somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টেনশানে গলা শুকাইয়া আসতাছে। এক পোস্টে এত ভুলX(X(X(X(

৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শফিক সাহেবের আজ খুব দুখের দিন। তেরো বছর আগের এই দিনে তার স্ত্রী মারা যান। কিন্তু শফিক সাহেবের স্মৃতিতে বোধহয় এতদিনে ধূলার স্তর অনেক পুরো হয়েছে। তাকে যতটা দুঃখিত হওয়া উচিত তিনি ততটা দুঃখিত নন। বরং অন্যান্য দিনের চেয়ে তাকে আজ একটু বেশীই ফুরফুরে মনে হচ্ছে।

তার সামনে একটা খবরের কাগজ। এ বাড়িতে সাধারনত খবরের কাগজ রাখা হয় না। কিন্তু বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে আনানো হয়। যেমন পহেলা বৈশাখ, এক জানুয়ারি ইত্যাদি। কাগজ পড়ার মত কেউ নাই বলেই রাখা হয় না। আরো একটা উপলক্ষে খবরের কাগজ আনা হয়। তা হল প্রাইজবন্ডের ড্র।
শফিক সাহেবের কাছে ২১৬টা প্রাইজবন্ড আছে। প্রত্যেকবার ড্রয়ের পর এগুলো তিনি মিলিয়ে দেখেন। এই সময়টাতে তার চোখ চিকচিক করতে থাকে। দেখা পর্ব শেষ হয়ে গেলে তিনি গোমড়া গোমড়া মুখ করে বসে থাকেন। কোন নাম্বার মিললো নাকি জিজ্ঞেস করলে আলতোভাবে মাথা নাড়েন। যেন প্রাইজবন্ডের নাম্বার না মিলাতে তার বিরাট পাপ হয়ে গেছে।
এই সময় নিতু বলে, মন খারাপ করো না বাবা। দেখো পরেরবার ঠিকই মিলবে।

নীতু শফিক সাহেবের বড় মেয়ে। তার বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নীতুর শরীরে ভয়ংকর একটা অসুখ বাসা বেঁধেছে। ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করেও অসুখটা ধরতে পারছে না। তবে শফিক সাহেবের ধারনা অসুখটার নাম নীতু ঠিকই জানে। তার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছে।
খোকাও জানার কথা। কিন্তু কোন এক অদ্ভূত কারণে খোকা তার বাবার সাথে কথা বলে না। তের বছর আগে এই দিন থেকে আজ পর্যন্ত খোকা একটিবারের জন্যও শফিক সাহেবের সাথে কথা বলেন নি। কারণটা যে কি শফিক সাহেব একটু হলেও আঁচ করতে পেরেছেন।

[[খোকা কে তা জানতে হলে আগের দুইটা পোস্ট দেখতে হবে:(]]

শফিক সাহেব খবরের কাগজে চোখ বুলাচ্ছেন। কিন্তু এত মনোযোগ দিয়ে দেখার মত কি আছে কে জানে? আজকে কি প্রাইজবন্ডের রেজাল্ট আসছে?
নীতু চা নিয়ে এলো।
-অত মনোযোগ দিয়ে কি পড় বাবা?
-নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি।
-ও আচ্ছা।
শফিক সাহেব চায়ে চুমুক দিয়ে মুখ বিকৃত করে রাখলেন। যেন এমন জঘন্য চা কখনো খান নি। নীতুর অবশ্য তাতে কোন ভাবান্তর হল না। কারণ এইটা শফিক সাহেবের ডেইলি রুটিনের একটা অংশ। প্রতিদিনই এমন দেখে নীতু একদিন ইচ্ছা করেই খুব বাজে চা বানিয়ে নিয়ে এসেছিল। চিনির বদলে চায়ে ছিল হালকা লবণ। আশ্চর্যের ব্যাপার ঐদিনই শফিক সাহেব খুব তৃপ্তি করে চা খেলেন। এরপর থেকে এই নিয়মে চা বানানোর নির্দেশও জারি করা হয়েছিল। কোন এক অজ্ঞাত কারনে ঐ নির্দেশ আর বাস্তবায়িত হয় নি। সব বাবারাই মেয়ের বানানো চা খুব তৃপ্তি করে খায়।

শফিক সাহেবই বোধহয় পৃথিবীর একমাত্র বাবা যার কাছে মেয়ের হাতের চা খুব জঘন্য মনে হয়।
-বাবা বাসায় বাজার নাই। তোমাকে একটু কষ্ট করতে হবে।
চা শেষ করে বাজারের দিকে রওয়ানা দিলেন শফিক সাহেব। মুখ থেকে বিকৃতভাবটা তখনো যায় নি। পথে দেখা হল এলাকার চেয়ারম্যানের সাথে। এই টাইপ লোকেদের মধ্যে কোন ভ্যারিয়েশন থাকে না।
সবগুলো একই রকমের খারাপ হয়।
কেউ বেশী খারাপ আবার কেউ তার চেয়ে আরেকটু বেশী খারাপ। পার্থক্য এতটুকুই।

কিছুদিন আগে এই চেয়ারম্যান নীতুর জন্য একটা বিয়েয় সম্বন্ধ নিয়ে আসে। বর চেয়ারম্যানের ভাগিনা। নীতু অসুস্থ জেনেও তারা নীতুকে ঘরের বউ করে নিতে চায়। তাদের চাহিদা সামান্য। চার লাখ টাকা আর একটা মোটর সাইকেল।

এরপর থেকে চেয়ারম্যানকে এড়িয়ে যাওয়ারই চেষ্টা করে একরকম। কিন্তু আজকে একেবারে সামনে পড়ে গেল। চোখাচোখি হল কিন্তু কোন এক কারণে কেমন আছেন, ভাল আছি ছাড়া আর কোন কথা হলো না।

বাজার থেকে ফেরার পরই নীতুকে ভালোমতন রান্নাবান্না করতে বলা হলো। শফিক সাহেবের ধারণা, আজ মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী হিসাবে খোকার একবার আসা উচিত।
(আপাতত pause)


খোকা কি আসবে? তার কি আসা উচিত?:(:(
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৭
৫১টি মন্তব্য ৫১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×