সরকারী চাকরি নিয়ে দেশে নানান আকথা-কুকথা চালু আছে। যেমন সরকারী কর্মচারীরা অফিসে গিয়েই খালি ঘুমায়। কোন কাজ করে না। দুপুরে ১২/১ টা বাজলেই বাসায় চলে যায় আরো সব কুকথা। জানি না কতটা সত্য আর কতটা মিথ্যা। তবে আমি আজ একটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
ক্যাডার ভিত্তিক সব সরকারী চাকরির একই লেভেলে বেতন কিন্তু সমপরিমান। যেমন কেউ যদি প্রথম শ্রেণীর পদে ডাক্তার হিসাবে চাকরিতে ঢুকে তার মূল বেতন শুরু হবে ১১,০০০ টাকা দিয়ে। ঢাকা শহরে বাস করলে বাসা ভাড়া বাবদ এর মূল বেতনের ৫৫% (৬০৫০ টাকা আসে ) বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন। ঢাকা শহরের বাইরে বাড়ি ভাড়া ভাতা আরো কম হবে। চিকিৎসা ভাতা পাবেন ৭০০ টাকা। শিক্ষা সহায়ক ভাড়া পাবে যদি সন্তান ১টা হয় তাহলে ২০০ টাকা ২ টা হলে ৩০০ টাক।
এবার আসি কর্তনের ব্যাপারে। সাধারণ ভবিষ্য তহবিলে মূল বেতনের কমপক্ষে ১০% কাটতেই হবে। এ টাকা চাকরি শেষে তুলে নেয়া যাবে। এ ছাড়া ৪০ টাকা ও ৫০ টাকা হারে মোট ৯০ টাকা চাদা দিতে হয়। এই হল হিসাব। হিসাব মতো প্রথম বার চাকরিতে ঢুকলে ১৬,৬৫০ টাকার বেশী বেতন পাওয়া সম্ভব নয়।
এই ১৬,৬৫০ টাকা দিয়ে ঢাকা শহরে কেন অজ পাড়াগায়েও আজকাল আর বেচে থাকা সম্ভব নয়।
কে বলেছে আপনাকে চাকরি করতে ? চাকরি ছেড়ে দিন না।
কেউ কেউ একথা বলতেই পারনে। তাতে কি কেউ চাকরি ছাড়বেন?
এবার আরেক প্রসঙ্গে আসি। অনেকেই আছেন যারা কোন বেতন চান না কেবল চেয়ারটি চান । কিংবা চেয়ার নয় কেবল রাবার সিলটি চান। বেতন তারা কামাই করে নেবেন। বাংলাদেশে এমন সরকারী কর্মচারী অনেক আছেন যারা বেতনের টাকায় চলেন না। তাদের আয় অনেক। সরকার তাদেরকে বেতন দেন তারা কেবল অফিসে যাতায়াত করেন এই জন্য। তাদের আসল টাকা তারা নিজেরাই কামাই করে নেন।
এক জন ডাক্তার যার মোট বেতন ১৬,৬৫০ টাকা বা এর কম তিনি কিন্তু ঠিকই অনেক টাকা আয় করেন। ডাক্তার হাসপাতালে রোগী ঠিক মতো দেখেন না। নিজের চেম্বারে দেখেন। আমি উপজেলা হাসাপাতালে গিয়ে দেখেছি- ডাক্তারের বাসায় সন্ধ্যায়ও রোগীদের ভিড়। এমনকি খুব সকাল বেলায়ও রোগীদের ভিড়। এই রোগীগুলোকে কি সকাল ৯টা -৫টার ভেতর দেখা যেত না? অবশ্যই যেত। তাতে তো আর অতিরিক্ত টাকা পাওয়া যেত না।