somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াতের কৌশল??

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দলের নিবন্ধন রার কৌশল হিসেবে গঠনতন্ত্রের অনেক স্পর্শকাতর বিষয় বাদ দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এরমধ্যে দেশে ইসলামী শাসন কায়েম, খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েম ও অমুসলিম নাগরিকদের দলের সদস্য করার ধারাসহ গঠনতন্ত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে দলটি। গঠনতন্ত্রের ভূমিকা ও ৩ ধারায় আলাহ প্রদত্ত ও রাসূল (সালালাহু আলাইহি ওয়া সালাম) প্রদর্শিত দ্বীন (ইসলামী জীবন বিধান) কায়েমের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আলাহর সন্তুষ্টি’ কিন্তু সেগুলো বাদ দিয়ে ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন’ বাক্যটি সংযোজন করা হয়েছে।
ইসির আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার তিন দিন আগে গত ২ ডিসেম্বর ইসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছে জামায়াত। এই প্রথম মজলিসে শুরার কোন বৈঠক ছাড়াই জামায়াতের মধ্যম সাড়ির নেতৃবৃন্দ গঠনতন্ত্রে সংশোধন আনলো। এরপরও পার পাচ্ছে না জামায়াতে ইসলামী। কারণ নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি এরই মধ্যে সংশোধিক গঠনতন্ত্রের মধ্যেও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংগে সাংঘর্ষিক কিছু ধারা চিহ্নিত করেছে। পাশাপাশি সংশোধনী আনা কিছু ধারাতেও এখনো সমস্যা রয়েছে বলে কমিশনের কাছে রিপোর্ট করছে যাচাই-বাছাই কমিটি। এ অবস্থায় গঠনতন্ত্রে আরো সংশোধনী আনতে জামায়াতকে আবারো চিঠি দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জামায়াতের গঠনতন্ত্র বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলটি তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে কমিশন সচিবালয়ে জমা দিয়েছে। কমিশন বৈঠকে উপস্থাপন করার পর যথাযথভাবে সংশোধন করা হয়েছে কি না তা পরীা করে দেখব।
ইসির কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, দলটি তাদের গঠনতন্ত্রর ধারা ২ উপধারা ৫ বাদ দিয়েছে। ২(৫) ধারায় ছিল, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাহার নৈকট্য লাভকেই নিজের যাবতীয় চেষ্টো সাধানার চূড়ান্ত ল্য এবং নিজের সমগ্র তৎপরতার কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে গ্রহণ করিবে।’ গঠনতন্ত্রের ভুমিকায় বর্ণিত ইসলামী সমাজ গঠন ও ধারা ৩-এ বর্ণিত ইসলামী জীবন বিধান কায়েমের বিষয়টিতে সংশোধন আনলেও কমিশনের যাচাই-বাছাই কমিটি সংশোধনটি যথাযথ হয়নি বলে মত দিয়েছে। সমাজের সর্বস্তরে খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টার বদলে এখন চরিত্রবান নেতৃত্বের কথা বলছে দলটি। এ ছাড়া ইসলামী শাসন কায়েমের বদলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে। এভাবে ধর্মীয় উদ্দেশ্যপূর্ণ এবং সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) পরিপন্থী মোট আটটি ধারা পরিবর্তন, সংশোধন ও বিলুপ্ত করা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, গত রোববার দলটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার জামায়াতের সর্বশেষ সংশোধিত ও মুদ্রিত গঠনতন্ত্র কমিশনে জমা দেন। এ সংশোধিত গঠনতন্ত্রটি ২০১২ সালের নভেম্বরে ৪৯তম মুদ্রণ এবং এর প্রকাশক জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। জমা দেওয়া গঠনতন্ত্রের প্রতিটি পাতায় অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকারের সিল ও স্বার রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জামায়াতের গঠনতন্ত্রের ২ ধারার ৫ উপধারা, ধারা ৩, ৫ ধারার ৩ উপধারা, ৬ ধারার ৪ উপধারা, ৭ ধারার ১ থেকে ৪ উপধারা, ১১ ধারার ২ উপধারা ও ১৮ ধারার ৪(চ) উপধারা সংশোধনের তাগিদ দেয়। দলটির নিবন্ধনের সময়ও এসব ধারা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সে সময় জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার গঠনতন্ত্র থেকে কয়েকটি ধারা লাল কালি দিয়ে কেটে সেগুলো গঠনতন্ত্রের অংশ নয় মর্মে স্বার করেন। তবে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে সেগুলো স্থান পায়নি।
