somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেক্স ও রাজনীতি

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেক্স সব দেশেই একটা গোপনীয় বিষয়। আমাদের দেশে এটা এতটাই গোপনীয় যে নিজেদের বাসাবাড়িতে এ বিষয়ে কোন আলোচনা হয় না এবং এ বিষয়ে পরিবারের বড়দের কাছ থেকে কিছু শিখারও সুযোগ নেই। রাজনীতি জিনিশটাও সেক্স এর মতই একটা বিষয় হয়ে গেছে যে বিষয়ে পরিবারের কারো কাছ থেকে নিরপেক্ষ কোন শিক্ষা আমরা কখনই পাই না। ছেলে মেয়েরা বড় হয়ে যখন স্বাভাবিক ভাবে সেক্স এর সংস্পর্শে আসে, তারা ভুল করে, এবং সে ভুলের মাশুল প্রায়শই পুরো পরিবারকেই বহন করতে হয়। পরিবার যেহেতু সমাজের ভিত্তি তাই পুরো সমাজকেই প্রকারান্তে সেক্স বিষয়ক এসব ভুলের খেসারত দিতে হয়। রাজনীতিও তাই, এ বিষয়ে সম্যক জ্ঞানের অভাবে রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট ছেলে মেয়েদের নীতিবোধ যখন গড়ে না ওঠে, তখন তারা ভুল পথে পা বাড়ায়, যার দায়ে পুরো জাতি পিছিয়ে পড়ে।
সবকিছুরই কিছু নীতিমালা আছে। সেক্স বা রাজনীতিও এর উর্ধে নয়। এসব বিষয়ে অনেক কিছু আছে যা আমাদের তরুণদের জেনে রাখা প্রয়োজন। আমার লিখার বিষয় যেহেতু এ দুটি বিষয়ে আমাদের পারিবারিক আলোচনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে, আলোচনার সকল বিষয়ের বর্ণনা করা নয়, সংক্ষিপ্ত উদাহরনের মাধ্যমে আমি চেষ্টা করব আমার বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে, বিবেচনার ভার সম্মানিত পাঠকের।
আমার পরিচিত একটি ছেলে ও মেয়ের উদাহরন দেওয়া যেতে পারে সেক্স সম্বন্ধে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে।
এখানে ছেলেটি রাজধানীতে বেড়ে ওঠা সুশিক্ষা প্রাপ্ত একটি প্রতিশ্রুতিবান ছেলে, যার কাছে পরিবার ও সমাজ ব্যক্তিগত উন্নয়নের ভাগিদারিত্ব আশা করতে পারে। ছেলেটি প্রেমে পড়ে একটি প্রতিভাবান মেয়ের, যে অনায়াসে চিন্তাভাবনায় সমাজের অগ্রগামী মেয়েদের উদাহরণ হতে পারে এবং সে তার যোগ্যতার স্বাক্ষর ইতিমধ্যে রেখেছে। এরা বিয়ে করে জুটি বাঁধে এবং পারিবারিক কারনে বিষয়টি কিছুদিন গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সমাজের বহু অংশে এই জুটির সাবলীল ভূমিকা থাকলেও সেক্স বিষয়ে এদের জ্ঞান বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার মত পর্যাপ্ত ছিলনা, এরা বিয়ের পড়ে যখন মেলামেশা শুরু করে একপর্যায়ে মেয়েটি সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়ে। কিন্তু এই তরুন জুটি এখনও সন্তান লালন পালনের মত একটি গুরু দায়িত্ব নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেনি এবং এ জন্য তারা প্রস্তুতও ছিল না কোন ভাবেই। স্বভাবতই তারা মেয়েটির গর্ভপাত ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং গোপনীয় বিষয় হিসেবে দায়িত্বশীল কোন আত্মীয় বা বন্ধুর পরামর্শ নিতেও তারা কুণ্ঠিত বোধ করে। এক পর্যায়ে নিতান্ত পরিচিত একজনের মাধ্যমে রাজধানীর কোন একটি প্রতিষ্ঠানে মেয়েটির গর্ভপাত করায় তারা।
এবার দুজনেই সাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং সাবধান হয়। পরিস্থিতি অনুকুলে এলে তারা নিজ নিজ পরিবারকে তাদের বিষয়টি জানায় এবং পরিবার থেকে তাদের মেনে নেয়া হয়।
সমস্যা সৃষ্টি হয় তখন যখন তারা এবার একটি সন্তানধারনের চিন্তা করে এবং দীর্ঘদিন পরেও সন্তান ধারনে অক্ষম হওয়ায় চিকিৎসক এর শরনাপন্ন হয় ও চিকিৎসক ওদের জানিয়ে দেয়
পূর্বের গর্ভপাতের ঘটনাটি সঠিক পন্থায় না হওয়ায় মেয়েটি তার সন্তান ধারন ক্ষমতা পুরোপুরি ভাবে হারিয়েছে।
পরিবারের একমাত্র সন্তান ছেলেটি হতাশায় ডুবে যায় এবং নিজ সমস্যার বেড়াজালে এমন ভাবে জড়িয়ে যায় যে পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন দূরে থাক নিজের জন্য কিছু করার ক্ষমতাও সে হারিয়ে ফেলে। এক পর্যায়ে এ জুটির সম্পর্কটিও ভেঙ্গে যায় এবং একটি ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়। সেক্স সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান ও সচেতনার অভাবে দুটি সম্ভাবনাময় জীবন পরিবার ও সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার বদলে পরিণত হয় পরিবার ও সমাজের বোঝায়, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে।

