somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাঁঝ বাতি

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে কৃতিত্বের সাথে এম, এ, পাস করেছে সোহান। উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য অস্ট্রেলিয়ার স্কলারশিপ পেয়েছে। কাগজ-পত্র সব রেডি। এক মাস সময় হাতে আছে, তাই বাড়িতে এসেছে এই সময়টুকু মায়ের কাছে থেকে যাওয়ার জন্য। বিশাল বাড়িতে ওর মা একা থাকে, ওর নানা বেঁচে থাকতে নিজেই এ বাড়িটা ওর মাকে করে দিয়ে গিয়েছিল। সকালে সোহান গিয়েছিল, কাছের শহরে ওর ছোট খালার বাড়িতে, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপে জার্নি করে শরীরটা বড় ক্লান্ত সোহানের।
সকাল সকাল শুয়েছিল ঘুমোবে বলে কিন্তু, এলো মেলো ভাবনায় ঘুম আসছে না, ভেবে ভেবে কোন কুল কিনারাও করতে পারছে না সে, সেই দুপুর থেকে নিজের সাথে নিজে এত যুক্তি তর্ক করে যাচ্ছে, কিন্তু কোন শেষ খুঁজে পাচ্ছে না।
কি বলল খালা ওকে! কথাটা খালা খুব হাল্কা ভাবেই বলেছে, কিন্তু সোহান তা হাল্কা ভাবে উড়িয়ে দিতে পারছে না। তবে কি মা কারো প্রেমে পড়েছে!?
ধ্যাত এই বয়সে এসে?
হতেও তো পারে। শুনেছি কিশোরী মেয়ে যদি প্রেমে পড়ে, তার চোখ-মুখ দেখলে বুঝা যায়, তার মধ্যে হঠাৎ একটা ছট ফটানী, একটা চঞ্চলতা লক্ষ্য করা যায়; কিন্তু মধ্য বয়সী মেয়ে প্রেমে পড়লে কি করে বুঝা যায়? মায়ের মধ্যে ত তেমন কিছু দেখি না।
আমার মাকে আমি শুধু মা হিসেবে দেখেছি, দেখি নি একজন মানুষ হিসেবে, একজন নারী হিসেবে। একজন ভাল ছেলের মা হওয়া ছাড়া তার যে আর কিছু চাওয়া থাকতে পারে, পাওয়ার থাকতে পারে এতটা বয়সে আমার তা একবারও মনে হল না কেন?
প্রত্যেক মেয়ে ই তো ভালোবাসতে চায়, ভালোবাসা পেতে চায়; একজন ভালোবাসার স্বামী থাক, তার শারীরিক মানসিক সকল কিছুর সঙ্গী হয়ে, নিতান্তই নিজের কেউ, এ চাওয়া তো সকল মেয়েরই থাকে, তাহলে মায়ের থাকবে না কেন? মা আগে তো রক্ত-মাংসের একজন মানুষ, তার পরে আমার মা।
মায়ের বিয়ের পর পরই আমার জন্ম হয়, বাবা আমার মাকে পছন্দ করত না; আমি তার ক্ষণিকের বিভ্রান্তির ফসল; তাই সে আমার মুখটাও কখনো ভাল করে দেখে নি। আমার যখন মাত্র তিন মাস বয়স, তখন বাবা, আমাকে সহ মাকে নানা বাড়িতে ফেলে রেখে চলে যায়, আরেকটা বিয়ে করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখে সংসার করছে।
আর মা শুধু আমাকে নিয়ে এই বাইশটা বছর। অল্প শিক্ষিত মা আমার ছোট্ট একটা চাকরি করে, নিজের দিকে একবারও না তাকিয়ে, আমার সকল চাহিদা পূরণ করে গেছে। কি নিদারুণ কষ্ট করতে হয়েছে মার, আগে কখনও তা এভাবে ভাবনায় আসে নি কেন?।
তারুণ্যের, যৌবনের সর্বগ্রাসী উদ্দাম সময় টা মা একা পার করেছে; তখন মৌ মৌ ফাগুনে, রিম ঝিম বৃষ্টির শব্দে, উদাস করা দুপুরে কিংবা রক্ত রাঙ্গা সাঁঝ বেলাতে অথবা নিঝুম রাতের নিরালায় মার শরীরে, মনে ভাঙ্গন খেলা করত কি? নিতান্তই আপন, নিতান্তই নিজের কেউ একজনের সান্নিধ্য পেতে ইচ্ছে করত কি? ইচ্ছে করত কি কারো ভালোবাসার মধুর ছোঁয়ায় লজ্জা রাঙ্গা হতে?
