somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিজিক্স এবং আমার পালিত ভূত

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। তখন আমি ক্লাস টুতে পড়ি। শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে আঁকাবাঁকা রাস্তা পেরিয়ে সবুজ শ্যামলা পল্লীগ্রাম। আর সেই গ্রামেই বেড়ে উঠা পল্লী ছেলে আমি। গ্রামের প্রত্যেকটা গাছপালা, নদীনালা, পথঘাট এমনকি প্রত্যেকটি বালিকনাও মনে হয় আমার পরিচিত। রাস্তার পাশে আমার সেই প্রাথমিক বিদ্যালয় যেইখানের ধুলি মাটি মাখা বেঞ্চে বসে কাটিয়ে এসেছি পাঁচ-পাঁচটি বৎসর। মায়ের হাত ধরে স্কুলে যেতাম। আবার স্কুল ছুটি হলে মায়ের হাত ধরেই বাড়িতে ফিরতাম।

আমার স্কুলের পাশেই রাস্তার ধারে ছিল প্রকাণ্ড একটা বটগাছ। বটগাছের শুরুর ডালগুলো ছিল অনেক নিচে। যে কারনে নিমিষেই উঠা যাইত গাছটিতে। আর পাশেই ছিল একটা টিনের চালা ঘর যা এখন নেই। আর আমরা কয়েকজন ছিলাম দুষ্টুমিতে সেরা। আমরা সেই টিনের চালায় উঠে বটের মুকুল পেরে সেগুলো দিয়ে বাঁশি বাজাতাম । আর এজন্য যে কতবার কাকের ঠুকর খেয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। বিভিন্ন প্রজাতির পাখ-পাখালির জন্য এই গাছটি ছিল নিরাপদ আবাস্থল। সন্ধ্যা হলেই বিভিন্ন সুরের কলরবে মুখরিত হত গাছটির আশেপাশের এলাকা। তবে এইসব কিছুর আড়ালেও যে অন্য একটা জিনিস ছিল তা আগে কখনও চোখে পরে নি। একদিন সন্ধ্যাবেলা আমি আর আমার মা দুজনে লাইব্রেরি থেকে বই কিনে বাড়ি ফিরছিলাম। হটাৎ দেখি ছোট্ট একটি ছেলে বসে বসে কাঁদছে ওই গাছটির নিচে।
আমার মা আবার খুবই দয়াবতী মানুষ। মা বললেন, ওমা কি সুন্দর ছেলে তা বাবা এখানে বসে কাঁদছ ক্যান? বাচ্চাটা কোন উত্তর দিল না। মা আবার বললেন, কি কোথায় থাকো? তাও উত্তর মিললো না। কোন উত্তর না পেয়ে মা বাচ্চাটি কে কোলে তুলে নিলেন। মা একদম আঁতকে উঠলেন ওমা তোমার শরীর এত ঠাণ্ডা ক্যান! মনে হয় বরফ হয়ে গেছে।(গল্পে পড়ে ছিলাম ভুতের শরীর নাকি গরম কালেও অনেক ঠাণ্ডা থাকে) এদিকে আমরা বাচ্চাটিকে নিয়ে প্রায় বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছি ঠিক তখনই বাচ্চাটির মুখে কথা ফুটল। বাচ্চাটি যা বলল তা শুনে আমি ভয়ে আঁতকে উঠলাম, আমার সারা শরীরে কাটা দিয়ে উঠল। কিন্তু আম্মার মধ্যে কোন ভাবোদয় দেখলাম না। অবশ্য সে ভয় পাওয়ার মত মহিলা না। আম্মা শুধু আমাকে বললেন যে কাউকে কিছু বলবি না কিন্তু।

