আগুনে পুড়ে গেলো আমাদের সেলাই দিদিমণিরা । একথা বলছি কারণ গার্মেন্টস সেক্টরের অধিকাংশ কর্মীই নারী । সেলাই দিদিমণি নামটি ব্র্যান্ড শিল্পী জেমসের একটি গান থকে নেওয়া । যথার্থ নাম ।সারাদিন শুধু সেলাই করে যাওয়া যাদের কাজ । সামান্য শ্রমে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে ।দেশ উন্নত হচ্ছে । কিন্তু উন্নতি হল না সেইসব মানুষের ভাগ্য । বিনিময়ে তাদের জন্য আমরা যা করতে পারি তা হল মরার পর জীবনের মূল্য হিসেবে এক বা দুই লাখ টাকা দিয়ে হিসেব চুকিয়ে দেই । আরও একটা কাজ করি তা হল তদন্ত কমিটি গঠন । যা এবারো গঠন করা হয়েছে ইতিমদ্ধ । কমিটি একসময় রিপোর্ট দেবে । কিন্তু ততদিনে সব ব্যাস্ততার মাঝে সব ভুলে যাবে । তারপর আবার আগুন লাগবে । মিডিয়ার কল্যাণে আমরা তা জানতে পারবো । আবার একই রকম কাজ করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবো । নচিকেতার একটা গানের লাইনের কথা মনে পরে গেলো ‘ পরিসংখানে মাপে জীবনের ক্ষয় ক্ষতি , এমন প্রগতি চাই না ।” সত্যি জীবনকে এখন দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাপা হচ্ছে । আর মাপের বাহক হচ্ছে ‘টাকা’। কিন্তু কিন্তু কিন
কিন্তু এভাবেই চলতে থাকবে ? আমরা কি এই শিল্পটাকে ধংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারবো না । স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা সবাই চাই । এটা অধিকার। আগুন লাগার উৎস খুঁজে বের করেই দায়িত্ব শেষ না করে যদি আর যেন সেই উৎস থেকে আগুন না লাগে তার বেবস্থা করি তবে । যদি বের হবার বিকল্প রাস্তা থাকে তবে? যদি ভেতরে ধোঁয়া থেকে বাঁচতে আধুনিক সরঞ্জাম ব্যাবহার করা যায় ? এসব করাই যায় ।
ভেবে দেখি যদি আজ আমার কেউ ঐ গার্মেন্টসে কাজ করতো । আমার দিদি । তার লাশ পাবার জন্য বুক চাপড়ে কাদতে হতো । তারপর হাতে মোটা টাকা ধরিয়ে মিডিয়াতে জানিয়ে দেয়া হতো ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে । তবে? আমার দিদির জীবনের দাম টাকাতে নির্ধারণ হবে ? ঐ টাকা আমার মুখে রুচবে না । ওপর থেকে হতো দিদি বলবে ‘ কি পেলি তো কিছু , না মরলে পেতি ? ‘