somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াতি-বিহারি প্রত্যাবাসন চেয়েছে পাকিস্তান---

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মিজানুর রহমান খান, ওয়াশিংটন ডিসি থেকে |

তারিখ: ১০-১২-২০১২



মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রজার্স ছিলেন আকাশে। একাত্তরের এই দিনে (১০ ডিসেম্বর) সেখানেই তাঁকে বার্তা দেওয়া হলো। বার্তাটি হলো: ‘আত্মসমর্পণ নয়, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পূর্ব পাকিস্তানে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে জাতিসংঘের কাছে প্রস্তাব রেখেছেন।’ একাত্তরের এই দিনে যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে পাকিস্তানি প্রস্তাব নিয়ে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে অনেক দৌড়ঝাঁপ চলে। তবে অবমুক্ত করা মার্কিন দলিল নিশ্চিত করছে যে, জেনারেল রাও ফরমান আলী যুদ্ধবিরতির প্রথম প্রস্তাবে ‘পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের’ কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের লিখিত প্রস্তাব জাতিসংঘকে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই ঘণ্টার ব্যবধানে তা প্রত্যাহার করে গভর্নর মালিকের নামে যুদ্ধবিরতির আরেকটি নতুন প্রস্তাব জাতিসংঘের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু দুটি বার্তাই অস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থবোধক ছিল। তাই এ নিয়ে পাকিস্তানের প্রকৃত মনোভাব বুঝতে মার্কিন কূটনীতিকদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। তবে বিহারি শুধু নয়, এখন দেখা যাচ্ছে, ইয়াহিয়া লিখিতভাবে পশ্চিম পাকিস্তানে যারাই যাবে, তাদের নিয়ে যেতে নিরাপত্তা পরিষদকে লিখিত চুক্তি করতে বলেছিলেন। তাঁর মনে রাজাকার ও আলবদরদের মতো দোসরদের প্রত্যাবাসন নিশ্চয়ই ছিল।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ফারল্যান্ডকে বলেছে, ‘আপনি ঢাকার ৫৫৭৩ বার্তাটি দেখে থাকবেন। ইয়াহিয়ার সঙ্গে অবিলম্বে কথা বলুন। নিশ্চিত করুন যে, এটাই পাকিস্তানের প্রকৃত অবস্থান কি না। এর মানে কি এই যে ইয়াহিয়া পশ্চিমেও যুদ্ধবিরতিতে প্রস্তুত আছেন? তিনি যদি তা থাকেন, তাহলে আমরা তাঁকে জানাতে চাই যে, পাকিস্তানের ভূখণ্ড এবং তার সশস্ত্র বাহিনীর অখণ্ডতা রক্ষায় আমরা একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’
মালিকের চার শর্ত: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ৩২ থেকে ৩৪ নম্বর সিচুয়েশন রিপোর্টে যুদ্ধবিরতি ঠাঁই পায়। এই তিনটিরই প্রস্তুতকাল ১০ ডিসেম্বর ’৭১। অতীব গোপনীয় এই তারবার্তাগুলো ২২টি দেশের মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ‘ঢাকায় জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক প্রতিনিধি পল মার্ক হেনরির কাছে দেওয়া ফরমান আলীর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর পরিবর্তে আগের চেয়ে কম বিস্তৃত একটি প্রস্তাব দিয়েছেন গভর্নর মালিক। এতে চারটি বিষয় আছে। শর্তগুলো হলো: ১. অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ২. সাতচল্লিশ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে থাকা নাগরিকের নিরাপত্তা, ৩. পূর্ব পাকিস্তানের কাউকে প্রত্যাঘাত না করা, ৪. পূর্ব পাকিস্তানের সব সশস্ত্র বাহিনী সদস্যদের নিরাপত্তা।’ মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গভর্নর মালিকের প্রস্তাবে যেটা নেই সেটা হলো, পাকিস্তানের সেনা প্রত্যাহার কিংবা রাজনৈতিক সমাধানের কথা; যেটা জেনারেল ফরমান আলীর প্রস্তাবে ছিল।’