এসব ইচ্ছে তো মানবীর মানবীয় বৈশিষ্ট্য; মায়ের সে ইচ্ছে কখনও পূর্ণ হয় নাই। আচ্ছা যে ইচ্ছে পূরণ হয় না, সে ইচ্ছে কি মরে যায়? তা কি করে হবে? মনে হয় মরে না; মনের কোনে কোথাও শুকনো বীজের মত রয়ে যায়। পরিবেশ পেলে তা অঙ্কুরিত হয়, পাতা মেলে শাখায় ফুলে বিস্তার লাভ করে।
আমার বাবা-মায়ের মধ্যে যদি আর পাঁচটা স্বামী-স্ত্রীর মত স্বাভাবিক সম্পর্ক থাকত, ভালোবাসা বাসি থাকত, তাহলে এখন বয়স হয়েছে বলে কি সে ভালোবাসা, সে সম্পর্ক চলে যেত? নাহ, যেত না।তাহলে মায়ের যদি এখন সে রকম কিছু হয়; সেটা কেন বেমানান বা অবান্তর হবে? না, আর মাথা কাজ করছে না। এখন ঘুমাই, কাল খালার কাছে গিয়ে সব খোলা-মেলা আলোচনা করব।
শেষ রাতে সোহান একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখল। দেখে ওর মা সদ্য বিবাহিতা এক তরুণী, আর ও তার বাবা। মেয়ের জামাই শহরে কাজ করার জন্য চলে গেছে, স্বামীকে বিদায় দিয়ে মেয়েটা পা ছড়িয়ে দাওয়ায় বসে আছে, তার গমন পথের দিকে উদাস দৃষ্টি মেলে। ঠিক যেন সোজনের বিরহিণী দুলি। মেয়ে জামাইয়ের ভালোবাসা দেখে বাবার চোখে-মুখে মুগ্ধতার হাসি।
মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙল সোহানের। দেখে, জানালা গলে সকাল বেলার মিষ্টি নরম রোদ্দুর এসে ওর ঘর ভরে দিয়েছে। সুন্দর, প্রফুল্ল মন নিয়ে সকাল শুরু হল।
নাস্তা করে, কাপড় পরতে পরতে বলল, মা, আমি আজ আবার একটু ছোট খালার বাড়ি যাচ্ছি। সারাদিন ওখানে থাকব। রাতে বাসায় ফিরব।
কেন রে? কাল না বেড়ায়ে আসলি, আজ আবার কি? তাও সারাদিনের জন্য?
অস্ট্রেলিয়ায় একবার গেলে আর কবে ফিরব, তার কি ঠিক আছে? তোমার বোনকে একটু জ্বালিয়ে আসি মা; না হলে মনে রাখবে কি?
আচ্ছা যা, তুই কাছে থাকলে আমার একটু ভাল লাগে এই যা, একাকীত্বই তো আমার সঙ্গী, কি আর করব।
খালাতো সোহানকে দেখে অবাক, কিরে তোকে ফোনের পর ফোন দিয়ে আনা যায় না, আর আজ নিজেই আসলি? কি সৌভাগ্য আমার! আয়, আয়, তা তোর মাকেও নিয়ে আসতি সাথে করে, বুবু কতদিন আসেনা।
মাকে আসতে বলতে মনে ছিল না, খালা আজ সারাদিন তোমার এখানে বেড়াব।
খালা খুব খুশি হলেন, ওর পছন্দের অনেক আইটেম রান্না হল, সোহান খালাতো ভাই-বোনের সাথে টি ভি দেখে, গেম খেলে অনেক আনন্দে সময় কাটাল।
দুপুরে খাবার পরে সবাই ঘুমাতে গেছে, সোহান কে বসে থাকতে দেখে খালা বললেন, কিরে তুই ঘুমোবি না?
না খালা, তুমি ঘুমোবা?
না রে, আমি দুপুরে ঘুমাই না, দুপুরে ঘুমোলে সারা বিকেল আমার গা ম্যাজ ম্যাজ করে।
তা হলে কি কর?
কি আর করব? শুয়ে বসে থাকি, বই পড়ি, কখনও লেখা-লেখি করি।
চলো, বকুল তলায় গিয়ে তোমার সাথে বসে গল্প করি।
বাড়ির উত্তর পাশে পুকুর পাড়ে আম বাগান, তার মাঝখানে একটা বকুল গাছ; ছায়া ঘেরা, ভারী সুন্দর জায়গাটা, বসার ব্যবস্থাও আছে; গ্রীষ্মের এই ক্লান্ত দুপুরে যেন শান্তির একটু আশ্রয়।
ওখানে বসে না না রকম গল্প করছে, ভবিষ্যতে কি করতে চায়, অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পেতে কি কি করতে হল, আই ই এল টি এস এ কত স্কোর করল, কিভাবে করল ইত্যাদি কথার ফাঁকে ও খালাকে প্রশ্ন করল, খালা মা কি কাউকে ভালোবাসে?
