somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ সালে একদল লোক হিংস্র হায়েনা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ, হাতে হাত মিলিয়ে পাকিস্তান রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা পাকিস্তানিদের দোসর হিসাবে এহেন কুকাজ ছিল না যা করে নাই। সেই সবের প্রমান তাদেরই পত্রিকা সংগ্রামের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে। এখন তারা সবাই সাধু সেজেছে!

জাতির জনক সে সময়ে সরাসরি কুকর্মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। সমস্ত কুকর্মের হোতা, তাদের নেতাজি, পালিয়েছিলেন দেশ ছেড়ে। আর সাঙ্গপাঙ্গগুলো লুকিয়ে ছিল দেশের ভেতরে। অনেকে আত্মপ্রকাশ করেছে ভিন্ন নামে, ভিন্ন পরিচয়ে। ওয়াজ করার নামে অনেকে নতুন ভেক ধরেছে।

জাতি এবং সমাজের সামনে পাহাড়সম সেই দেশ গঠনের কঠিন দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের সেই বিচার শেষ করতে পারেন নাই জাতির পিতা। কেননা, যুদ্ধোত্তর একটি দেশের পুনর্গঠন সহজ কোন কাজ নয়। এক পর্যায়ে তাঁকে বাধ্যহয়েই অনেক পাকিস্তানপন্থী আমলাকে কাজে নিয়োগ করতে হয়েছিল। আমাদের দেশের সেই সময়ের বাস্তবতায় এছাড়া আর কোন উপায়ও ছিল না।

পরে জাতির পিতা সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেছিলেন, আশা করেছিলেন যে যারা একাত্তরে দেশের বিরুদ্ধে গিয়েছে, তারা হয়ত পাপবোধ থেকে পুনরায় দেশের ডাকে পাপের অনুশোচনা থেকে অতীতের ভুল বুঝতে পারবে।

কিন্তু জাতির পিতা যা জানতেন না, তা হল একজন মুক্তিযোদ্ধা সব সময়ে মুক্তিযোদ্ধা না, কিন্তু একজন রাজাকার সব সময়েই রাজাকার। এরপরে বাঙলাদেশের আধুনিকতার প্রবক্তা রাষ্ট্রপতি জিয়া জাতির পিতার পথেই অগ্রসর হলেন শুধু না, মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সেইসব রাজাকারদের পুনর্বাসন করলেন। তাঁর রাষ্ট্র পরিচালনায় এই ভুলের মাশুল আজও আমরা দিয়ে যাচ্ছি।

তবে জাতি হিসাবে আমরা ভেবেছিলাম, এমন সুযোগ পাবার পরে হয়তো রাজাকাররা মাফ চাইবে। কিন্তু অনেক বছর পার হয়ে গেল তারা মাফ চাইলো না। মাফ চাইবার কথা আসলেই তারা আরো গর্ব করে বলতে শুরু করল একাত্তরে তারা কোন ভুল করে নাই!

এরপরে গণ-আদালত হল। সেখানে অনেক তথ্য প্রমাণ আসলো যুদ্ধাপরাধের। কিন্তু তারপরেও সেই সব দুষ্কৃতিকারীরা, ভণ্ডরা তাদের মত থেকে এক চুলও নড়ল না। বরঞ্চ জাহানারা ইমামের উপরে তাদের সব রাগ উপচে গিয়ে পড়ল। ( ছোট্ট করে বলে রাখি, এই দেশে শহীদ জননী অনেক আছেন, তাই উনাকে আমি শহীদ জননী বলি না; তা হলে আরো হাজার খানেক শহীদ জননীকে হেয় করা হয় )

২০০১ সালে এই ভণ্ডরা বিএনপির কাঁধে চড়ে মন্ত্রী পর্যন্ত হয়ে গেল! দেশ ও জাতি অবাক হল ক্ষমতার লোভের সেই চূড়ান্ত প্রকাশ দেখে। এমন হবে কেন? কেন বিএনপি-র জামাত ছাড়া চলে না?

তাই তো ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ বর্তমান সরকারকে সেই রায় দিয়েই পাঠিয়েছে যেন একাত্তরের সেই অপরাধীদের ন্যায্য বিচার করা হয়। পুরো জাতি আজকে তাকিয়ে আছে এই বিচারের দিকে। আর পাপের এই ফল যে ভোগ করতে হবে, তা কখনোই এই অপরাধীরা চিন্তা করতে পারে নাই।

আজ তাই তারা বাংলাদেশে ইসলাম গেল, ইসলাম গেল রব তুলেছে! ধর্ম তাদের ব্যবসার বস্তু, ধর্ম তাদের খাওয়া পরার নিশ্চয়তা দেয়। সেই ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা দুনিয়ার সব কিছুই লুটে খেতে চায়। এই ভন্ডদের বিরুদ্ধে আজ জনগণ।

পাপের প্রায়শ্চিত্ত বলে একটা কথা আছে। দুনিয়াতেই আল্লাহ প্রায়শ্চিত্ত কিছুটা করিয়ে নেন। এরশাদ সাহেব তার একটা উত্তম উদাহরন। এখন শৌর্য-বীর্যে একদা গর্ববোধকারী ইসলামের ধর্ম ব্যবসায়ীরা জানে বাঁচার জন্যে মরিয়া হয়ে গেছে।

২০১২ সালের এই বিজয়ের মাসে, আসুন, আরেকবার আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নেই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা করবোই। ভলের মাশুল না দিয়ে জাতি এগোতে পারবে না। সময় এসেছে নিজেদের ভুলের প্রয়াশ্চিত্ত করার।

প্রতিজ্ঞা করি এই বিচার আমাদের দেশে মাটিতে হবেই হবে। ধরে নিন এইটাই আমাদের নতুন প্রজন্মের ছোটখাট মুক্তিযুদ্ধ
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×