প্রথম নোট: ১০ ডিসেম্বর তৈরি হয়েছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ৩২ নম্বর পাক-ভারত সিচুয়েশন রিপোর্ট। এই প্রতিবেদনের শুরুতেই লেখা: প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার অনুমোদনক্রমে বর্তমানে পূর্ব পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফরমান আলী জাতিসংঘকে অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ‘পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের’ হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করতে বলেছেন। ফরমান আলী পল মার্ক হেনরির কাছে এ প্রক্রিয়ার শর্তাবলিসহ একটি নোট হস্তান্তর করেন।
সিচুয়েশন রিপোর্টে বলা হয়, ‘হেনরি অবিলম্বে এই নোট জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পাঠান। সেই সঙ্গে হেনরি উল্লেখ করেন যে, ফরমান আলী ইয়াহিয়ার বরাতে জানিয়েছেন, এই প্রস্তাব যেন দ্রুততার সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করা হয় এবং তারা যেন ভারতীয় ও তার মিত্রদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তি করে।’
১২৩৫৫ তারবার্তা: ফারল্যান্ড পররাষ্ট্র দপ্তরে ১০ ডিসেম্বরেই লিখেছেন, ‘আপনাদের বার্তা পেয়েই আমি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব সুলতান হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁর সঙ্গে এর আগে আমি এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম। আমি তাঁকে ইয়াহিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিষয়ে দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করতে বলি। খান আমাকে দ্রুত ফিরতি ফোন করেন। বলেন, ইয়াহিয়ার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ইয়াহিয়া মালিককে যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। পররাষ্ট্রসচিব তখন বলেন যে, মালিকের সই করা আরেকটি বার্তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নিউইয়র্কে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহি হয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে গেছে। মালিকের এই বার্তা ফরমান আলীর আগের বার্তার ওপরে স্থান পাবে। এটাই চূড়ান্ত। এতে চার দফা আছে।
‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও শত্রুতার অবসান, ১৯৪৭ সাল থেকে অবস্থানরত সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সব সশস্ত্র সদস্যের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং চতুর্থত, আমি স্পষ্ট করছি যে, যুদ্ধবিরতির জন্য এটি একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এবং সশস্ত্র বাহিনীর আত্মসমর্পণের প্রশ্ন বিবেচনা করা হবে না। তাই এর কোনো প্রশ্নই আসে না।
‘এই বার্তা পাওয়ার পর আমি খানকে জিজ্ঞেস করি যে, ইয়াহিয়া কি পশ্চিম পাকিস্তানেও যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছেন? পররাষ্ট্রসচিব বলেন, উত্তর ছিল ‘‘হ্যাঁ’’, তবে দুটি ভিত্তিতে। (ক) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে কিংবা একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের সাধারণ শর্তাবলি এবং সেটা জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের চোখের সামনে ঘটতে হবে। এ পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হবে, যার নির্দিষ্ট লক্ষ্য হবে সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধের অবসান ঘটানো। বাঙালিদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ অর্থাৎ একটি রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যেও যুগপৎ আলাপ-আলোচনা শুরু হবে।’
ফারল্যান্ড লিখেছেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব আমাকে বলেছেন, এই মুহূর্তে তিনি এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছেন না।
‘আমি এ সময় তাঁর কাছে জাতিসংঘ ও অন্য কোনোভাবে এ বিষয়ে তাদের যোগাযোগের সহায়তা দিতে আমাদের আগ্রহ ও প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করি। ফরমান আলী ও মালিকের বার্তার মধ্যে যে মৌলিক ফারাক ঘটে গেছে, সেটা ফারল্যান্ড তাঁর এই বার্তায় স্পষ্ট করেন।’