এ কেমন প্রশ্ন? আমি তো কাল তোর সাথে দুষ্টুমি করেছি, তুই তাই সিরিয়াসলি নিয়েছিস? আর এ জন্যই বুঝি তোমার আজ এই সেধে দাওয়াত খেতে আসা?
সত্যি খালা, আমি বিষয়টা নিয়ে কাল সারা রাত ভেবেছি, সিরিয়াসলি ভেবেছি। বল তো খালা, আমার মা সারা জীবনে কি পেল? একটাই তো জীবন, তাছাড়া পথের বাকিকেই আমি পথের শেষ ভাবি না। অন্যের ক্ষতি না করে,বৈধ ভাবে জীবনটাকে যতটুকু বেশি উপভোগ করা যায় সে চেষ্টা আমার মনে হয় সকলের করা উচিৎ।
দেখ আমার মা, আমার মা হয়েছে, কিছুদিন পরে হয়তো শাশুড়ি হবে, তার পরে দাদীও হবে, কিন্তু মায়ের তো বৌ হওয়া হল না খালা?
তা তুই কি এখন কি করবি? তোর মাকে বিয়ে করাবি?
করালে দোষ কি বল? আমি কিন্তু সত্যি তাই ভাবছি। তুমি পারবা না এই সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করতে?
খেপেছিস তুই? লোকে কি বলবে বল তো? ছেলে মায়ের বিয়ে করাচ্ছে! তুই আমাদের সমাজকে চিনিস না? এ কি বিদেশ পেয়েছিস?
দেখ খালা, আমরা বিদেশীদের খারাপ জিনিস গুলো ঠিকই গ্রহণ করি, কিন্তু ভাল টা করি না। কত বয়স হবে মার? চল্লিশের কাছাকাছি? নারীকুল শ্রেষ্ঠা বিবি খাদিজাও চল্লিশ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন, তাও রসুলুল্লাহ (সঃ) এর মত একজন পঁচিশ বছরের যুবক কে, আর তারা কিন্তু সুখীও ছিলেন। এর চেয়ে বড় দৃষ্টান্ত আর কিছু কি দরকার আছে? ইসলাম কি বলেছে কষ্টকে বরণ করে মহৎ হতে? নাকি বৈধভাবে যতটা সম্ভব সুখী হতে?
আর সমাজের কথা বলছ? মানুষই সমাজ তৈরি করে, সে ই প্রয়োজনে তা বদল করে। শক্ত ভাবে সমাজের সামনে দাঁড়ালে সমাজের সাঁচে তুমি না, তোমার সাঁচেই সমাজ নিজেকে বদলাবে। বিশেষ করে এটা তো কোন অন্যায় বা অবৈধ কিছু না। তাহলে কেন সমাজ কে ভয় পাওয়া?
দেখ খালা, বাস্তবে বল, সাহিত্যে বল, দেখবা অহরহ মা তার সন্তান কে নিজে না খেয়ে খাওয়াচ্ছে, সর্বস্ব ত্যাগ করে সন্তানের সুখ-সুবিধার ব্যবস্থা করছে, নিজেকে অমানবিক বঞ্চনায় রেখে। আর সন্তান সগৌরবে মায়ের গুণ কীর্তন করছে, আর তার অধিকার ভেবে মায়ের অন্তর নিংড়ানো সব কিছু অবলীলায় গ্রহণ করে যাচ্ছে। মায়ের ফিলিংসগুলো কখনও অনুভব করছে না, বা করার চেষ্টাও করছে না।
কয়টা সন্তান তার মাকে উপযুক্ত প্রতিদান দেয় বলতে পার? এমন একটা দৃষ্টান্তও তুমি দেখাতে পারবা না, যেখানে সন্তান মায়ের সুখের জন্য জীবনে বড় কোন ত্যাগ স্বীকার করেছে। এটা বদলানো দরকার খালা। আমি আমার মায়ের জীবন কে পূর্ণতা দিতে চাই।
তুমি নিজের চোখেই দেখেছ, আমার জন্য মা কি কষ্ট, কি ত্যাগ স্বীকার করেছে। তুমি কি মনে কর, আমার বাবা মাকে পছন্দ করে নি বলে আমার মাকে অন্য কোন ছেলে পছন্দ করত না? আমি না থাকলে মা এভাবে একা জীবন কাটাত? আমাকে মানুষ করাতো মার হয়েছে নাকি? তাহলে এখনও কেন সেই একাকীত্ব?
