somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবেকের ক্রন্দন! বিবেকের ক্রন্দন! বিবেকের ক্রন্দন!

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আমি বাংলাদেশী। আমি নিজেকে বিবেকবান বলে দাবী করি, কিন্তু আমার বিবেক শুধু ক্রন্দনেই রত। সে শুধু কাদতেই জানে।


তার দায়িত্ববোধ বোধ হয় এতটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। শুধুই আমি কি? আজকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষেরই বোধ হয় এ অবস্থা। শুধুমাত্র কিছু অন্ধ, বধির ছাড়া। আল্লাহ তাআলা সূরায়ে আল বাকারায় যাদের সম্বন্ধে বলেছেন-“তাদেরকে সিল মেরে দেয়া হয়েছে” তার সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া দুইটা ঘটনা কোনক্রমেই মাথা থেকে ঝেরে ফেলতে পারছি না। প্রথমটা অবরোধের দিনে বিশ্বজিৎকে হত্যা ছাত্রলীগের কিছু নামসর্বস্ব ছাত্রনেতার দ্বারা। ছাত্র শব্দটা ব্যবহারে আমি সবাইকে সচেতন হবার আহ্বান জানাচ্ছি। কারন আমি নিজেও একজন ছাত্র। যদিও রাজনীতি নিয়েই আমার পড়াশুনা। ছাত্র যদি বলা হয় এই সমস্ত ছাত্র নামধারী কুকুরদের, তবে বোধ করি নিজেকে ছাত্র পরিচয় দিতে ঘৃণা বোধ করি। বিশ্বজিৎ হত্যার ভিডিওটা দেখে আতঙ্কে গুমড়ে উঠি। এ কোন রাজনীতি? এই কোন দেশে বাস করি আমি? আজ কোথায় মানবতা? প্রকাশ্য দিবালোকে একটা মানুষকে অন্য একটা মানুষ কিভাবে এত নির্মমভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়।


