মেঘ বোধ হয় আকাশে স্নান করে ভেজা লুঙ্গিটা ঝারা দিয়েছিল পৃথিবীর দিকে। আমি যদি মেঘের সূর্যটিচার হতাম তবে প্রাইমারি কাদির স্যারের মত পাঞ্জাবীর হাতার নিচে লুকিয়ে নিতাম লাঠি এবং আচ্ছা করে আলোর বেত দিয়ে পিটিয়ে লাল করে দিতাম তার মুখ।
আমার শৈশব টিচারগন বড় নিষ্ঠুর ছিল। নারায়ণ স্যার একজন পড়া না পারলে সবাইকে পিটিয়ে ছিঁড়ে দিতো নিউজপ্রিন্টের বই। মমতাজ স্যার কুমড়োচেঙ্গি। আমিনের কান মলা। আর হেড স্যারের জোড় বেত। সে কঞ্চি আমরাই নিয়ে আসতে হতো বাড়ি থেকে। শুধু আপা দাঁড় করিয়ে রাখতেন টেবিলের পরে। কত শিশুর চোখ থেকে ভয়ংকর ইশকূলের দিকে তাকিয়ে বৃষ্টির মত জল ঝরে যে বৃষ্টিতে হেলিকপ্টার চলে আসে কলেজের মাঠে।
ঘরেও ছিল এক পাগলা হুজুর ছায়ার সঙ্গে কথা বললে মারতো বড়। একবার বাড়ি দিয়ে কান ফাটিয়ে দিয়েছিল বড় মিয়ার ছেলের; ফলে সেই দিনই ট্রাংক উঠেছে ভ্যান গাড়িতে। এই মোস্তাফার সঙ্গে গামাছি তারানোর আশায় আমরা একবার বৃষ্টিতে ভিজে ছিলাম।
মেঘের বধূ চাল ধোয়া সাজি কাঁখে দ্রুত পায়ে আমাদের গ্রাম দিয়ে বুঝি গিয়েছিল। যখন ফিরে এসেছি দুপুরে খাবার খেতে আধ খোরাকি কামলা খাটার পর। সে আজ পড়শি ভাবির সঙ্গে কয়নি গল্প কথা । বউ আমাকে ভয় পায় ভাবলেই নিজেকে সমিতির সভাপতি-সভাপতি লাগে।
(’দুধভাই’ গ্রন্থে প্রকাশিত)