মা তো সারা জীবন আমার বাবা মা দুজনের দায়িত্ব একা পালন করেছে, আমি কেন মায়ের বাবা, ছেলে দুজনের দায়িত্ব পালন করতে পারব না? তুমি ভাল করে ভেবে দেখ খালা, আমার কথাগুলো কতটা যৌক্তিক।
দেখ বার্ধক্যেই মানুষের সঙ্গীর দরকার বেশি। যতদিন যাবে তত মায়ের থেকে আমার জগত আলাদা হতে থাকবে। নতুন নতুন কাজের প্রয়োজনে, নতুন নতুন অধ্যায়ে আমার ব্যস্ততা বাড়বে। মাকে আমি যতই ভালোবাসি, মা যে আস্তে আস্তে আরও বেশি একা হয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নাই।
মুগ্ধতা ভরা চোখে খালা এতক্ষণ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ওর কথা শুনেছে। এত ভাবিস মাকে নিয়ে? তোর প্রত্যেকটা কথার সাথে আমি এক মত। তোর খালুর সাথে রাতে কথা বলি, দেখি কিভাবে কি করা যায়। বুবুর এই প্রয়োজন গুলো আমরা কখনও না বুঝি নি রে, শুধু তোর কথা বলে বুবু আমাদের থামিয়ে দিয়েছে। তোর খালু এ নিয়ে বুবুর উপরে আগে অনেক রাগও করত।
খালা আমি যাওয়ার আগেই যদি ব্যবস্থা করা যেত, আমার খুব ভাল লাগত; নিশ্চিন্ত মনে যেতে পারতাম।
দেখি কি করা যায়। চল উঠি, সন্ধ্যা হয়ে এলো; তুরা কিছু খাবি না?
হ্যাঁ চলো।
খালার ওখান থেকে নাস্তা খেয়ে সোহান যখন রাস্তায় বের হল, আকাশে তখন পূর্ণিমা চাঁদ, বাঁধ ভাঙ্গা জ্যোৎস্নায় ছেয়ে গেছে সমস্ত চরাচর। চাঁদ যেন আলোর বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতিকে। গাছের পাতারা অন্য রকম এক মোহনীয় রূপ ধারণ করেছে। ঢাকা শহরের নিয়ন বাতি কখনও এমন স্বপ্নিল আবেশ সৃষ্টি করতে পারে না। আসলে জ্যোৎস্নার সৌন্দর্য যেন গ্রামের নিতান্তই নিজস্ব। চাঁদকে আজ ওর কাছে একটু বেশি মায়াবিনী মনে হচ্ছে।
বাড়ি ফিরে দেখে বিদ্যুৎ নাই, মা হ্যারিকেন ধরিয়েছে; হ্যারিকেনের আলোয় আলাদা একটা কমনীয়তা আছে; সবটুকু উজাড় করে দিয়েও, পর্যাপ্ত আলো ছড়াতে পারছে না, বলে যেন একটু কুণ্ঠিত, একটু ম্রিয়মাণ।
চার্জার কি হয়েছে মা? হ্যারিকেন ধরিয়েছ যে?
আর বলিস না, এক মাসের বেশি হল বিদ্যুৎ যায় না, তাই ওটায় চার্জ দিতে মনে থাকে না। ভাবছিলাম তো তেল ও নাই, কন্টেইনারের তলায় অল্প একটু পেয়েছি তাই রক্ষে; মোমবাতিও নাই।
ঘরে অনেক গরম মা, আমি চেঞ্জ করে আসি, চল বাইরে যাই, যা সুন্দর জ্যোৎস্না আজকে!