২ ধারার ৫ উপধারায় ‘আলাহ ব্যতীত অপর কাহাকেও বাদশাহ, রাজাধিরাজ ও সার্বভৌম মতার মালিক মানিয়া লইবে না, কাহাকেও নিজস্বভাবে আদেশ ও নিষেধ করিবার অধিকারী মনে করিবে না, কাহাকেও স্বয়ংসম্পূর্ণ বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না এবং আলাহর আনুগত্য ও তাঁহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয় এমন সকল আনুগত্য মানিয়া লইতে অস্বীকার করিবে। কেননা স্বীয় সমগ্র রাজ্যের নিরঙ্কুশ মালিকানা ও সৃষ্টিলোকের সার্বভৌমত্বের অধিকার আলাহ ব্যতীত অপর কাহারও আসলেই নাই।’
৩ ধারায় দলের ল্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভূমিকাসহ চারটি উপধারায় আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসুল (সা.) প্রদর্শিত দ্বীন (ইসলামী জীবনবিধান) কায়েমের প্রচেষ্টার কথা বলা ছিল। সেগুলো বাদ দিয়ে ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন’ বাক্যটি সংযোজন করা হয়েছে।
৫ ধারার ৩ উপধারায় বলা ছিল, ‘সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামের সুবিচারপূর্ণ শাসন কায়েম করিয়া সমাজ হইতে সকল প্রকার জুলুম, শোষণ, দুর্নীতি ও অবিচারের অবসান ঘটাইবার আহ্বান জানাইবে।’ এ অংশ থেকে ‘ইসলামের’ শব্দটি বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি’ কথাটি সংযোজন করা হয়েছে।
৬ ধারার ৪ উপধারায় ‘ইসলামের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠাকল্পে গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বাঞ্ছিত সংশোধন আনয়নের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা’- এই বাক্য থেকে ‘খোদাভীরু’' বাদ দিয়ে ‘চরিত্রবান’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে।
৭ ধারার ১ থেকে ৪ উপধারায় জামায়াতের সদস্য হতে হলে ইসলামে বিশ্বাস ও শরিয়তের নির্ধারিত ফরজ ও ওয়াজিব আদায়ের শর্ত দেওয়া ছিল। এগুলো এখন সম্পূর্ণ বাদ দেয়া হয়েছে।
১১ ধারার ২ উপধারায় ‘যেকোনো অমুসলিম নাগরিক কয়েকটি শর্ত পূরণের মাধ্যমে জামায়াতের সদস্য হতে পারবে’ বলা ছিল। এ উপধারাটি দলের গঠনতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও স্ববিরোধী বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। জামায়াত এই উপধারা বাদ দিয়েছে।
১৮ ধারার ৪(চ) উপধারায় বলা ছিল, ‘আমীরে জামায়াত কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সহিত পরামর্শ করিয়া প্রয়োজনীয়সংখ্যক সদস্যকে (রুকনকে) কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য মনোনীত করিতে পারিবেন।’ এটি আরপিও পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন। এ উপধারাও বাদ দেয়া হয়েছে।
জামায়াতকে গঠনতন্ত্রের ৬৪ পৃষ্ঠার বিশেষ নোটের দফা ৩-এ সংশোধনী আনারও তাগিদ দিয়েছিল কমিশন। দলের গঠনতন্ত্রে সব কমিটিতে আরপিও অনুসারে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ মহিলা সদস্যের স্থলে বেশির ভাগ কমিটিতে ২৫ শতাংশ মহিলা সম্পৃক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে মহিলা সদস্য ৩৩ শতাংশ করেই ৬৯ ধারায় তা সন্নিবেশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন গত ৪ নভেম্বর দলটির সেক্রেটারি জেনারেল বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধন করতে তাগিদ দিয়েছিল। নির্বাচন কমিশনে ২০০৮ সালে নিবন্ধিত হওয়ার পর জামায়াতকে এর আগেও এ বিষয়ে তিনবার তাগাদা দেয়া হয়।