এদিকে সারারাত আমার ঘুম হল না। একটা ভুতের বাচ্চার সাথে কীভাবে একঘরে ঘুমাতে হয় তা আমার জানা নেই যদিও আম্মা ওইটাকে আলাদা খাটে ঘুমাতে দিয়েছে। তাই সারারাত এপাশ- ওপাশ করে কাটিয়ে দিলাম কিন্তু আম্মাকে বুঝতে দিলাম না। তবুও আম্মা বুঝতে পারলেন আমার চোখ লাল হয়ে আছে এমনকি রাতে না ঘুমানোর কারনে কিছুটা ফুলেও গেছে। আম্মা শুধু বললেন, ভয় পাস নে ভুত টা মনে হয় অতটা খারাপ না। আমি আবারও জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখে আসলাম তখনও ও ঘুমুচ্ছে। তখন ভুতটাকে আমার কাছেও কিছুটা নিরীহ মনে হল। যাক বাঁচা গেল। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।
সকালে যথারীতি ক্লাসে গেলাম। একবার মনে হল গতকালের ঘটনাটা ক্লাসে বলে দিয়ে একদম হিরো বনে যাই। কিন্তু বলতে পারলাম না আম্মার কড়া নির্দেশ, খবরদার এই বিষয়ে কাউকে কিছু বলবি না। ক্লাসে বসে সারাক্ষন একটা চিন্তায় মাথায় ঘোরঘোর করছিল। সবকিছুই এলোমেলো মনে হচ্ছিল। স্যার যখন পড়াচ্ছিল তখন আমার কানে কেমন জানি একপ্রকার ভুভু শব্দ হচ্ছিল। যাইহোক, এভাবেই সেদিনের ক্লাসগুলো শেষ করলাম।
বাড়ি ফিরে এসে দেখি মা সেই বাচ্চা ভুতটাকে খেতে দিয়েছেন। ও আরেকটা কথা শুনে খুবই অবাক হলাম আমি আর আম্মা ব্যতীত ভুতটাকে নাকি কেউ দেখতে পায় না। যাক ভালই হল কেউ কোন ঝামেলা করতে পারবে না। আর তা যদি না হত তাহলে দেখা যেত টিভি, ক্যামেরা, সাংবাদিক সব এসে বিশাল জ্বালাতন শুরু করে দিত। আম্মা আমাকে ডেকে বললেন আচ্ছা, বলতো ওকে কি নামে ডাকা যায়? তো আমি বললাম ওকে যেহেতু আমরা সন্ধ্যাবেলা কুড়িয়ে পেয়েছি তাই ওর নাম ‘সন্ধ্যা’ রাখলে কেমন হয়? আম্মা বললেন ঠিক আছে দেখি ওকে আগে একবার জিজ্ঞেস করে নিই ভীন গ্রহের প্রানী তো। নামটা আবার পছন্দ হয় কিনা! তবে ওর আগেও ওর বাবা-মার দেওয়া একটা নাম ছিল কিন্তু এখন সেটা আর মনে করতে পারছে না। অনেকদিন যাবত ওকে নাকি কেউ নাম ধরে ডাকে নি তাই ভুলে গেছে। তবে সন্ধ্যা নামটি নাকি একটু মেয়েলি শুনা যায় তাই ওর নাম রাখলাম ‘রাজী হাসান’। আর আমার দেওয়া নামটা ওর কাছে মন্দ হয়েছে বলে মনে হল না। দেখলাম ও মাথা নিচু করে কাঁদছে। ওকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে? ও বলল, সামান্য একটা ভুলের জন্য বাবা-মা আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আবার মুহূর্তের মধ্যেই ও গলাটা পরিষ্কার করে অভিমানী স্বরে বলল, চলে যখন এসেছি তো আর কখনো তাদের কাছে ফিরে যাব না। কথাগুলো শুনে আমার প্রায় চোখে পানি চলে আসলো। আর আম্মা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিল।

