২০/৩০ রানে নয়, ১৬০ রানের বিশালললল ব্যবধানে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ কে পরাজিত করলো বাংলাদেশ। এর আগের জয়টিও বিশাললল না হোক বিশাল বলাই যায়( ৭ উইকেটের জয়)। ঠিক যেনো নাকানি চুবানি দেয়া হচ্ছে এককালের প্রতাপশালী দলটিকে। সাবাশ বাংলাদেশ।
কিন্তু সত্যি বলতে কি এমন জয়েও আমার ঠিক মন ভরলো না। খেলায় যদি প্রতিদ্বন্দিতা না থাকে তাহলে আর খেলা দেখে মজা কি বলেন ?
ওয়েষ্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ডের মত মিনোজদের বিরুদ্ধে জয়ে তাই এখন আর তেমন মজা পাই না। যেমনটা পেয়েছিলাম ৯৭ এর আইসিসি জয়ে। ৯৯ তে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতার সুবাস পাচ্ছিলাম তখন মনে আছে একটা করে উইকেট পরছিল আর সোফার বালিশ পিটাচ্ছিলাম। অতপর: বালিশখানা নিজের প্রানখানা অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে দিয়েছিল অবিস্মরনিয় একখানা জয়। সাবাশ বাংলাদেশ।
কার্ডিফে অষ্ট্রেলিয়া করেছিল ২৫০ রান। অষ্ট্রেলিয়া যখন ১৫০ রান পার হচ্ছিল তখন ভাবছিলাম ওয়ানডেতেও টেষ্টের মত ডিক্লেয়ার করার সুবিধা থাকলে ভাল হত। কারন শুধু তখনকার সময়েরই না বরং ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা সব বোলার ম্যাকগ্রা, গিলেস্পি ওর্য়ানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মত দলের জয় পাওয়া অলীক কল্পনা। ধারনা ছিল ১০০ রানের নিচেই অলআউট হবে বাংলাদেশ। তাই অনেকক্ষন খেলা দেখিনি। মনে আছে বাংলাদেশ যখন ২০০ পার হচ্ছিল তখন খেলা দেখা আবার শুরু করি। তখনও ৫০ রান বাকি আছে। আমার স্বপ্নতো দূরের কথা দূস্বপ্নেও তখনও আসেনি বাংলাদেশ জিততে চলেছে। তাই মাঝে মাঝেই এই চ্যানের ঐ চ্যানেল ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। যখন ২২০ রান পার করলো তখন ভুরু একটু একটু করে কুচকানো শুরু করলাম। ব্যাপারটা কি ? উইকেটের দিকে তাকালাম ঠিক মনে নাই তখন কয়টা পরেছিল কিন্তু খুব বেশি নয় দেখে কত ওভার বাকি আছে দেখলাম। আর তখনি শিরদারা দিয়ে যেন একটা ঠান্ডা বাতাস চলে গেলো। যত রান দরকার জেতার জন্য তার থেকে ৫/৭ টা বল বেশি অথবা সমান বল আছে। কি উত্তেজনা....কি আতংক.. ভাষ্যকার আতাউর রহমানকে দেখলাম ঘামাচ্ছেন আর কে যেন তাকে বাতাস করছে। উফ..জানি না কার কার মনে আছে সেই দৃশ্য..উফফফ কি ভিশন উত্তেজনা।
এরপরে মনে পরে দেশের মাটিতে ভারতকে হারানো কথা। মাশরাফির দূর্দান্ত বলে বেহুদা শেহবাগ কাইত.....হি...হি..হি। কিন্তু চোখে লেগে আছে মাশরাফিরই স্লিপে নেয়া ক্যাচখানা। প্রবল আক্রোশে বলটা ছুড়ে ফেলেছিল। ঠিক যেনো আজকে খাইছি তোদের মনোভাব। হুমম...খেয়েই ফেলছিল সেইদিন আমাদের প্রিয় মাশরাফি।
ওয়েষ্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে সাউথ আফ্রিকাকে ২৩০ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। অষ্ট্রেলিয়ার মত ভেবেছিলাম খুব সহজেই বাংলা ব্যঘ্রের ভবলীলা সাংগ হবে। কিসের কি উল্টা দেখি এক থাবড়া মেরে আফ্রিকান সিংহকে কুপোকাত করে দিয়েছে।
দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। পুরো ঢাকাকে অসাধারন ভাবে সাজানো হয়েছে। চারদিকে কেমন যেনো একটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব সাথে হাজারো আলোকমালা। ছেলে বুড়ো মহিলা সবাই স্বাধীনভাবে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে। সবাই খুব সুখী সবাই খুব আপন। তখন মনেই হচ্ছিলা আমাদের এই দেশে এত এত সমস্যা। এর মাঝেই প্রবল উত্তেজনা আর শিহরনে কাপিয়ে ইংলান্ডকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। আনন্দ আর আনন্দ সাথে বেশুমার উত্তেজনা।
গেল এশিয়াকাপেও ভাবিনি বাংলাদেশ এতদূর যাবে। ফাইনালে হারার পরও একটু মন খারাপ করিনি। বরং গর্ব হচ্ছিলো এত উত্তেজনাময় খেলার কারিগর বাংলাদেশ ভেবে।
জানিনা এত এত স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ দেখে ফেলার কারনেই কিনা এখন ছোট ছোট দলগুলার বিরুদ্ধে জয়ে কোনো মজা পাইনা। সেইসব ম্যাচগুলোর মত স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ রোজ রোজ দেয়া সম্ভব নয় জানি আর তাই বলেই একটা লিষ্ট করলাম কার কার বিরুদ্ধে জয়ে আনন্দ আছে তার।
যেসব দেশের বিরুদ্ধে জয়ে আনন্দ পাবো।
১। ভারত
২ অষ্ট্রেলিয়া
৩।পাকিস্তান
৪। ইংলান্ড
৫।সাউথ আফ্রিকা
তোরা খারা আইতাছি তোগো খাইতে
যেসব দেশের বিরুদ্ধে জয়ে আনন্দ নাই।
১। শ্রীলংকা।
২। ওয়েস্ট ইন্ডিজ
৩।নিউজিল্যান্ড
৪।জিম্বাবুয়ে।
এদের বিরুদ্ধে জয় এখন যদিও নিয়মিত না কিন্ত জয়/পরাজয় তেমন একটা স্পর্শও করে না।
তামিম মনে হয় তার একটা জুটি পেয়ে গেছে। আনামুল হক বিজয়। খেলা দেখে মনে হয়েছে অনেকদূর যেতে চায়। সবাই দোয়া করবেন আর ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।