ফারল্যান্ড লিখেছেন, ‘দুই বার্তার মধ্যে একটি চকিত তুলনা করে আমি যা বুঝতে পারি, সেটা হলো, ফরমান আলী এর আগে জাতিসংঘের মহাসিচবের কাছে যে বার্তা পাঠান এবং এখন মালিক যেটা পাঠাচ্ছেন, তার মধ্যে প্রধান একটি বিষয়ে গরমিল আছে। আর সেটা হলো, রাজনৈতিক সমঝোতা। ফরমান পরিষ্কার করে “ঢাকায় একটি শান্তিপূর্ণ সরকার গঠনে পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের” সুযোগ দিতে যুদ্ধবিরতির কথা বলেছিলেন। পররাষ্ট্রসচিব না বললেও এটা ধরা যায় যে, ফরমানের মনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরাই থাকবেন, ইয়াহিয়া যাঁদের সদস্যপদ নিষিদ্ধ করেছিলেন। মালিকের বার্তায় কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার কথা নেই। ১১ তারিখের সকালে আমি ইয়াহিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করব। বুঝতে চাইব, কী আছে তাঁর মনে।’

খা যাচ্ছে, ইয়াহিয়া লিখিতভাবে পশ্চিম পাকিস্তানে যারাই যাবে, তাদের নিয়ে যেতে নিরাপত্তা পরিষদকে লিখিত চুক্তি করতে বলেছিলেন। তাঁর মনে রাজাকার ও আলবদরদের মতো দোসরদের প্রত্যাবাসন নিশ্চয়ই ছিল।
১০ ডিসেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ফারল্যান্ডকে বলেছে, ‘আপনি ঢাকার ৫৫৭৩ বার্তাটি দেখে থাকবেন। ইয়াহিয়ার সঙ্গে অবিলম্বে কথা বলুন। নিশ্চিত করুন যে, এটাই পাকিস্তানের প্রকৃত অবস্থান কি না। এর মানে কি এই যে ইয়াহিয়া পশ্চিমেও যুদ্ধবিরতিতে প্রস্তুত আছেন? তিনি যদি তা থাকেন, তাহলে আমরা তাঁকে জানাতে চাই যে, পাকিস্তানের ভূখণ্ড এবং তার সশস্ত্র বাহিনীর অখণ্ডতা রক্ষায় আমরা একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’
মালিকের চার শর্ত: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ৩২ থেকে ৩৪ নম্বর সিচুয়েশন রিপোর্টে যুদ্ধবিরতি ঠাঁই পায়। এই তিনটিরই প্রস্তুতকাল ১০ ডিসেম্বর ’৭১। অতীব গোপনীয় এই তারবার্তাগুলো ২২টি দেশের মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ‘ঢাকায় জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক প্রতিনিধি পল মার্ক হেনরির কাছে দেওয়া ফরমান আলীর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর পরিবর্তে আগের চেয়ে কম বিস্তৃত একটি প্রস্তাব দিয়েছেন গভর্নর মালিক। এতে চারটি বিষয় আছে। শর্তগুলো হলো: ১. অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ২. সাতচল্লিশ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে থাকা নাগরিকের নিরাপত্তা, ৩. পূর্ব পাকিস্তানের কাউকে প্রত্যাঘাত না করা, ৪. পূর্ব পাকিস্তানের সব সশস্ত্র বাহিনী সদস্যদের নিরাপত্তা।’ মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গভর্নর মালিকের প্রস্তাবে যেটা নেই সেটা হলো, পাকিস্তানের সেনা প্রত্যাহার কিংবা রাজনৈতিক সমাধানের কথা; যেটা জেনারেল ফরমান আলীর প্রস্তাবে ছিল।’
প্রথম নোট: ১০ ডিসেম্বর তৈরি হয়েছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ৩২ নম্বর পাক-ভারত সিচুয়েশন রিপোর্ট। এই প্রতিবেদনের শুরুতেই লেখা: প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার অনুমোদনক্রমে বর্তমানে পূর্ব পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফরমান আলী জাতিসংঘকে অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ‘পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের’ হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করতে বলেছেন। ফরমান আলী পল মার্ক হেনরির কাছে এ প্রক্রিয়ার শর্তাবলিসহ একটি নোট হস্তান্তর করেন।
সিচুয়েশন রিপোর্টে বলা হয়, ‘হেনরি অবিলম্বে এই নোট জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পাঠান। সেই সঙ্গে হেনরি উল্লেখ করেন যে, ফরমান আলী ইয়াহিয়ার বরাতে জানিয়েছেন, এই প্রস্তাব যেন দ্রুততার সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করা হয় এবং তারা যেন ভারতীয় ও তার মিত্রদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তি করে।’
