somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিটা সম্পর্কই সহজাত, স্বাভাবিক কিন্তু স্পর্ষকাতর

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'সম্পর্ক' খুবই বিচিত্র একটা বিষয়।আমাদের জীবদ্দশায় আমরা পরিচিত হই সম্পর্কের ভিন্ন ভিন্ন রুপের সাথে।কিছু কিছু সম্পর্ক নিয়েই আমরা জন্ম নিই।কখনো কিছু কিছু সম্পর্ক জীবনে চলার পথে আপনা আপনিই জন্ম নেয় আবার কখনো আমরা তা তৈরি করে নিই নিজের মতো করে।আর একবার যে সম্পর্কটার জন্ম হয় তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলতে থাকে অবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিক ভাবে।হ্য়ত মাঝে মাঝে কোন ক্ষেত্রে তার নামটা বদলে যায় কিন্তু সম্পর্কের পিঠে চড়ে চলতে চলটে আমরা হারিয়ে গেলেও সম্পর্ক কখনো হারিয়ে যায়না।এটা এমন একটা বিষয় যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই,যার মৃত্যু নেই,অবিনশ্বর।

সময়ের পরিবর্তনে আর পরিস্থিতির সাপেক্ষে কখনো কখনো হয়ত তার নামটা বদলে যায় কিন্তু সম্পর্কটা সম্পর্কের জায়গায়ই থেকে যায় আজীবন।সম্পর্কের আছে সাদা কালো সুতো আর রিপুর জটিল গ্রন্থি।জীবন চলার পথে ভাললাগা,বিশ্বাস,পারষ্পরিক সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি,মতামতের মিল,সামাজিক বন্ধন,নৈতিকতা,দায়িত্ববোধ আরো অনেক কিছুর ভিত্তিতে সৃষ্টি হয় সম্পর্ক।একমাত্রিক ধ্যানধারণার কারনে অথবা পারষ্পরিক দ্বন্ধে কখনো ঐ সম্পর্কের পুথির মালাটা ছিন্ন হয়ে হারিয়ে যায় বিশ্বাস অথবা নৈতিকতা অথবা পারষ্পরিক সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি অথবা আরো অনেক কিছু।শুরু হয়ে যায় পারষ্পরিক একটা সংঘর্ষ।ধিরে ধিরে সৃষ্টি হয় দূরত্ব অথবা কখনো হঠাৎ করে হয়ে ওঠে একজন আরেক জনের শত্রু।তবে যে নাম নিয়ে শুরু হয়েছিল সম্পর্কটা, পারষ্পরিক দূরত্ব অথবা শত্রুতার কারনে কি একদমই নিঃশ্বেষ হয়ে যায় সেই সম্পর্ক??না কখনোই তা হয়না!শুধু মাত্র সম্পর্কের নামটা বদলে যায়।আগে যেটাকে বন্ধুত্ব বলা হতো এখন সেটাকে বলা হয় অন্যকিছু।আগে যেখানে ছিল বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখন তার নাম হয়েছে সংঘর্ষ অথবা শত্রুতার সম্পর্ক,আত্মিয়তার সম্পর্ক হয়েছে অনাত্মিয়তে!বন্ধুত্ব কিংবা শত্রুতা নামের পরিবর্তন যাই হোকনা কেন একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় যে সম্পর্কটা সম্পর্কের জায়গায়ই আছে শুধুমাত্র আগে যাকে ভালবাসা কিংবা শ্রদ্ধা করা হত এখন তাকে ঘৃনা করা হয়।এভাবে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই যে নামে সম্পর্ক শুরু হয় পরিবর্তনের কবলে পড়লে নামটা ঠিক বিপরীত দিকে চলে যায় অথবা ভিন্ন কোন নাম পায়,কিন্তু সম্পর্ক সম্পর্কের জায়গায়ই থেকে যায়।বিজ্ঞান বলছে, আলোকময় নক্ষত্রের তিমির মানে তারার মৃত্যুতে তৈরি কৃষ্ণগহ্বর। পৃথিবীর সাপেক্ষে বহু আলোকবর্ষের দূরত্বের কারণেই মৃত নক্ষত্রের আলো এবং মৃত নক্ষত্রের কৃষ্ণগহ্বর একই সঙ্গে বর্তমান। তারার মৃত্যুর অনেক দিন পরেও তার আলো পেতে থাকে পৃথিবী।সম্পর্ক হলো সেই নক্ষত্রের তিমির।লোনা জলের দুস্তর ব্যবধান সত্ত্বেও মানুষে মানুষে সম্পর্কের আরোহী-অবরোহী তান সেই নক্ষত্রপ্রকৃতিরই প্রতিফলন। যে-নক্ষত্রের আলোকলগ্নের প্রশ্রয়ে সম্পর্কের জন্ম হয়, তার মৃত্যু বা অপমৃত্যুর পরেও বয়ে যেতে হয় বন্ধনের অবহ ছায়াশরীর।

জীবন চলার ক্ষেত্রে যত জায়গায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হ্য় তার মধ্যে সবচেয়ে সম্পর্কের ক্ষেত্র বেশি সাবধানতা অবলম্বন করে চলা উচিৎ বলে আমার মনে হয়,এই একটা জায়গায় সবচেয়ে বেশি হিসাব করে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।কারন কোন ভুলের কারনে যদি একবার আমাদের সম্পর্কের নামটা বদলে যায় তাহলে মৃত্যু
অবদি সেই বদলে যাওয়া ভুলের বোঝাটাকে বয়ে বেড়াতে হয়।চাইলেও তাকে আমরা শেষও করে দিতে পারিনা অথবা আগের জায়গায়ও নিয়ে যেতে পারিনা।অথচ এই স্পর্ষকাতর বিষয়টাকে আমরা কখনোই খুব বেশি গুরুত্বের সাথে দেখিনা।যে কোন একটা সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে যতটা উদ্দিপনা থাকে ঐ সম্পর্কটার ধারাবাহিকতাকে অক্ষুন্ন রাখার ক্ষেত্রে
থাকে ততটাই উদাসিনতা!হুটকরে বলেফেলি কত অপ্রাসঙ্গিক কথা,রাগের বসে করেফেলি যা ইচ্ছা তাই,উদ্ব্যত হয়ে তছনছ করে ফেলি কত যত্ন করে তিল তিল করে গড়ে তোলা কোন এক মধুর নামের সম্পর্ক!!কিন্তু কখনো কি একবারও ভাবি যে 'সম্পর্ক কি এখানেই শেষ হয়ে গেল নাকি শুধুমাত্র নামটা আর ধরনটা বদলে গেল'?!?!? তাই যে কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে কোন পরিস্থিতিতেই আমাদের উচিৎ সুদূর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই যে কোন কথা বলা বা পদক্ষেক নেওয়া।হোক সে ছেলেবেলা থেকে গড়ে ওঠা কোন মজবুত বন্ধুত্বের সম্পর্ক অথবা কোন ভালবাসার সম্পর্ক,পারিবারিক সম্পর্ক অথবা কোন অচেনা মানুষের সাথে হঠাৎ জন্ম নেওয়া কোন অচেনা সম্পর্ক যে কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রেই আমাদের সবসময় সচেতন থাকা উচিৎ যে আমাদের সম্পর্কগুলোর কোন ধারাবাহিকতায় আমরা প্রবাহিত হতে চাই।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×