এক শীতের ছুটিতে থেকে গিয়েছিলাম হলে। শীত বাড়ে, হলের নিস্তব্ধতাও বাড়ে। এক সময় সারা হলে কেবল আমিই ছিলাম। সন্ধ্যাটা কাটিয়ে আসতাম চারুকলার সামনে। সেখানে লাবু ভাই বাঁশি বিক্রি করতেন, বাঁশি বাজাতেন। তার বাঁশি শুনতাম। তখন আইনস্টাইন নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করছিলাম। মাথার ভেতরে বস্তু-আলো-কণা-শক্তি ইত্যাকার নানা প্রকারের ভাবনাসুতো এক জটিল জাল বুনে তুলছিল। এমনি এক সন্ধ্যায় বাঁশি শুনতে শুনতে সেই মোহন-জালের অনুরণনের ভেতর এক অদ্ভুত অনুভূতি ভর করেছিল। সে অনুভূতি যেন এক মহাজাগতিক ধাঁধাঁর। একটা বলয়ে যেন আমরা সবাই বাঁধা পড়ে আছি। বলয়ের বাইরে শুধুই অন্ধকার। শুধু ওই মহাজাগতিক ধাঁধাঁই যেন অস্তিত্বের একমাত্র স্মারক; আর সব কিছু যেন আঁধারে মিশে গিয়েছিল। সেই ধাঁধাঁর সমাধান করতে গিয়ে আমরা যেন বার বার বক্রপথে কেবলই শুরুতে শেষ করি। সেই ঘোর লাগা সন্ধ্যার সেই অনুভূতি প্রকাশের চেষ্টা করেছিলাম বেশ কয়েকবার। গদ্যে চেষ্টা করে বুঝলাম সে অনুভবের গদ্যশরীর আমার পক্ষে প্রায় অসম্ভব। শব্দ-সুরের বেশ কয়েকটি বাতিল প্রয়াসের পর এমন একটি গান বেঁধেছিলাম। কিন্তু এখানেও সেই অনুভব অংশতই প্রকাশিতই হতে পারল।
আমরা কোথাও যাই না
কোথাও হাসিমুখ কোথাও ভাঙা বুক পথের চোখে ঘুম
ধরছি এইসব ধরছি বাস্তব
অথচ ‘কিন্তু’
কিন্তু পাল্লা নির্বিবাদ কই
অথচ
আমরা কেবল মেপে যাই
(অ)শূন্যে বিলীন সাপেক্ষবিহীন নিশ্চুপ নিনাদ
ভাবের প্রান্তিক ছন্দ-দোলনায় বোধের অগমন
ভক্তি রোচে না যুক্তি যান্ত্রিক যন্ত্রে গোলযোগ
দূরত্ব কোথায়
দূরত্ব এত
বিন্দুতে বিলীন
ক্ষুদ্র আমিরা বিশাল বিন্দুর কোথাও যাই না
অডিও লিংক [হোম প্রডাকশন, সাউন্ড কোয়ালিটি তেমন ভাল নয়]
http://soundcloud.com/achintya-2/rpzfcsahcueq
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