দুই লক্ষ জননীর সরল চোখের জলে, ৩০ লক্ষ মৃতদেহে উর্বর ফসলের ভুমীতে আমি কোন রাতে এসেছিলাম । চারদিক স্বয়ংসম্পূর্ণ তবুও কিছুই ছিলনা, আমি বুঝিনি । আমি তখন আতঙ্কে কাদছিলাম! কেন এ খানে পৃথিবীতে আমাকে আনা হলো ? তখন আমি যাদের পণ্য তারা আনন্দে হাসছিল । কোটি কোটি গাছের সঙ্গমে, অনাবিল বর্ষাধারার আমন্ত্রণে , চন্দ্রের জয়উল্লাসে আসলে আমার জম্ম ।
গাছেদের পাশ দিয়ে হাটার সময় আমি মাথা নত করে থাকি, ভূমীতে কেবল এখন ক্যামিকেল বৃষ্টি, সাগরে বা নদীর জলে পেশাব করার জয় উল্লাস, আমি মুক ও বধির । বিটিভি’র খবরের আগে সুচনা সঙগীত-
সব ক’টা জানালা খুলে দাও না,
ওরা আসবে চুপি চুপি,
যারা এ এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ।
বড় দূরদর্শী গিতীকার । সেই কবে লিখেছিলেন সত্য কথন ।
শূভ্র মোলায়েম তুলা যন্ত্র সভ্যতার কল্যানে হয়েছে পরনের কাপড়, হয়েছে লাল-সবুজের বাংলাদেশের প্রতীক । আমার ভুমীতে যারা আগুন দিয়েছিল, আমার মাকে, বোনকে যারা ধর্ষণ করেছিল, যারা স্তুন কেটে নিয়েছিল আমার শিক্ষিকার, যারা যৌনাঙ্গে বেয়ানেট ঢুকিয়েছিল আমার আমার প্রতিবেশী খেলার সাথীর, যারা চোখ উপড়ে নিয়েছিল হৃদয়বান চক্ষু চিকিৎসকের, যারা গলা কেটেছিল পূর্ণাঙ্গ ভাবে ধর্ম পালন করা মোয়াজেনের তারাই ঘুরে বেড়িয়েছে শুভ্র তুলার লাল-সবুজ নিয়ে । “যারা এ এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ” তারা কখনও কখনও হয়েছে ফুটবল ঐ কালো প্রাণীদের গোলাপী লিপিস্টিক আর শাড়ীর আচলের তলে ।
কেমন আছো আমারা প্রিয় স্বদেশ । আমাকে তুমি জম্ম দিয়েও আমি বেজম্মা । অথচ বিলাসের জন্য যে নারী শরীর বিকিয়েছে, যে সন্তান মায়ের যৌনাঙ্গের দামে কিনছে অফসেট পেপার সে বড় বংশীয় ।
একদিন খুব সামনেই তাদের বিচার হবে , যারা ধর্ম ও মানবতাকে করেছে ধর্ষণ । আমি বেজম্মা হতে পারি কুলাঙ্গার নই । আমি সেদিন শহরের পথে পথে মিষ্টি বিলাবো, উন্নত শিরে বৃক্ষের সামনে গিয়ে দাড়াবো, বঙ্গপসাগরের জলে ওযু করে পবিত্র্র হবো । আমার যদি কান্না আসে সেদিন আমি কাদবো দ্বিতীয়বার । আনন্দ অশ্রু । নিজের পরিচয় ফিরে পাওয়ার আনন্দ অশ্রু ।