একিভাবে সম্ভাবনাময় একজন তরুণও উপযুক্ত রাজনৈতিক আদর্শ ও নীতির অভাবে সহজেই পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে পারে, বর্তমান রাজনৈতিক অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে রাজনীতিতে অতি প্রয়োজনীয় তরুণদের ভূমিকা পর্যবসিত হতে পারে দেশকে পেছনে ঠেলে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে।
এমন উদাহরনের তো কোন অভাব নেই আমাদের চারপাশে। একটি দেশের উন্নয়নের হাতিয়ার হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো যখন কিছু নীতিমালা এরা সহমতের ভিত্তিতে, আদর্শ ও মান বজায় রেখে নির্ধারন করে এবং সেগুলোকে সম্মান করে মেনে চলে। যেমন সহিংসতা বর্জন ও পরমত সহিষ্ণুতা সকল রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক নীতি হওয়া বাঞ্ছনীয় এমনকি বাধ্যতামূলক হওয়া প্রয়োজন। যখন রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা এ নীতি ধারন বাহন করবে তখন আত্মঘাতী কোন ঘটনা
ঘটার সুযোগ থাকবে না, মেধাবীরা নির্ভয়ে তাদের রাজনৈতিক চিন্তা ও চেতনা দেশের উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারবে। আজকে আমাদের সুশিক্ষিত জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাকে কি চোখে দেখে আমরা সবাই তা জানি কিন্তু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যেহেতু আত্মত্যাগের অপর নাম, তাদের মর্যাদা হওয়া উচিৎ ছিল সাধারনেরও ওপরে।

ভিনদেশীদের দুঃশাসন দীর্ঘদিন আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনকে করেছে অস্থির ও কলুষিত, এখনও আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভিনদেশীদের আগ্রহ ও হস্তক্ষেপ হয়ে থাকে প্রকাশ্যে। মানুষ যেহেতু সামাজিক প্রাণী, ভিনদেশীদের সাথে আমাদের সম্পর্ক রাখতেই হবে, কিন্তু সযত্নে দেশপ্রেমের সাথে তাদেরকে ব্যবহার করতে হবে আমাদের জাতীয় উন্নয়নে। অথচ স্বাধীনতা প্রাপ্তির বহুদিন পরেও আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত ও লাঞ্ছিত হয় বিদেশি প্ররোচনায়, বৈদেশিক নীতি আজকে স্থাপিত আমাদের রাজনীতিতে, এ অবস্থাকে অনুধাবন ও বর্জন করার এখনি সময়।

প্রতিটি পরিবারে যখন আদর্শ রাজনৈতিক মানদণ্ড কি হওয়া উচিৎ এ নিয়ে আলোচনা হবে, বিতর্ক হবে, রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য যে অর্থনৈতিক মুক্তি ও সুব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এবং এটির সম্ভাব্য উপায় কল্পিত ও চর্চিত হবে তখনই এমন একটি প্রজন্ম তৈরি হবে যারা যে কোন এবং যে কারও আত্মঘাতী রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে বর্জন করবে নিজ দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রেখে, এবং তখনই যে কোন রাজনৈতিক দলের একেকটি কর্মী হয়ে উঠবেন দেশ গড়ার আদর্শ কারিগর, দেশের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র সৈনিক, তাদের সম্মান ও দোয়া করবেন দেশের আপামর জনতা।
আসুন আমরা আমাদের ছোটদের সেক্স ও রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলি, প্রয়োজনে নিজেরাও অধ্যয়ন করি এ বিষয়গুলো।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৩:০০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×