somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোলাগার ভালোবাসার নিজস্ব জগৎ খুঁজে নিন

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেঁচেথাকতে গেলে তো কিছু না কিছু ভালোবাসতেই হয় , যার মধ্যে আকন্ঠ ডুবে থাকলে সংকীর্ন ভালোবাসার আবেগটাকে একটু গতি দেয়া যায়, যা জীবনবোধকে শানিত করবে , আমাকে দেবে এমন সব অভিজ্ঞতা যার জন্য আমাকে কাঠ-খড় পোড়াতে হবে না , যা অনেকটা সহজলভ্য হওয়ার পরো আমাকে দেবে গভীর জীবনবোধ, আমাকে ভাবতে শেখাবে , ভালোবাসতে শেখাবে উদারভাবে ।

হয়ত এ কারনেই যখন ক্লাস টেনে পড়ি এবং যে সময়টায় কেন জানিনা আমার দৃষ্টি নিবদ্ধ হতে থাকলো নানাবিধ উপন্যাস, কবিতা আর গল্পের-বইয়ের শুষ্ক পাতায়। গোর্কি পড়ে যখন মন খারাপ হয়েছে তখন হয়ত মুজতবা আলী আমাকে “দেশে-বিদেশে” ঘুরতে নিয়ে যেয়ে সে দুঃখ ভুলিয়েছেন । রবীন্দ্রনাথ আর শরতচন্দ্র তখন আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ । কোথায় যেন পড়েছিলাম – ‘’ বই মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু’’; ধীরে ধীরে কথাটা আমার জীবনে সত্যে পরিনত হলো । সারাদিন-রাত ধরে কখনো শুয়ে, বসে কখনোবা দাঁড়িয়ে গল্পের বই পড়তাম । আমি একটা ছোট সেলফ-লাইব্রেরি করেছিলাম বাসায় । বাবা-মায়ের যে তাতে খুব উৎসাহ ছিলো- একথা বললে মিথ্যাচার হবে আর আমাদের দেশে বই কেনা ব্যাপারটাকে এখনো আমাদের বাবা-মা অপচয়ের খাতাতেই রাখেন যদি তা না সেটা টেক্সট বুক বাদে অন্যকিছু হয় !


বাংলা কবিতার প্রতি একটা দুর্নিবার আকর্ষন ছিলো সেই ছোট বেলা থেকেই । কোন বাসায় হয়ত বেড়াতে গেলাম; সে বাসায় যদি কোন ছেলে মেয়ে থাকত তাহলে তার বাংলা বইটা (সেটা যে ক্লাসেরি হোক না কেন) বের করে উলটে পালটে দেখতাম। এমনকি এখনো আমি মাঝে মাঝে আমার ছোট ভাইয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর বইগুলা পড়ি ।

এভাবে গল্প আর কবিতার বইয়ের সাথে ভাব করে আমার কলেজ জীবন শেষ হল । মানুষকে বুঝতে পারি- এরকম কথা কখনো বলিনা আর বলা যায়ও না ; শুধু আমি কেন বোধকরি এরকম কথা কেউ কখনো বলতে পারে না ! সমুদ্রের বেলাভুমিতে দাঁড়িয়ে সমুদ্রকে যতটুকু চেনা যায় মানুষকেও ঠিক তার বেশি কিছু চেনা যায় না । কিন্তু তারপরও নিজেকে কেমন যেন বেশ অভিজ্ঞ বলে মনে হয় এখন । সত্যি বলতে একেকটা উপন্যাস কতগুলো জীবনকে ধারন করে, বিশ্লেষন করে অতঃপর পাঠককে তার নিজ জীবন সম্বন্ধে সচেতন করে তোলে ।

সময়ের আবর্তনে একসময় বুঝতে শিখি জীবনানন্দের ভাষা – ‘’ নারীর হৃদয়-প্রেম-শিশু-গৃহ-নয় সবখানি; অর্থ নয় কীর্তি নয়, স্বচ্ছলতা নয়, আরো এক বিপন্ন বিস্ময়! আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে খেলা করে; আমাদের ক্লান্ত করে !‘’ ভাবতে থাকি কেন তিনি বলেছেন – ‘’ অনেক লোকের মাঝে বসে আমার নিজের মুদ্রা দোষে আমি একা হতেছি আলাদা । ‘’

ভালোবাসার জগতটা এভাবেই ব্যাপৃত হতে থাকে আমার । মুগ্ধ হতে থাকি আমি, জানতে থাকি পুরাতনকে নতুন আলোকচ্ছটায়। সুনির্মল বসুর মতো সমস্ত পৃথিবী আমার সামনে পাঠশালা হয়ে দেখা দেয় । মানুষ , মানবিকতাবোধ, মনুষ্যত্ব যেন রুপ নিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। নারীর ভালোবাসার দুর্নিবার আকর্ষন ক্রমশঃ ক্ষীন হতে থাকে ।

আমার কেন যেন মনে হয়–নারীর প্রেম জীবনের ক্ষুদ্র একটা অংশ হতে পারে ; কিন্তু তা সমগ্র জীবন নয় ! সমগ্র জীবনকে শুধু এই একটি জিনিস দিয়ে বিচার করলে জীবনের প্রতি অবিচার করা হয়।

তাই প্রত্যেকেই তার ভালোলাগা আর ভালোবাসার জগতকে ইচ্ছে মতো সাজাতে পারেন । সংকীর্ন আসক্তি থেকে বাইরে এসে ভালো লাগার বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৈরি করে নিতে পারেন। কবিতায় আপনার আবেগ সঞ্চারিত করতে পারেন অথবা গল্প আর উপন্যাসের পাতায় অবসরে হারিয়ে যেতে পারেন। ধর্মীয় অনুশাসনের যৌক্তিকতার মাঝে সুখ খুঁজতে পারেন বা আশেপাশের মানুষগুলোকে ভালোবেসে সুখী হতে পারেন। রঙ্গিন তুলিতে আপনার মনের ক্যানভাস রাঙ্গিয়ে তুলে আপনার অসীম ব্যস্ততা থেকে একটু নিজস্ব ভালোলাগার মাঝে ছুটি নিতে পারেন। আবার কখনোবা সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলোকে নিয়ে ভেবে একটু চোখের পানি ফেলতে পারেন।

এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভালোলাগার মাঝে হারিয়ে যাক আমাদের হৃদয় । প্রসারিত হোক আমাদের দৃষ্টিভংগি। ভালোবাসা বন্ধন মুক্ত হোক, সিক্ত করুক প্রতিটি মানব হৃদয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×