১২৩৫৫ তারবার্তা: ফারল্যান্ড পররাষ্ট্র দপ্তরে ১০ ডিসেম্বরেই লিখেছেন, ‘আপনাদের বার্তা পেয়েই আমি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব সুলতান হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁর সঙ্গে এর আগে আমি এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম। আমি তাঁকে ইয়াহিয়ার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিষয়ে দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করতে বলি। খান আমাকে দ্রুত ফিরতি ফোন করেন। বলেন, ইয়াহিয়ার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ইয়াহিয়া মালিককে যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। পররাষ্ট্রসচিব তখন বলেন যে, মালিকের সই করা আরেকটি বার্তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নিউইয়র্কে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহি হয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে গেছে। মালিকের এই বার্তা ফরমান আলীর আগের বার্তার ওপরে স্থান পাবে। এটাই চূড়ান্ত। এতে চার দফা আছে।
‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও শত্রুতার অবসান, ১৯৪৭ সাল থেকে অবস্থানরত সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সব সশস্ত্র সদস্যের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং চতুর্থত, আমি স্পষ্ট করছি যে, যুদ্ধবিরতির জন্য এটি একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এবং সশস্ত্র বাহিনীর আত্মসমর্পণের প্রশ্ন বিবেচনা করা হবে না। তাই এর কোনো প্রশ্নই আসে না।
‘এই বার্তা পাওয়ার পর আমি খানকে জিজ্ঞেস করি যে, ইয়াহিয়া কি পশ্চিম পাকিস্তানেও যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছেন? পররাষ্ট্রসচিব বলেন, উত্তর ছিল ‘‘হ্যাঁ’’, তবে দুটি ভিত্তিতে। (ক) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে কিংবা একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের সাধারণ শর্তাবলি এবং সেটা জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের চোখের সামনে ঘটতে হবে। এ পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হবে, যার নির্দিষ্ট লক্ষ্য হবে সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধের অবসান ঘটানো। বাঙালিদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ অর্থাৎ একটি রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যেও যুগপৎ আলাপ-আলোচনা শুরু হবে।’
ফারল্যান্ড লিখেছেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব আমাকে বলেছেন, এই মুহূর্তে তিনি এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছেন না।
‘আমি এ সময় তাঁর কাছে জাতিসংঘ ও অন্য কোনোভাবে এ বিষয়ে তাদের যোগাযোগের সহায়তা দিতে আমাদের আগ্রহ ও প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করি। ফরমান আলী ও মালিকের বার্তার মধ্যে যে মৌলিক ফারাক ঘটে গেছে, সেটা ফারল্যান্ড তাঁর এই বার্তায় স্পষ্ট করেন।’
ফারল্যান্ড লিখেছেন, ‘দুই বার্তার মধ্যে একটি চকিত তুলনা করে আমি যা বুঝতে পারি, সেটা হলো, ফরমান আলী এর আগে জাতিসংঘের মহাসিচবের কাছে যে বার্তা পাঠান এবং এখন মালিক যেটা পাঠাচ্ছেন, তার মধ্যে প্রধান একটি বিষয়ে গরমিল আছে। আর সেটা হলো, রাজনৈতিক সমঝোতা। ফরমান পরিষ্কার করে “ঢাকায় একটি শান্তিপূর্ণ সরকার গঠনে পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের” সুযোগ দিতে যুদ্ধবিরতির কথা বলেছিলেন। পররাষ্ট্রসচিব না বললেও এটা ধরা যায় যে, ফরমানের মনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরাই থাকবেন, ইয়াহিয়া যাঁদের সদস্যপদ নিষিদ্ধ করেছিলেন। মালিকের বার্তায় কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার কথা নেই। ১১ তারিখের সকালে আমি ইয়াহিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করব। বুঝতে চাইব, কী আছে তাঁর মনে।’

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×