ধিক্কার জানাই এদেশের রাজনীতিকে, ধিক্কার জানাই রাজনিতীবিদদেরকে, ধিক জানাই মানবাধিকারকে। এই দেশে একটা মানবাধিকার কমিশন আছে। সেই কমিশনে একজন চেয়ারম্যান আছে। তিনিও শুধু কাদতেই জানে। তিনি কোথাও কোন মানবাধিকারের লঙ্গন দেখলে দুই ফোটা চোখের জল ফেলে দায়িত্ব সারতে চান। আমি রাজনীতিবিজ্ঞানের একজন ছাত্র হিসেবে একটা কথা বলতে চাই, অবশ্য প্রায়শই বলে থাকি। বাংলাদেশের সংবিধানটা আমার পুরোপুরি পড়া। বাংলাদেশের সংবিধান প্রনেতারা কত শ্রুতিমধুর, কাব্যিক, কেতাবি অনুচ্ছেদ এই সংবিধানখানায় লিপিবিদ্ধ করিয়াছেন, তাহা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। কিন্তু যখন বাস্তবটার সাথে মিলাতে যাই তখন আমার মন হইতে শুধু একটি কথাই বের হয়-“ বাংলাদেশ সংবিধান তোমাকে আমি টয়লেটে স্থান দিতে চাই। ইয়ে মানে তোমাকে টয়লেট পেপার হিসেবে ব্যবহার করিতে চাই”।
আমার এই লেখা সরকারপক্ষীয় কেউ যদি পড়িয়া থাকেন, তাহা হইলে তিনি বোধ হয় এতক্ষনে মনে মনে একখানা মামলা করিবার জন্য প্রস্তুতি শুরু করিয়া দিয়াছেন বৈকি।
“ রাষ্ট্রবিরোধী শকুন! তোকে রাষ্ট্র টাকা-পয়সা দিয়ে পড়িয়েছে এই জন্য? নিমকহারাম!!!!!!!!!!!!”
সে যা হবার হোক। করিনা তার পরোয়া। কিন্তু বিশ্বজিৎের হত্যাকারীদের যে রাষ্ট্র পালন-পোষণ করে, সেই রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে অস্বিকার না করে পারিনা। বিশ্বজিতের হত্যাকারীরা আজ প্রকাশ্যে দম্ভের সহিত ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমাদের মত কিছু লোকজন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তাদের নামসহ ছবি দেখে ভয়ে কুঁকড়ে উঠছি। ঘৃণা, ক্ষোভে রাতের ঘুম হারাম হয়। ব্লগে ঘ্যানর ঘ্যানর করছি। যদিও এটা আমার প্রথম লেখা ব্লগে। জানিনা ব্লগের নিয়ম-কানুন মেনে লেখা হয়েছে কিনা?
বিশ্বজিতের হত্যাকারীদের বলতে চাই- “ হ্যালো জাতীয় আফা ওহে জাতীয় ম্যাড্যাম। আর কত? আজকে বিশ্বজিৎ, কালকে সুরঞ্জিত, পরশু রহিম, তার পরের দিন আমি এর পরে আর একজন। আর কত লাশ চাই আপনাদের। একটা জিনিস মাঝে মধ্যে আমাকে খুব ভাবায়, বাংলাদেশে সক্রিয় রাজনীতি করে এমন লোকের সংখ্যা কত হবে? আর এ লোকগুলির হাতে জিম্মি লোকের সংখ্যা কত? এটা শুধুমাত্র সংখ্যাগত একটা ধারনা মাত্র। কিন্তু ফেসবুকে ও কালের কণ্ঠ পত্রিকায় তাদের নামসহ ছবিটা দেখে নিজেকে আর সামাল দিতে পারলাম না। বেসামাল আমি এ নির্বোধ! বাংলাদেশের জনগণ যে মধ্যযুগীয় পরিবেশে বাস করে বিশ্বজিৎ হত্যা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বটে। এমন ঘটনা বাংলাদেশে এই যে প্রথম তা নয়। এই দেশে থেকে আমাকে দেখতে হয়েছে বাসে পুড়ে মানুষ মরার দৃশ্য। আমার নাকে এসেছে তাজরিন গার্মেন্টসে আগুনে পোড়া দরিদ্র মানুষের মাংসের গন্ধ। এই দেশ এতই ঘটনাময় যে এক ঘটনার অন্তরালে চাপা পড়ে অন্য ঘটনা। কয়েকদিন বাদে এই ঘটনাও চাপা পড়বে অন্য কোন ঘটনায়। কিন্তু আমার প্রশ্ন এর শেষ কোথায়? কোথায় যাচ্ছি আমরা? বাংলাদেশ কি ক্রমান্বয়ে সোমালিয়া বা সুদানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এইবার দ্বিতীয় ঘটনার দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি।গতকালকেও অন্য দশটা দিনের মত চৈতালি ( ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী আনা-নেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়) বাসে করে ক্যাম্পাসএর উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। ড্রাইভার একটু জ্যাম দেখেই বাসটা দিল রং সাইডে ঢুকিয়ে। পরক্ষনেই ঘটে গেল একটা দুর্ঘটনা। একজন মোটর সাইকেল আরোহী বিপরীত দিক থেকে একটা গাড়িকে পাশ কাটিয়ে যেই জোরে একটা টান দিল, ওমনি আমাদের বাসের সাথে এসে মুখোমুখি সংঘর্ষ। লোকটা মারাই যেত। যদি আমাদের গাড়িটা না থামিয়ে দিত। এখন প্রশ্ন হল রং সাইডে না ঢুকলে তো এই বিপত্তি হত না। বাংলাদেশের মত দেশে ড্রাইভারদের সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই আরও যদি হয় সে সরকারী ড্রাইভার। এই ড্রাইভারদের আবার এহেন কর্ম করতে উৎসাহ যোগায় এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু নামসর্বস্ব কিছু ছাত্র।
কোথায় আছি আমরা? হে ব্লগারগন আপনাদের দায়িত্ব কি শুধু লেখনীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ? এই দেশে আজ মানবতা পদদলিত। বিশ্বজিতের মৃত্যুই বলে দেয়-“ ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ নতুবা মৃত্যু” কিন্তু সেদিন কি আর আসবে এই দেশে। বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছে যে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ ছাড়া এই অস্বাভাবিক মৃত্যু থেকে বাচার আর কোন উপায় নেই।
আসেন তাই আমরা সবাই বিশ্বজিতের মত মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকি। সেকি জানত যে সে ওখানে গিয়ে মারা যাবে? জীবনে প্রথম লিখলাম ব্লগে সকলের মন্তব্য কামনা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×