আমার জীবনের মহেন্দ্রক্ষন এসেছিলো শনিবার কি রবিবার। বারটি ঠিকমত মনে পরছেনা কিন্তু সময় ছিল গোধুলি বেলা। নির্দিষ্ট ঐ সময়টুকু ভুলিনি অথবা ভুলতে দেয়নি আমার ভেতরের আরেক আমি! পশ্চিমাকাশে ছিল লাল রঙের আভা, সে লাল আভাতে তাকে মানিয়েছিলো বেশ। এই 'তাকে' এর বর্ণনা আমি দিতে পারবনা। কেনো পারবনা সেটা আমার মনেই থাক। সেদিন তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে। মনে হয়েছিলো আমার দুচোখ দিয়ে তার রুপের সুধা পান করে কাটিয়ে দিতে পারব বাকি জীবন। তার সেই মূহুর্তের লাজুক চোখ দুটি এখনো দেখতে পাই।
নিজেকে সংবরন করার ক্ষমতা আমার বরাবরই ছিলো। কিন্তু সেদিন কি হয়েছিল তা আমি আজো ভেবে পাইনা। হয়তো সে আমার সংবরন ক্ষমতা নষ্ট করে দিয়েছিলো অথবা আমি তার রুপ দেখে নিজেকে সংবরন করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলাম। সে বিকেলে দুচোখ ভরে নিয়েছিলাম তার সৌন্দর্য। নিঃশ্বাসে ছিলো তার শরীরের ভারি মিষ্টি গন্ধ। অনুভব করেছিলাম তার উপত্যকা, টিলা, ত্রিভূজ। নির্দ্বিধায় বলতে পারি মিলিত হওয়ার পরম সুখ পেয়েছিলাম সেই বিকেলেই।
সবকিছু ঠিকঠাক ছিলো। ঠিকঠাক না বলে 'বেশ' বললে যথার্থ হয়। কিন্তু হঠাৎ যে কি হল! কালের পরিবর্তনে আমারো পরিবর্তন হল। স্বীকার করি পরিবর্তন সবারি হয়, তবে আমার পরিবর্তন হল অন্যরকম। থাক পরিবর্তনের বর্ণনা দিবনা। দেয়ার ইচ্ছে নেই। শুধু এটুকুই বলবো, এখন আর গোধুলি বেলায় তার মাঝে অপুর্ব সে রুপ দেখিনা, সে গন্ধও পাইনা যে গন্ধের জন্য একসময় পাগল ছিলাম। মরে গেছে উপত্যকা, টিলা, ঝর্না উপভোগ করার ইচ্ছে। মরে গেছে মিলিত হওয়ার ইচ্ছে। এখন শুধু একসাথে থাকি থাকার জন্য। কোন পিছুটানের জন্য নয়। একসাথে থাকাটা এখন নিয়মে পরিনত হয়ে গেছে। দুর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে আমাদের মাঝে দূরত্ব্য আছে। দূরত্ব্য সত্যি নেই, কিন্তু সেটা সমুদ্রের কিনারায় দাড়িয়ে দেখলে যেমন মনে হয় নদী আর আকাশের মাঝে কোন দূরত্ব্য নেই ঠিক সেরকম!