের বিচার বিরোধী। এখন যারা মানবধিকারের কথা বলতে বলতে মুখের ফেনা বের করেন, হতাশায় মাথা নাড়েন, নাহ! এই দেশের কিছুই হবে না, সরকার বিচারকার্য ঠিক ভাবে করছে না, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করছে- তখন আমার বড্ড জানতে ইচ্ছা করে, আমার দেশের মানুষকে যখন নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল, যখন হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছি, যখন হাজার হাজার মা বোনকে ধর্ষন করা হয়েছি, তখন কোথায় ছিল আপনাদের সেই মানবতা? কোথায় ছিল আপনাদের বিবেক?? পাখির মত গুলি করে মেরেছিলেন আমার দেশের শ্রেষ্ট সন্তানদের। গুলি খাবার পর মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতর অনেক মানুষের মুখের উপর আপনারা একফোঁটা পানির বদলে দিয়ে ছিলেন গরম প্রস্রাব। তখন মানবতা লংঘিত হয় নি?? তখন কোন অবিচার হয় নি?

যদি না হয়ে থাকে, তাহলে এখন কেন মানবতার দোহাই দেয়া হচ্ছে? এখন কেন বলা হচ্ছে মানবতা লংঘনের কথা ? তারমানে কি ভণ্ডামীর স্বভাব এখনো যায় নি??

ইসলামী বেশ ধরেও কোন কোন লাভ হইলো না। তাই বাঁচার শেষ আশা হিসেবে এখন তোলা হচ্ছে মানবতা লংঘনের কথা। যারা এই সব আলতু ফালতু কথা বলে ঐ সব ঘৃন্য প্রানীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদশন করে, তারা জাতির কলংক। তাদেরকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, মনে রাখবেন, মানবতা বিষয়টি শুধু মাত্র মানুষদের জন্য সংরক্ষিত। কোন নিম্নপ্রানী, হিংস্র জানোয়ার কিংবা কিছু অমানুষদের জন্য নয়। যারা হাসি মুখে, ঠান্ডা মাথায় এবং শুধু ধর্মের দোহাই দিয়ে নিরিহ মানুষকে হত্যা করে, তারা আর যাই হোক মানুষ নয়। তারা অমানুষ। একজন অমানুষের জন্য কিসের মানবতা?? তার আবার কিসের মানবতা লংঘন।

পরিশেষে একটা কথা বলতে চাই আপনারা যারা যুদ্ধোপরাধী আছেন, তাদের উদ্দেশ্য করে। তা হলো, আপনারা দোয়া করেন, ট্রাইবুন্যাল যেন আপনাদের ফাঁসির রায় ঘোষনা করে। আপনারা যা করেছেন, তার তুলনায় এটা কিছুই না। কোন কারনে যদি আপনারা বিচার বানচালের চেষ্টা করেন তখন ধরা খাবেন গনমানষের হাতে। আপনাদের বিচার হবে গন-মানুষের আদালতে। মনে রাখবেন সেখানে পশুদের জন্য কোন আলাদা আইন নেই। সেখানে হিংস্র পশুদেরকে একটাই শাস্তি প্রদান করা হয়, তা হল একটা একটা করে শরীরের অংশ কেটে কুটি কুটি করা কিংবা আস্তে আস্তে জবাই করা। আফসোস, আপনাদের মাংস কুকুরাও খেতে চাইবে না। তা না হলে, প্রিয় কুকুরদেরকে আপনাদের মাংস খাওয়াতাম।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:০৮
৩৪টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×