বাড়ি থেকে বের হয়ে মা ছেলে রাস্তায় এলো। মায়ের কাঁধের উপরে সোহানের হাত, মায়ের পাশে হাঁটতে গেলেই ও এমন করে। আগে মা ওর কাঁধে হাত দিয়ে হাঁটত, তার পরে যখন সোহান লম্বা হওয়ায় কাঁধটা মায়ের নাগালের বাইরে চলে গেল, তখন থেকে হাত আর কাঁধ বদলে গেল। মাকে নিয়ে রাস্তায় বের হলে, মাকে তার বাচ্চা মেয়ের মত মনে হয়।
নদীর কুল ঘেঁষা মেঠো পথ ধরে দুজন হাঁটছে, মা বলল সত্যি রে সোহান, আজকের জ্যোৎস্নাটা অনেক বেশী সুন্দর; ছেলে বেলার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, এমন জ্যোৎস্না অনেক দিন দেখি না। ছোট বেলা এমন জ্যোৎস্না রাতে আমরা ভাই-বোনেরা কেউ ঘরে থাকতাম না।
হরেক রকম খেলা করতাম,মুরগি চুরি করে পিকনিক করতাম, গাছের ফল চুরি করে খেতাম, মাঠের মধ্যে ফুঁট পুড়িরে খেতাম, ফুঁট চিনিস? কলাই, ছোলা এগুলোর ফল সহ শুকনো গাছ আগুনে পুড়ালে ফল গুলো ভাজা হয়ে যায়, ওটাই ফুঁট।আমরা আপন,চাচাতো ভাই বোন মিলে প্রায় সাত আট জন ছিলাম। নিজেদের জিনিসই চুরি করতাম, তার মধ্যে বেশী চুরি করা হত ফুফু আম্মার বাড়ি থেকে।
একবার কি হয়েছে জানিস? ফুফু আম্মার পালে বড় বড় দুটো মোরগ হয়েছিল,প্ল্যান করা হল মোরগ ধরে আমরা খাব। যে কথা সেই কাজ,রাতে মা চাচিরা ঘুমানোর সাথে সাথে আমরা হাড়ি, কড়াই দা, বটি, লাকড়ি মশলা-পাতি সব নিয়ে মাঠের মধ্যে চলে গেলাম।
ফুফু আম্মার খোপ থেকে মোরগ ধরে এনে জবাই করে রান্না করা হল, ভাত আর মাংস; রান্না শেষ হতে হতে প্রায় শেষ রাত, ঘাসের উপরে সবাই খেতে বসছি এমন সময় তোর মেঝ মামা বলল, আগে ফুফু আম্মা, ফুফা জানের জন্য খাবার দে, আমি দিয়ে আসি, তুরা শুরু করতে করতে আমি ফিরে আসব।
দাদু খাবার নিয়ে গিয়ে ফুফু আম্মাকে ডেকে বলছে; ফুফা জানের অন্য পিকনিকের খাবার নিয়ে এসেছি ফুফু আম্মা, গরম থাকতে ফুফা জানকে ডেকে খাওয়ান। ফুফাতো মহা খুশি, কি ভাল ছেলে-মেয়ে!পিকনিকের খাবারও আমাকে দিতে আসছে। তখনি দুজনে মুখ-হাত ধুয়ে খেয়ে আবার ঘুমোলেন। আমরা যখন বাড়ি ফিরে এলাম তখন সকাল হয় হয়; যার যার ঘরে গিয়ে ঘুমোলাম; সে ত ঘুম না যেন মরা, নয়টা দশটা বেজে যায়, ঘুম আর ভাঙ্গে না।
এদিকে ফুফু আম্মা সকালে রান্না-খাওয়া সেরে মুরগীর ঘর খুলে দেখেন, বড় মোরগের একটা বের হচ্ছে না; চিল্লা-পাল্লা শুরু করলেন, আমার মোরগ কি হল? আমি সন্ধ্যা বেলা দেখে দেখে একটা একটা করে উঠিয়ে, তার পর ঘর আটকিয়েছি, মোরগ অন্য বাড়িও থাকে নাই।
ফুফু আম্মার চিল্লানো শুনে ফুফা জান বেরিয়ে এসে হাসতে হাসতে বললেন, মোরগ কি হইছে এখনও বুঝলে না? রাতে খেলে কি?
ফুফু আম্মা তখন হৈ হৈ করতে করতে আমাদের বাড়ি এসে হাজির। ও ভাবী সাব ছেলে-মেয়েরা কই? মা চাচীরা বলে উঠলেন, সবগুলো পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে; এই যে সকাল থেকে ডাকছি, একটারও উঠার নাম নাই। কেন বুজি? ওদের দিয়ে কি করবেন?
কি করে উঠবে? সারা রাত কি করেছে জান? পিকনিক করেছে। শেষ রাতে যেয়ে ঘুম ভাঙ্গিয়ে আমাদেরও খাইয়ে এসেছে। সকালে ঘর খুলে দেখি আমার মোরগের একটা নাই। কেমন বুদ্ধিমান চোরেরা দেখেছো! মা, ফুফু, চাচীদের মধ্যে বেশ খানিকটা হাসা হাসি হল।
তোমাদের কেউ রাগ করল না?
