somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“বয়াতি ভাল নাই রে বয়াতি ভাল নাই”। অকালেই কি চলে যাবেন বয়াতি গানের বটবৃক্ষ আব্দুর রহমান বয়াতি ?

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৩:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আব্দুর রহমান বয়াতি"।
“জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা এই ভবে” গাইতেছিলেন বিছানায় শুয়ে শুয়ে একেবারে কাঠভাঙ্গা গলায়।তবে এই গলা দিয়েই একদিন ধরতেন মরমী সুর।
বাউল গান, জারি-সারি,লালন,হাসন সহ এক কথায় বাংলা আঞ্চলিক ও বাউল গানের প্রায় সকল শাখায় তার বিচরন। দেশ ও বিদেশের লাখো বাঙ্গালির মনে আদৌ গেথে আছেন এই বয়াতি। তিনি তার জীবনে দিয়েছেন অনেক, এক কথায় উদার করে দিয়েছেন নিজেকে আর আমাদের সত্যিকারের যেই সংস্কৃতি সেটিকে করেছেন সমৃদ্ধ এবং পরিচিত সকলের কাছে।

তবে আজ এই মানুষটি ভাল নেই অবস্থা খুবই শোচনীয় । হয়ত এই হতদরিদ্রের খবরটি আপনাদের চোখে পরেনি অনেক আভিজাত্ত আর নানা সমস্যার ভারে। একটি খাটে কম্বল গায়ে দিয়ে কাটে তার দিন, একেবারেই অবশ হওয়ার পথে তার বাম হাত এবং পা। হৃদরোগ এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছেন প্রচন্দ্রভাবে । চোখে দেখতে পাননা প্রায় একেবারেই । ডাক্তার যেই অপারেশন করতে বলেছেন সেটা করতে পারছেন না টাকার অভাবে। বলা চলে তাদের জন্য এটা এখন স্বপ্ন।

মিডিয়াগুলি নিসচুপ এই ক্ষেত্রে জানিনা কোন এক অজানা কারনে। হয়ত কারন হতে পারে যে এই গ্রামবাংলার বয়াতি আর বয়াতি গান দিয়ে আর যাই হোক বাণিজ্য সম্ভব হবে না বা তার কাছে আমাদের আর কিছু পাবার নেই। হয়ত আমি ভুলও হতে পারি তবে মিডিয়া এর আগে যেই ভাবে বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের জন্য দাঁড়িয়েছিল সেই ভাবে এই ক্ষেত্রে তারা নিসচুপ ভুমিকা পালন করছে তা বোঝাই যাচ্ছে। হয়ত মিডিয়ার প্রতি আশা আমাদের কিছুটা বেশী তাই সেই দাবি থেকে একটু বেশী বলে ফেললাম।

যাই হোক মিডিয়া হয়ত আমাদেরকে জানাতে পারতেন, তবে জানিয়ে কি বেশী একটি লাভ হত? মনে হয় না। কারন মানুষ যে আজ বড়ই পাষাণ।

আব্দুর রহমানের ছেলে জানান বিভিন্ন সময় সবাই পাশে দাঁড়িয়েছে কিন্তু পড়ে সেটা চালিয়ে যেটা পারেননি। সজল চোখে বলেন যে ডাক্তার বলেছে তার পিতাকে যদি বিদেশে নেয়া সম্ভব হত একটু উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য তাহলে হয়ত আরও কিছু দিন বাচে থাকতেন এই নিঃস্বার্থ মানুষটি। কিন্তু একজন বয়াতির ছেলের আর্তনাদ কি আমাদের উচুতলার মানুষের কানে পৌঁছুবে? রাখেন উচুতলার মানুষ আপনার আমার মতন মধ্যম তলার মানুষগুলি কি এগিয়ে আসবে ১০০টা টাকা নিয়ে? হয়ত কিছু আসবে তবে এই রকম কি ১০০০০ জন মানুষ পাবেন আপনি?

এখন কথা হল কেন দিব? পরকাল কেউ দেখেনি বয়াতিও জানেনা তার কি হবে মরলে পরে। তবে আমাদের এই চেষ্টা যদি দেখে যেতে পারেন আর সেই কল্যাণে যদি আর কয়টা দিন বেশী বাচতে পারে তাহলে হয়ত মরার সময় তার গলায় দুঃখ আর গ্লানির বদলে আনন্দের সুর থাকবে।

একবার চিন্তা করেন ভাই স্বার্থের চিন্তায় আমরা যেখানে এতই মগ্ন যে সব কিছুই এর চিন্তা থেকেই করি আর সেখানে এই মানুষটি ভালবেসেছেন শুধুই গানকে। সংস্কৃতির চর্চা করে গেছেন সাধকের মতন কোন কিছু পাওয়ার চিন্তা করেননি আর এখানেই বয়াতি করেছেন ভুল।

আসুন না এগিয়ে যাই একটু। আমার সামর্থ্য নেই বয়াতিকে এত টাকা দেয়ার। তবে পরিমাণটা হয়ত আমার জন্য অনেক বিশাল তবে আমাদের দেশের এমন অন্তত দশ শতাংশ মানুষ আছেন যাদের একেকজনের জন্য আসলেই একজন আব্দুর রহমান বয়াতিকে বাঁচানো হাতের মুয়ার মতন। আর এমন অন্তত পঞ্চাশ ভাগ মানুষ আছি আমরা যারা যদি একটু একত্রিত হই তাহলে হয়ত “বয়াতি” বাচবে ।

মানবতার টানে মানুষ মাননিক বলেই সে মানুষ। তাই শুধু এতোটুকুই বলবো “বয়াতি ভাল নাই রে বয়াতি ভাল নাই” ।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৩:৪৪
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×