দলের নিবন্ধন রার কৌশল হিসেবে গঠনতন্ত্রের অনেক স্পর্শকাতর বিষয় বাদ দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এরমধ্যে দেশে ইসলামী শাসন কায়েম, খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েম ও অমুসলিম নাগরিকদের দলের সদস্য করার ধারাসহ গঠনতন্ত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে দলটি। গঠনতন্ত্রের ভূমিকা ও ৩ ধারায় আলাহ প্রদত্ত ও রাসূল (সালালাহু আলাইহি ওয়া সালাম) প্রদর্শিত দ্বীন (ইসলামী জীবন বিধান) কায়েমের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আলাহর সন্তুষ্টি’ কিন্তু সেগুলো বাদ দিয়ে ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন’ বাক্যটি সংযোজন করা হয়েছে।
ইসির আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার তিন দিন আগে গত ২ ডিসেম্বর ইসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছে জামায়াত। এই প্রথম মজলিসে শুরার কোন বৈঠক ছাড়াই জামায়াতের মধ্যম সাড়ির নেতৃবৃন্দ গঠনতন্ত্রে সংশোধন আনলো। এরপরও পার পাচ্ছে না জামায়াতে ইসলামী। কারণ নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি এরই মধ্যে সংশোধিক গঠনতন্ত্রের মধ্যেও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংগে সাংঘর্ষিক কিছু ধারা চিহ্নিত করেছে। পাশাপাশি সংশোধনী আনা কিছু ধারাতেও এখনো সমস্যা রয়েছে বলে কমিশনের কাছে রিপোর্ট করছে যাচাই-বাছাই কমিটি। এ অবস্থায় গঠনতন্ত্রে আরো সংশোধনী আনতে জামায়াতকে আবারো চিঠি দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জামায়াতের গঠনতন্ত্র বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলটি তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে কমিশন সচিবালয়ে জমা দিয়েছে। কমিশন বৈঠকে উপস্থাপন করার পর যথাযথভাবে সংশোধন করা হয়েছে কি না তা পরীা করে দেখব।
ইসির কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, দলটি তাদের গঠনতন্ত্রর ধারা ২ উপধারা ৫ বাদ দিয়েছে। ২(৫) ধারায় ছিল, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাহার নৈকট্য লাভকেই নিজের যাবতীয় চেষ্টো সাধানার চূড়ান্ত ল্য এবং নিজের সমগ্র তৎপরতার কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে গ্রহণ করিবে।’ গঠনতন্ত্রের ভুমিকায় বর্ণিত ইসলামী সমাজ গঠন ও ধারা ৩-এ বর্ণিত ইসলামী জীবন বিধান কায়েমের বিষয়টিতে সংশোধন আনলেও কমিশনের যাচাই-বাছাই কমিটি সংশোধনটি যথাযথ হয়নি বলে মত দিয়েছে। সমাজের সর্বস্তরে খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টার বদলে এখন চরিত্রবান নেতৃত্বের কথা বলছে দলটি। এ ছাড়া ইসলামী শাসন কায়েমের বদলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে। এভাবে ধর্মীয় উদ্দেশ্যপূর্ণ এবং সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) পরিপন্থী মোট আটটি ধারা পরিবর্তন, সংশোধন ও বিলুপ্ত করা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, গত রোববার দলটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার জামায়াতের সর্বশেষ সংশোধিত ও মুদ্রিত গঠনতন্ত্র কমিশনে জমা দেন। এ সংশোধিত গঠনতন্ত্রটি ২০১২ সালের নভেম্বরে ৪৯তম মুদ্রণ এবং এর প্রকাশক জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান। জমা দেওয়া গঠনতন্ত্রের প্রতিটি পাতায় অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকারের সিল ও স্বার রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জামায়াতের গঠনতন্ত্রের ২ ধারার ৫ উপধারা, ধারা ৩, ৫ ধারার ৩ উপধারা, ৬ ধারার ৪ উপধারা, ৭ ধারার ১ থেকে ৪ উপধারা, ১১ ধারার ২ উপধারা ও ১৮ ধারার ৪(চ) উপধারা সংশোধনের তাগিদ দেয়। দলটির নিবন্ধনের সময়ও এসব ধারা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সে সময় জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার গঠনতন্ত্র থেকে কয়েকটি ধারা লাল কালি দিয়ে কেটে সেগুলো গঠনতন্ত্রের অংশ নয় মর্মে স্বার করেন। তবে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে সেগুলো স্থান পায়নি।