রাগ করবে কি রে? তখন কি আর গ্রাম এমন ছিল? তখন সব ঘর এক ঘরের মত ছিল। আমরা তো খেয়েছিলাম ফুফু আম্মার জিনিস, পরের বাড়ির জিনিস খেলেও তখন কেউ কাউকে তেমন কিছু বলত না। আমাদের মুরগী নিয়ে অন্য বাড়ির ছেলে-মেয়েরা কত খেয়েছে। মা চাচী আম্মারা হয়তো অন্য বাড়ির জিনিস খেলে আমাদেরকে রাগ করত, কিন্তু,সেদিন রাগ করলে কি ফুফু আম্মা কাউকে আস্ত রাখত!
ফুফুরা যে বাচ্চাদের কত ভাল বাসে রে বাবু তা তুই বুঝবি না। তুই আমার যে ফুফুকে দেখিস উনি আমার সৎ ফুফু, আমার আপন একজন ফুফু ছিল, কি যে ভাল বাসত আমাদের!
ফুফুর কোন সন্তান ছিল না, তাই ফুফা জান মারা যাওয়ার পর থেকে আমাদের বাড়িতে থাকত। শেষ বয়সে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল রে, তাও সব সময় ঠিক মত সব ইবাদত করত, আর কখনও বিনা ওযুতে থাকত না। আমারে ডাকত কৈতরি বলে।
ফুফু আম্মা মরার সময় আমি বাড়ি ছিলাম না, আমাকে না দেখিয়েই কবর দেয়া হয়েছিল। সেই কষ্টটা আমি আজও ভুলতে পারি নি। আমার কি মনে হয় জানিস? পর জীবনে যদি আল্লাহ বলেন, তোমার মা আর ফুফু দুজনের মধ্যে কাকে তুমি আগে দেখতে চাও? আমি আমার ফুফুর কথাই বলব। মায়ের কন্ঠ ভিজে উঠল, মা যেন হারিয়ে গেল তার ছেলে বেলায়।
সোহান বলল, মা, এস, এই গাছের নীচে একটু বসি, আমরা কথায় কথায় কতদূর চলে এসেছি খেয়াল করেছ?
তাইতো রে অনেক দূর চলে এসেছি তো। আয় তবে এখানে একটু বসে তার পরে ঘরে ফিরি। মায়ের পাশে বসতে বসতে সোহান বলল, বাইরে গিয়ে তোমায় আমি খুব মিস করব মা, খুব, আই লাভ ইউ সো মাস।
কতক্ষণ দুজনেই চুপ করে বসে থাকল। মা বলল, হ্যাঁরে সোহান তোর কাউকে পছন্দ আছে নাকি? তুই দেশে ফিরলে আর তোর বিয়ে দিতে দেরি করব না।
না, মা, আমার কেউ পছন্দের নাই, আমি অনেক আগে থেকে ভেবে রেখেছি, তুমি দেখে শুনে জেনে বুঝে যাকে ঠিক করবা, আমি তাকেই বিয়ে করব, তাই কারো দিকে ভাল লাগার চোখ নিয়েই আমি তাকাই নি মা। তোমার সাথে যদি অ্যাড জাস্ট না হয় বেহেশতের হুর নিয়েও আমার সুখ হবে না। তাই ও দায়িত্বটা তোমার।
আমার বৌ এর কাছ থেকে তুমি যদি কোনদিন কষ্ট পাও মা, আমি কিছুতেই তা সইতে পারব না। আর কষ্ট পেলে, তুমি তা আমার কাছ থেকে আড়ালও করতে পারবা না। মাগো, তুমি যেমন আমার মুখ দেখে আমার মন পড়তে পার, আমিও তেমনি পারি। যে কষ্ট তুমি পেয়েছ, তাতে আমার কিছু করার ছিল না। আর কোন কষ্ট আমি তোমায় পেতে দেবই না, বরং তোমার সকল ক্ষতি আমি পূরণ করে দেব, তুমি দেখ।
আল্লাহ তোর আশা পূরণ করুক বাবা। মানুষ চাইলেই কিছু করতে পারে না রে, যদি না আল্লাহর রহমত থাকে। চল এবার ফিরি।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে এগারটা বেজে গেল। মা, ছেলে তাড়াতাড়ি ওযু করে নামাজ পড়ে নিলো, খাওয়ার পরে মা সোহানের, ঝাড়া বিছানাটা আর একবার ঝেড়ে মশারী টানিয়ে দিয়ে শুতে গেল।