এভাবে যতই দিন যায় ততই ওর প্রতি আমার কেমন জানি খুব বেশি মায়া জন্মে গেল। আর ওকে পেয়ে আমিও অনেক খুশি। আমার এখন আর আগের মত হোমওয়ার্ক করতে হয় না, হাতের লিখাও লিখতে হয় না। খালি ওকে শুধু একবার দেখিয়ে দিলেই হলো ঝামেলা একদম শেষ। তাই ওকে আমি প্রত্যেকদিন ক্লাসে নিয়ে যাই, ঠিক আমার ডানপাশে ওকে বসতে দেই। আমি শুধু ওর বসার সুবিধার জন্যই সবসময় বাম সারির একদম সামনের বেঞ্চের ডানপাশে বসি। আর ওর বসার জন্য ডানপাশে একটা সিট ফাকা রাখি। ছাত্র হিসেবে ভালো থাকার কারনে স্যারেরাও কোন কিছু বলতেন না ডানপাশে একটা সিট ফাঁকা রাখার জন্য। ওকে পেয়ে আরেকটা বিশেষ সুবিধা হল। আর তা হল আমাকে নিয়ে আম্মাকে আর স্কুলে আসতে হয় না। আমি নিয়মিত ওর সাথেই স্কুলে যাওয়া-আসা করি। ও থাকার কারনেই আমার আর কখনো একাকীত্বে ভুগতে হয় না। তারপর কখনো কারেন্ট চলে গেলে ও আমাকে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করে দেয়। তবে প্রথম-প্রথম নতুন পরিবেশে নিজেকে খাপ-খাইয়ে নিতে ওর একটু কষ্টই হচ্ছিলো। যেমন- খাওয়া-দাওয়া, রাতের বেলা লাইটের আলোতে ঘুমানো ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এতদিনে ওর সব কিছুই গাঁ-সওয়া হয়ে গেছে। আর এখন বলতে গেলে ও আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে গেছে। অনেক খোঁজে-খোঁজে হাসানের আব্বা-আম্মা এসেছিল ওকে নিতে কিন্তু ও যায় নি। প্রত্যেকবারই ও সাফ-সাফ না বলে দিয়েছে যে ও যাবে না এখানে আমাদের সাথেই থাকবে। এজন্য ওর বাবা-মারও খুব বেশি আপত্তি ছিল না। তাছাড়া হাসানকে ছাড়াও ওদের আরও সাত জোড়া ছেলেমেয়ে ছিল। আর তাদের ছিল বিচিত্র সব নাম আর ঐসব নামের বানান বাংলায় লিখা সম্ভবই না। এখনো ওর বাবা-মা ওকে দেখতে আসে। বিশেষ করে আমাবস্যা আর চন্দ্রিমা রাত নাকি ওদের খুব বেশি পছন্দ তাই ওই সমস্ত রাতেই ওরা বেশি আসতো। হাসানের আব্বা-আম্মা এসে আমাকে একবার একটা লাইট গিফট দিয়েছিল যা চালানোর জন্য কোন প্রকার ব্যাটারি বা চার্জ দেওয়া লাগতো না। ওই যে রাতের বেলা ভুতেরা যে সকল লাইট জ্বালিয়ে ঘুরে বেড়ায় ঐগুলারই একটা আর কি। লাইটটার আলো ছিল নীল।

এভাবে দেখতে দেখতেই প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা চলে এলো। রাত জেগে পড়তাম। ও পাশে থাকাতে আমার খুব ভালই হয়েছিল। বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্টও মোটামুটি ভালই হল। গ্রামের হাইস্কুলেই ক্লাস সিক্সে ভর্তি হলাম। দেখতে দেখতেই কেটে গেল আরও পাঁচটি বৎসর। দিনটি ছিল ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিক । তখন আমার এস এস সি পরীক্ষা চলে। ঐদিন ছিল আমার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা। আমি আর হাসান রিকশা করে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিলাম। আমরা যখন পরীক্ষা কেন্দ্রের ঠিক কাছাকাছি পৌঁছলাম তখনই একটি ট্রাক এসে আমাদের রিক্সাকে ধাক্কা দিল কিন্তু কি