২ ধারার ৫ উপধারায় ‘আলাহ ব্যতীত অপর কাহাকেও বাদশাহ, রাজাধিরাজ ও সার্বভৌম মতার মালিক মানিয়া লইবে না, কাহাকেও নিজস্বভাবে আদেশ ও নিষেধ করিবার অধিকারী মনে করিবে না, কাহাকেও স্বয়ংসম্পূর্ণ বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না এবং আলাহর আনুগত্য ও তাঁহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয় এমন সকল আনুগত্য মানিয়া লইতে অস্বীকার করিবে। কেননা স্বীয় সমগ্র রাজ্যের নিরঙ্কুশ মালিকানা ও সৃষ্টিলোকের সার্বভৌমত্বের অধিকার আলাহ ব্যতীত অপর কাহারও আসলেই নাই।’
৩ ধারায় দলের ল্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভূমিকাসহ চারটি উপধারায় আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসুল (সা.) প্রদর্শিত দ্বীন (ইসলামী জীবনবিধান) কায়েমের প্রচেষ্টার কথা বলা ছিল। সেগুলো বাদ দিয়ে ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন’ বাক্যটি সংযোজন করা হয়েছে।
৫ ধারার ৩ উপধারায় বলা ছিল, ‘সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামের সুবিচারপূর্ণ শাসন কায়েম করিয়া সমাজ হইতে সকল প্রকার জুলুম, শোষণ, দুর্নীতি ও অবিচারের অবসান ঘটাইবার আহ্বান জানাইবে।’ এ অংশ থেকে ‘ইসলামের’ শব্দটি বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতি’ কথাটি সংযোজন করা হয়েছে।
৬ ধারার ৪ উপধারায় ‘ইসলামের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠাকল্পে গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বাঞ্ছিত সংশোধন আনয়নের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা’- এই বাক্য থেকে ‘খোদাভীরু’' বাদ দিয়ে ‘চরিত্রবান’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে।
৭ ধারার ১ থেকে ৪ উপধারায় জামায়াতের সদস্য হতে হলে ইসলামে বিশ্বাস ও শরিয়তের নির্ধারিত ফরজ ও ওয়াজিব আদায়ের শর্ত দেওয়া ছিল। এগুলো এখন সম্পূর্ণ বাদ দেয়া হয়েছে।
১১ ধারার ২ উপধারায় ‘যেকোনো অমুসলিম নাগরিক কয়েকটি শর্ত পূরণের মাধ্যমে জামায়াতের সদস্য হতে পারবে’ বলা ছিল। এ উপধারাটি দলের গঠনতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও স্ববিরোধী বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। জামায়াত এই উপধারা বাদ দিয়েছে।
১৮ ধারার ৪(চ) উপধারায় বলা ছিল, ‘আমীরে জামায়াত কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সহিত পরামর্শ করিয়া প্রয়োজনীয়সংখ্যক সদস্যকে (রুকনকে) কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য মনোনীত করিতে পারিবেন।’ এটি আরপিও পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন। এ উপধারাও বাদ দেয়া হয়েছে।
জামায়াতকে গঠনতন্ত্রের ৬৪ পৃষ্ঠার বিশেষ নোটের দফা ৩-এ সংশোধনী আনারও তাগিদ দিয়েছিল কমিশন। দলের গঠনতন্ত্রে সব কমিটিতে আরপিও অনুসারে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ মহিলা সদস্যের স্থলে বেশির ভাগ কমিটিতে ২৫ শতাংশ মহিলা সম্পৃক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে মহিলা সদস্য ৩৩ শতাংশ করেই ৬৯ ধারায় তা সন্নিবেশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন গত ৪ নভেম্বর দলটির সেক্রেটারি জেনারেল বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধন করতে তাগিদ দিয়েছিল। নির্বাচন কমিশনে ২০০৮ সালে নিবন্ধিত হওয়ার পর জামায়াতকে এর আগেও এ বিষয়ে তিনবার তাগাদা দেয়া হয়।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৩৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×