বিছানায় শুয়ে শুয়ে এপাশ ওপাশ করছে সোহান, ঘুম আসছে না কিছুতেই। মায়ের বিয়ের ব্যাপারে সে ডিসাইডেড, কিন্তু সেই মানুষটা কাকে পাবে, কেমন করে পাবে এটাই ভেবে পাচ্ছে না সে। আর কিছু দরকার নাই শুধু একজন ভাল মানুষ,মায়ের একজন ভাল সঙ্গী; আয় উপার্জন না থাকলেও চলবে, মায়ের যা আছে তাই যথেষ্ট। একটাই বড় দরকার,আমাকে মানুষটার আপন করে নেয়া, কারণ, আমার থেকে বিচ্ছিন্ন করে মাকে যদি কেউ বেহেশতেও নিয়ে রাখে, তাতেও মার সুখ হবে না।
হঠাৎ বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ল সোহান, প্রার্থনা, হ্যাঁ প্রার্থনা করবে সে, এক মাত্র আল্লাহই পারেন তাকে উপযুক্ত সাহায্য করতে; মা তো তার সকল সমস্যায় তাই করেছে।
রাত তখন তিনটা বাজে, ওযু করে এসে জায়নামাজ বিছালো সোহান, একাগ্র চিত্তে নামাজ পড়ছে আর দোয়া করছে আল্লাহর কাছে। বলছে, হে আল্লাহ, সমস্ত কিছু আপনার এখতেয়ার ভুক্ত, আপনার ইচ্ছে ছাড়া দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিধরের পক্ষেও কিছু করা সম্ভব না, আমার মায়ের সকল কষ্টের আপনি সাক্ষী, আপনি জানেন কিসে তার শান্তি, আমি কি চাইছি তাও আপনি জানেন।
আপনি আমার মায়ের জন্য এমন একজন মানুষকে জোগাড় করে দেন যে, আমার মায়ের দীন দুনিয়া দো জাহানের শান্তির সঙ্গী হবে। আমার মায়ের সকল ক্ষতি আপনি পূরণ করে দেন আল্লাহ।
হে আল্লাহ, আমি যদি অপরাধী হই, আমার অপরাধ আপনি ক্ষমা করেন, আমি সন্তান হয়ে আমার মায়ের সুখের জন্য আপনার দরবারে হাত পেতেছি আল্লাহ, সে হাত আপনি ফিরায়ে দেন না, হে রহমানুর রহিম, মায়ের জন্য সন্তানের এই প্রচেষ্টা আপনি কবুল করেন, সফল করেন, সার্থক করেন, আপনি আমার দোয়া কবুল করেন, আমীন।
এভাবেই চলল বাকী রাত, ফজরের আজান হলে নামাজ পড়ে, প্রশান্ত মন নিয়ে সোহান ঘুমোল। ঘুম ভাঙল ছোট খালার ফোনে; দেখে দশটা বাজে।
কি খবর খালা?
দারুণ খবর আছে সোহান, তুই একবার বাসায় আয়। তোর খালুর সাথে আমি কথা বলেছি, সে তোর কথায় খুব খুশি হয়েছে, আর একটা সুন্দর প্রস্তাব দিয়েছে। তুই তাড়াতাড়ি চলে আয়।
আচ্ছা খালা, তুমি রাখ, আমি ফ্রেশ হয়ে, খেয়েই আসছি, রাতে ঘুম হয় নাই, সকালে ঘুমিয়ে ছিলাম, এই তোমার ফোনে ঘুম ভাঙ্গল।
আচ্ছা, রাখলাম, তুই আয়।
বাসায় যাওয়ার পর খালা বলল, সোহান, আমার ভাসুর, তোর কানন মামাকে তোর কেমন লাগে রে?
কেন খালা? কানন মামা তো খুব ভাল মানুষ,আমি মামাকে খুব শ্রদ্ধা করি, মামাও আমাকে অনেক স্নেহ করেন।
উনার সাথে বুবুর বিয়ে দিলে কেমন হয়?
মন্দ হয় না খালা, মামি তো মারা গেছেন বছর দুই হল, উনাদের কোন ছেলে মেয়েও নাই, তাই না?
হ্যাঁ, তুই এবার এসে বাজারে গেছিস? ব্যবসাও অনেক বাড়িয়েছে। আমার জা মারা যাওয়ার পর থেকে, তোর খালু কয়েকবার বলেছে বিয়ে করার কথা, রাজী হন নাই, বুবুর কথায় নিশ্চয় অমত করবেন না। ভাইজান বুবুকে আগে থেকেই অনেক পছন্দ করে, বুবুকে নাকি উনার বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু বুবুর যখন বিয়ে হয় তখন কেবল ছাত্র, তাই ও কথা আর প্রকাশ করে নি, আমি তোর খালুর কাছে শুনেছি।
আসলে ভাইজানও অনেকটা বুবুর মতই অসুখী রে, বিয়ে করেছিলেন বটে কিন্তু, আমার জায়ের সাথে তার মনের মিল ছিল না। আমার মনে হয়, ওদের দুজনকে মিলিয়ে দিতে পারে চমৎকার জুটি হবে। তুই কি বলিস?
