২০০৭ সাল ১৬ নভেম্বর। দেশে তখন সিডরের প্রলয়ঙ্কারী তাণ্ডবের ছোবল। সেই গভীর রাতেই মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের কারণে এ্যাপোলো হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হন সঙ্গীত জগতের প্রিয় মুখ প্রিয় কন্ঠস্বর। তারপর দুদিন সময় নিয়েই ১৯ নভেম্বর, অগুনতি সিডরের মৃত্যুর মিছিলে ৪৩ বছর বয়সেই সামিল হলেন সঙ্গীতের এই কিংবদন্তী সঞ্জীব চৌধুরী।
সঞ্জীব’দা। সঞ্জীব চৌধুরী। হালকা পাতলা গড়ন, গোঁফ তার সাথে মানানসই ঝাকড়া চুল। চোখে চোখে জ্বল জ্বল করা স্বপ্ন, ঠোঁটে ফালি দেয়া চাঁদের হাসি, নিচু স্বর আর চমকপ্রদ উচ্চারণ। সহযোদ্ধাদের কাছে এমনই সাবলীলভাবেই ধরা দিতেন সঞ্জীব চৌধুরী।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের এক অন্যতম সাংস্কৃতিককর্মী সঞ্জীব চৌধুরী ২৫ ডিসেম্বর ১৯৬৪ সালে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হলেও পরে পাস কোর্সে স্নাতক পাস করেন। তারপর সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী করেন।
কর্মজীবনের শুরু সাংবাদিকতা দিয়ে। দেশের খ্যাতনামা এবং বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও যায়যায়দিন এ কাজ করেন তিনি।
সৃষ্টিশীলতার এক অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে জন্ম নেয়া উচ্ছল জীবণাচরণের অধিকারী সঞ্জীব চৌধুরী, সঙ্গীত পরিবারের অন্যতম সন্তান বাপ্পা মজুমদারকে সাথে নিয়ে গড়ে তোলেন “দলছুট” ব্যান্ড। চমৎকার বাণী আর সহজিয়া সুর নিয়ে “দলছুট” প্রথম থেকেই শ্রোতা আকর্ষণে সক্ষম হয়।
শুরুটা “আহ” অ্যালবামের মাধ্যমে। সাদা ময়লা রঙ্গীলা পালে/আউলা বাতাস খেলে…চিরায়ত প্রাণময় সুর আর কথা। এরপরেই “হৃদয়পুর”। বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের কথা ও সুর উঠে আসে এই অ্যালবামে। “গাড়ি চলে না…দিয়ে মুগ্ধ আবারো দর্শকশ্রোতা। এরপর বেরুলো সঞ্জীবের একক অ্যালবাম “স্বপ্নবাজী”। যেখানে তিনি নির্দ্বিধায় গেয়েছেন-
যাই পেরিয়ে এই যে সবুজ বন
যাই পেরিয়ে ব্যস্ত নদী, অশ্রু আয়োজন
যাই পেরিয়ে সকাল দুপুর রাত
যাই পেরিয়ে নিজের ছায়া, বাড়িয়ে দেয়া হাত…
একজন তিনি জনপ্রিয় বাংলা ব্যাণ্ডদল দলছুটের অন্যতম প্রধান সদস্য ছিলেন।
ডিসেম্বর ২৫, ১৯৬২ সালে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন
তিনি একজন খ্যাতনামা সাংবাদিকও ছিলেন এবং বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও যায়যায়দিনএ কাজ করেন। তিনি ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে আকস্মিক অসুস্থতার পর ১৯ নভেম্বর ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ বিভাগে মারা যান।[৩] তিনি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একজন কর্মী ছিলেন। ১৯৭৮ সালের মাধ্যমিক এবং ১৯৮০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় স্থান করে নেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী এবং চার বছরের কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।