somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুদ্ধিজীবী নিধনে মেতে উঠে রাজাকার আলবদর !!!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঙালি জাতির স্বাধীনতা লাভের পরম মুহূর্ত যতই এগিয়ে আসছিল দীর্ঘ ৯ মাসের বন্দী জীবনের আশু অবসান ততটাই এ দেশের মুক্তিকামি মানুষের ব্যাকুলতাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। পাকবাহিনীর পরাজয় এরই মধ্যে সুনির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ঢাকার চারদিক থেকে এগিয়ে আসছিল মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী। একাত্তরের এই দিন যশোরের কেশবপুর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, বগুড়ার শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা মুক্ত হয়। এদিকে পাকিস্তানিদের দোসর আলবদর, রাজাকাররা মেতে উঠেছিল বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিধন করতে। যার চরম পর্যায়ে এদিন তারা অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে নৃৃশংসভাবে হত্যা করে। এদের কারও কারও পরিচয় পাওয়া গেলেও আজও অনেকেরই পরিচয় পাওয়া যায়নি। স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও সে সময় হারিয়ে যাওয়া বুদ্ধিজীবীদের নামের তালিকা প্রকাশিত হয়নি, যা বাঙালি জাতির জন্য অতি লজ্জার। একাত্তরের এই দিনে ঢাকার খিলগাঁও-বাসাবো এলাকার কাছাকাছি চলে এসেছিল মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা।
এদিকে সাভার পেরিয়ে ঢাকার বেশ কাছাকাছি এগিয়ে এসেছিল মিত্রবাহিনী। কিন্তু তখনও চুপ করে বসেছিলেন জেনারেল নিয়াজি, বাকি সবার হৃদকম্প বেড়ে গেছে। ১৩ ডিসেম্বর রাত থেকে ১৪ ডিসেম্বর ভোর পর্যন্ত পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে মিত্রবাহিনীর কামান অবিরাম গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছিল। বোমাগুলো গিয়ে পড়ল বেশিরভাগই ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে। গভর্নর মালিক সেদিন সকালেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য গভর্নর হাউসে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকলেন। এ বৈঠকে বসার ব্যাপারে জেনারেল রাও ফরমান আলী ও চিফ সেক্রেটারি মুজাফফর হোসেনের হাত ছিল। তারা তখন মনে করেছেন আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কোন গতি নেই। বৈঠক চলাকালে গভর্নর হাউসের ওপর ভারতীয় বিমান রকেট ছুড়ল। এ অবস্থায় ঢাকায় জেনারেল নিয়াজির আর কোথাও থেকে কোন আশ্বাস বাণী ছিল না। ফলে তিনি আত্মসমর্পণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেলকে অনুরোধ জানাতে নিয়াজি মার্কিন দূতাবাসে যান। কনসাল জেনারেল তার এ প্রস্তাবে রাজি হননি। তবে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধানের কাছে জেনারেল নিয়াজির আত্মসমর্পণের বার্তা পেঁৗছে দিতে রাজি হন। ওই প্রস্তাবে নিয়াজি জেনারেল মানেকশকে আত্মসমর্পণের আয়োজন করার এবং ঢাকার উদ্দেশে একটি অগ্রবর্তী যোগাযোগ বাহিনী পাঠানোর জন্য তাকে অনুরোধ করেন। নিয়াজির অনুরোধক্রমে ১৪ ডিসেম্বর থেকে ঢাকায় গোলাবর্ষণ বন্ধ রাখা হয়।
বিদেশিরা নিরপেক্ষ এলাকা বলে ঘোষিত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (বর্তমানে রূপসী বাংলা হোটেল) আশ্রয় নেয়। অন্যদিকে জাতিসংঘ দুই পরাশক্তি ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কালক্ষেপণের পথ ধরে। পাকিস্তানের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষে বাস্তব পদক্ষেপ নেয়ার কোন ইচ্ছা যেমন ছিল না, তেমনি সোভিয়েত ইউনিয়নও চাচ্ছিল যুদ্ধবিরতি বিলম্বিত হোক। যাতে এর মধ্যে ভারতীয় বাহিনী পূূর্ব পাকিস্তানে বিজয় অর্জন করতে পারে। এদিকে একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর আজকের এদিনে পরাজয়ের আগ মুহূর্তেও নৃশংসতার নতুন অধ্যায় শুরু করেছিল পাকিস্তানি দোসররা। এক অন্যায় ও অযৌক্তিক আক্রোশে মেতে ওঠে তারা। শুরু করে বুদ্ধিজীবী হত্যা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×