আশ্চর্য! সম্পূর্ণ রিক্সা ভেঙ্গে রিকশাওয়ালা সহ পাশের খাঁদে পড়ে গেল কিন্তু মনে হল তখন আমি যেন শূন্যে ভাসছি। দেখলাম হাসান নিজেই উড়ছে আমাকে নিয়ে আর ওর দুই হাত দিয়ে আমার ডানহাতটি ধরে আছে অনেক শক্ত করে যাতে আমি যেন ওই খাঁদে না পড়ি আর আমার বামহাতে ছিল পরীক্ষার প্রবেশপত্র ও টুলবক্সের ফাইল। যাইহোক ওই ঘটনার কারনে বাংলা পরীক্ষাটা খুব ভালো দিতে পারলাম না। সব পরীক্ষা যখন শেষ হয়ে গেল তখন শুরু হল আমাদের বেড়ানোর পালা। ওই ছুটিতে আমরা সব আত্মীয়স্বজন আর বন্ধু-বান্ধবের বাড়ি বেড়িয়েছি পরম আনন্দে। আর আমার সকল আনন্দের অংশীদার ছিল আমার ভুত-বন্ধু হাসান।
এভাবে হাইস্কুল শেষ করে কলেজে আসলাম। কলেজে হোস্টেলে থাকতাম তাই ওর ওইখানে আমার সাথে থাকতে কোন অসুবিধা হল না। কলেজে থাকতে একবার মনে পড়ে আমার অনেক জ্বর হয়েছিল। তখন পানির হাউজে গিয়ে হাসান আমাকে অনেকক্ষণ ধরে মাথায় পানি ঢালত। আর কলেজের বন্ধু-বান্ধব গুলো ছিল একটু পাজি টাইপের। তাই মনে হয় ওরা কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল যে আমার আসে-পাশে অবশ্যই কিছু একটা বা কেউ একজন আছে যে আমাকে সকল কাজ কর্মে সাহায্য করে বেড়ায়। বন্ধুরা এটা নিয়ে আমার সাথে অনেক বাড়াবাড়ি করেছে কিন্তু সত্য জিনিসটা কখনই জানতে পারে নাই।

কোচিং-টুচিং করে যখন ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম ঠিক তখনই শুরু হল আসল বিড়ম্বনা। কলেজে ফিজিক্স ছিল আমার অনেক পছন্দের সাবজেক্ট তাই ভার্সিটিতে ফিজিক্সে ভর্তি হয়ে প্রথম-প্রথম অনেক ভালোই লাগছিলো। একদিকে ভার্সিটিতে ভর্তি হতে পেরে একটু ভালো লাগা আর অন্যদিকে গনরুম নামক এক যন্ত্রণাদায়ক কবরমার্কা রুমের জ্বালা সব মিলিয়ে দিনগুলো মোটামুটি ভালোই চলছিল। কিন্তু আমার সেই পালিত ভুত-বন্ধু হাসানের এই জিনিস গুলো মোটেও ভালো লাগতো না। প্রত্যেকদিন রাতে আমি নিজেই ঘুমানোর জায়গা পাই না। আর ওকে কীভাবে ঘুমানোর জায়গা করে দেই সেইটা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আম্মা ওর ঘুমানোর জন্য তোশক-বালিশ এইগুলো পাঠিয়েছিল । রুমে শোয়ার জায়গা নাই দেখে ওকে আমার হলের ছাদে ঘুমাতে দিয়েছি। কিন্তু রাতে বৃষ্টি হওয়ায় ও দেখি একদম কাকভেজা হয়ে গেছে। এভাবে থাকতে ওর ভীষণ কষ্ট হচ্ছিলো। তাই ওকে একদিন বললাম, বাড়িতে আমার এত বড় ঘরটা খালি পড়ে আছে তুই বরং বাড়িতে গিয়ে থাক। ও হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়াল এবং পরদিনই বাড়ি চলে গেল। কিন্তু এক সপ্তাহও ও বাড়িতে গিয়ে থাকতে পারল না। ও এবার যখন হলে আসলো তখন হলের কিছু কাজকর্ম দেখে কতিপয় ফালতু পোলাপানকে কিক মাইরা বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয় সেতুর নিচে ফালাইতে চেয়েছিল কিন্তু আমি করতে দেই নাই। কারও ক্ষতি হোক তা আমি কখনো চাই নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাসের উজ্জ্বল সাক্ষী, এক ঐতিহ্যবাহী এবং সৃষ্টিলগ্ন থেকেই চালু হওয়া এই ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়ে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি। তবে ফার্স্ট ইয়ারটা কোনভাবে কেটে গেলেই শুরু হয় আসল বিড়ম্বনা। ক্লাস টিউশনি এইসবের ফাঁকে বই নামে কিছু একটা যে আছে আর সেটা যে মাঝে মাঝে খুলে দেখতে হয় তাও মনে হয় ভুলে গেছি। তবে মাঝে মাঝে MMP নামের একটা কিতাব আছে সেটা পরলে হাসান ভয় পেয়ে অস্থির হয়ে যেত। আর তার কিছুদিন পরেই জানতে পারলাম ভূত তাড়ানোর যে মন্ত্রটা আছে তার প্রথম লাইনটা এই কিতাব থেকেই নেওয়া হয়েছে। এগুলোও পড়লে হাসান খুব ভয় পাইত আর তাই আমি এইসব ভুতের মন্ত্র কোনদিনই আত্মস্থ করতে পারি নাই। এইখানে একটা ভারী বোঝা রয়ে গেল আর এর সাথে চোহেল রানার ODE তো আছেই। আর এই বোঝা টানতে টানতেই নতুন বোঝা চলে আসতে থাকল। আর তাই হাসানকে আর আগের মত সময় দিতে পারি না।
পরের ঘটনা খুবই ভয়াবহ। ও অনেকদিন ধরেই গ্যান- গ্যান করতেছিল একটু টিএসসি তে যাব এই বলে। কিন্তু আমি ওকে অনেক জোরে একটা ধমক দিয়েছিলাম যা ছিল ওর জন্য খুব বেশি কষ্টের। তাই ও একাই রাগ করে টিএসসি তে গিয়ে বসেছিল। কিছুসময় পরে ও আমাকে কল দিয়ে বলল ওর নাকি ভীষণ জ্বর আসছে। তাই আমি ওকে বললাম তুই ওইখানে কিছুক্ষন অপেক্ষা কর আমি আসতেছি। আমি আগেই বলেছিলাম ও খুবই অভিমানী। তাই আমি যখন টিএসসি তে আসছি আমাকে দেখে শাহবাগের দিকে যাইতে লাগলো। আর আমিও ওর পিছু নিলাম। ওকে অনেক ডাকলাম কিন্তু ও কিছুই শুনল না। শাহবাগ মোড়ে এসে ও পিছনে ফিরে আমার দিকে একবার তাকাল আমি স্পষ্টই দেখতে পেলাম ও অনেক কেঁদেছে, কেঁদে ওর চোখগুলো ফুলে গেছে। ওকে বকা দেওয়ার জন্য আমার খুব কষ্ট হল তাই আমি ওকে ধরতে যাব ঠিক ওইসময় ও ব্যস্ত রাস্তায় আড়াআড়ি একটা দৌড় দিল। আর তখনই এক বেপরোয়া বাস চলে গেল ওর উপর দিয়ে। আর আমি দেখলাম আমার সামনেই আমার এতদিনের পালিত বন্ধুর রক্তে ভিজে গেল শাহবাগ মোড়ের পিচঢালা রাজপথ। আর আমার কাছে রয়ে গেল ওর সাথে আমার হাজারো স্মৃতি আর নীল আলোর সেই লাইট যা ওর আব্বা-আম্মা আমাকে দিয়েছিল।
¬এখন টিএসসি তে গেলে ওর কথায় সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে। আর এখন শুধু এততুকুই বলি ওর স্মৃতির উদ্দেশ্য............যেখানেই থাকো ভালো থেকো বন্ধু, অনেক ভালো।









০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×