somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলুন ঘুরে আসি কুয়াকাটা থেকে 8-| একটি পরিপূর্ণ ভ্রমন গাইড সাথে ছবি ব্লগ

৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলে আসলো শীতকাল , অনেকেই এ সময়কে বলেন ট্র্যাভেল সিজন। তাই হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের অপূর্ব সুন্দর এক সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা থেকে ।



ঢাকা থেকে কিভাবে যাবেনঃ

কুয়াকাটা আপনি দুই পথে যেতে পারেন । নদী পথ আর সড়ক পথ ।
নদী পথে যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে ঢাকা সদর ঘাট । সেখান থেকে প্রতি দিন পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ৪ টি অত্যাধুনিক লঞ্চ । তবে লঞ্চে যেতে চাইলে অন্তত একদিন আগেই লঞ্চের টিকিত কেটে রাখা ভাল । সিঙ্গেল কেবিন ভাড়া লঞ্চভেদে ৯০০ - ১১০০ টাকা , ডাবল কেবিন ১৮০০ আর ডিলাক্স (ফ্যামিলি) ২০০০ টাকা । এ ছাড়াও আছে লঞ্চের ডেক যার ভাড়া ২০০ টাকা । আপনি চাইলে লঞ্চেই রাতের খাবার অর্ডার করতে পারেন অথবা নিজের বাসা থেকে নিয়ে যেতে পারেন । লঞ্চের ভ্রমন খুব ই উপভোগ্য । আমি বাজি ধরে বলতে পারি লঞ্চের প্রথম ভ্রমন হলে আপনি আপ্লুত হয়ে পরবেন । লঞ্চ গুলো ঢাকা থেকে ছাড়ে বিকেল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার ভেতর । সকাল ৬ টা বা ৭ টা নাগাদ পটুয়াখালী পৌঁছুবেন । সকাল ৬ টা থেকেই প্রতি ১ ঘণ্টা পর পর কুয়াকাটার বাস ছেড়ে যায় পটুয়াখালী বাস স্ট্যান্ড থেকে । লঞ্চ ঘাট থেকে বাস স্ট্যান্ড এর ভাড়া ২৫ - ৩০ টাকা ।

সড়ক পথে যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে গাবতলি বাস স্ট্যান্ড । এসি , নন-এসি দুই রকম বাস সার্ভিস ই পাবেন । নন এসি ৫০০ টাকা আর এসি ৬৫০-৭০০ টাকা । সকাল ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত ৪ টা বাস ছেড়ে যায় ঢাকা থেকে । আর নাইট কোচ এর সময় শুরু সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১০:৩০ পর্যন্ত । আর গাবতলি থেকে দুই একটা বাস সরাসরি কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে ও ছেড়ে যায় তবে সেগুলোর সার্ভিস তেমন ভাল নয় । সড়ক পথে রাস্তার অবস্থা খুব ই ভাল । পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটার ভাড়া জন প্রতি ১০০ টাকা ।

** একটা জিনিশ অবশ্যই মাথায় রাখবেন , তা হল সন্ধ্যা ৫ টার পর আর কোনো বাস পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা যায় না ।

কুয়াকাটা কোথায় থাকবেনঃ
কুয়াকাটা থাকার জন্য অনেক হোটেল রয়েছে । ৩ স্টার মানের হোটেল আছে দুটো । তাছাড়া আছে সরকারি ডাকবাংলো । এ ছাড়া মধ্যম মানের অনেক ভাল হোটেল রয়েছে । সিঙ্গেল বেড এর ভাড়া এইসব হোটেল ৩০০ টাকার মত । আর ৬-৭ জন থাকার জন্য ৪ বেডের রুম নিতে পারেন যার ভাড়া পরবে ৮০০ টাকার মত । সব হোটেল গুলোই সৈকতের খুব কাছে ।

কোথায় খাবেনঃ
খাবার জন্য কুয়াকাটাতে অনেক রেস্তোরা রয়েছে , তবে অর্ডার দেওয়ার আগে অবশ্যই দামটা জেনে নেবেন ।

কুয়াকাটা গেলে যা দেখে আসতে কখনই ভুলবেন নাঃ
কুয়াকাটাতে দেখার মত অনেক কিছুই রয়েছে । সৈকতের কাছেই রয়েছে একটা বুদ্ধ মন্দির যা কিনা আপনার মন কেড়ে নেবে। এই বুদ্ধ মন্দিরের পাশেই রয়েছে কুয়াকাটার সেই বিখ্যাত কুয়াটি। পাশেই আছে রাখাইন মার্কেট । কেনা কাটা যা করার এখান থেকেই করতে পারেন । এখানে রয়েছ অসম্ভব সুন্দর সব তাতের কাজ । আর বার্মিজ আঁচারের পশরা । সৈকত থেকে ৬ কিমি দূরে মিছরি পাড়াতে রয়েছে ৩ তলা সমপরিমাণ উচ্চতার আরেক বুদ্ধ মূর্তি । সৈকতের ঝাউ বন থেকে কিছু দূরেই রয়েছে কুয়াকাটা ইকো পার্ক । খুব ই নয়নাভিরাম পার্ক । এছাড়া কুয়াকাটা থেকে ট্রলারে করে সাগরের মাঝখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন কিছু সময়ের জন্য সাথে দুধের সাধ ঘোলে মেটানোর মত দেখে আসতে পারবেন সুন্দরবনের কিছু অংশ ।
সূর্য উদয় হল সাগর পাড়ের আরেক সৌন্দর্য । যারা কুয়াকাটা আসেন তারা কেউ ই এই জিনিশ টা মিস করেন না । সূর্য উদয় দেখতে হলে আপনাকে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে এবং যেতে হবে সৈকত থেকে কিছুটা দূরে কাউয়ার চর নামক জায়গায় । যেতে পারেন মোটর সাইকেলে করে । সূর্য উদয় দেখার দৃশ্য যে একবার দেখেছে সে কখনো ভুলতে পারবে না । এছাড়া কাউয়ার চরে দেখতে পাবেন লাল কাঁকড়ার ছুটোছুটি । কুয়াকাটা তে রয়েছে জেলে পল্লী । সৈকতের পশ্চিম দিকে । চাইলে দেখে আসতে পারেন । আর সমুদ্রের পানি যদি গায়ে লাগাতে চান , তাহলে বিনা দ্বিধায় নেমে পড়তে পারেন সাগরের পানিতে । এখানে কক্সবাজারের মত চোরা বালি টাইপ কিছু নেই । আর কোনো চোরা খাদ ও নেই । সৈকতে যারা বাইক চালাতে চান তাদের জন্য ও আছে সুখবর । কিলোমিটার হিসেবে বাইক ভাড়া পাওয়া যায় । প্রতি কিলো ১০ টাকা । সব শেষে প্রিয়জনের সাথে এক মনে দেখে নেবেন সূর্য অস্তের সেই হৃদয় ছুয়ে দেওয়া দৃশ্য । কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল নির্জনতা । ঢেউ এর গর্জন , তীরে আছড়ে পরা আপনাকে অন্ন জগতে নিয়ে যাবে । সাগরের সাথে একাত্ম হয়ার এমন সুযোগ কখনো হারাবেন না ।
পোস্ট শেষ করার আগে দেখে নিই আমার তোলা কুয়াকাটার কিছু ছবি ।

















সবাই ভাল থাকবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:০০
৩১টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×