আমি তোমার সাথে একমত খালা,তুমি খালুকে বল ব্যবস্থা করতে।
সোহান খুশি ভরা মনে বাড়ি ফিরে এলো। দুই দিন পরে ওর খালা-খালু দুজনে এলো ওদের বাড়িতে। কানন সাহেব সহজেই রাজী হয়েছেন, কিন্তু, সোহানের মা একেবারেই বেঁকে বসল। ওরা ও ছাড়বার না পাত্র-পাত্রী না, সকল যুক্তিতেই সোহানের মা হেরে গেল, কারণ তার একমাত্র জোরালো যুক্তি ছিল সোহানের ভবিষ্যৎ, সেটাও এখন খাটছে না। আর হেরে গিয়ে খুব রাগ করল; ওরা সেদিনের মত আর কথা বাড়াল না।
কয়দিন সোহানের মাকে ভাবার সুযোগ দিল, তারপর থেকে আবার শুরু হল বুঝানো, কখনও একাকী, কখনও সম্মিলিতভাবে; অবশেষে বরফ গলল। সোহানের যাওয়ার সময়ের তখন মাত্র চার দিন বাকি।
সোহানের মামারা এবং বড় খালা এলো, তারা সবাই প্রচণ্ড খুশি, কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া শুধু দুই বাড়ির লোক জনের উপস্থিতিতে কাজী ডেকে এনে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হল। সন্ধ্যায় ছোট খালারা বর-বৌকে নিয়ে ওদের বাড়ি চলে গেল।
পরদিন সকালে সোহানের মা এ বাড়িতে ফিরে এলো, একা, কানন সাহেবকে এ কয়দিন আর দেখা গেল না, সোহানের যাওয়ার সময় শুধু এসেছিলেন, তাও অল্প কিছুক্ষণের জন্য। সোহান খেয়াল করল তার মাকে আগের চেয়ে অনেক সুন্দর আর প্রফুল্ল লাগছে। মুশল ধারায় এক পশলা বৃষ্টির পরে সবুজ ধানের গাছ যেমন লাগে, ঠিক যেন তেমনি সতেজ আর প্রাণবন্ত। সোহান কে সি অফ করার জন্য ওর মা ঢাকা পর্যন্ত গেল ওর সাথে।
পথে কয়েক মিনিট পর পর মায়ের ফোনে কল আসতে লাগল, মা শুধু হম, হ্যাঁ করে উত্তর দিচ্ছে, পাশে সোহান বসা, আকর্ণ লাল হয়ে যাচ্ছে লজ্জায়; শেষ পর্যন্ত ফোন টা বন্ধ ই করে রাখল।

যাওয়ার দিন সোহানের ফ্লাইট ছিল সকাল এগার টায়, ওরা আটটায় ই এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেল, সোহানের কয়েকজন বন্ধু এলো ওকে সি অফ করতে, একটু পরে সেখানে কানন সাহেব এসে হাজির,
সোহানের হাতের মধ্যে একটা খাম গুঁজে দিয়ে বললেন, এতে কিছু ডলার আছে বাবা,নতুন জায়গায় যাচ্ছ। তোমার মা আমাকে আসতে নিষেধ করেছিল, কিন্তু পারলাম না, সে একা ফিরবে, তাছাড়া যাবার বেলা তোমাকে একবার দেখব না, তা কি হয়? তাই রাতের গাড়িতে চলে এলাম।
সোহান কানন সাহেব কে ওর বাবা বলে বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। ভিতরে ঢুকার আগে সোহান ওর মাকে সালাম করল, মামাকে সালাম করল, বলল; আসি মা, আসি বাবা, তোমরা ভাল থেক, আমার জন্য চিন্তা করোনা, আমি পৌঁছেই তোমাদের সাথে যোগাযোগ করব।
কানন সাহেব সোহানকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলেন। বাবা ডাক শোনা, তাঁর জীবনে এই প্রথম, আর সোহানেরও এই প্রথম কাউকে বাবা বলে ডাকা। সোহান বলল, এবার ছাড় বাবা, আমি আসি। দুজনের চোখে তখন শ্রাবণের বারিধারা, বিদায়ের বেদনায় নাকি পাওয়ার আনন্দে জানি না।

*দীর্ঘ লেখাটা কষ্ট করে যদি পড়লেনই আরেকটু কষ্ট করেন প্লীজ, একটা কমেন্ট করে যান। উৎসাহ দিতে না পারেন,চাইনা, সমালোচনা তো করেন; তাতে আমি উপকৃত হব।*




সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৫০
১৩টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×