somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুকুর ও জ্যোৎস্না

২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্প কবিতায় কাকের জলের মত স্বচ্ছ পানির পুকুরের বর্ণনা থাকে। ওইসব পুকুরের কথা মনে পড়লেই পুকুরে ঝাঁপ দিতে ইচ্ছা করে। আমার পুকুর ওইরকম না। আমার পুকুরের পানি টলটলে না, ময়লা। পুকুর এর চারপাশে কড়ই গাছ। কড়ই গাছের পাতা পানিতে পড়ে আছে অজস্র। পাড়ে কিছু কৃষ্ণচূড়া গাছও আছে। তবে যতটুকু লাল ফুলে ভরে থাকবে ভেবেছিলাম ততটা হয়না। কড়ই গাছের জন্যে কৃষ্ণচূড়া গাছ বাড়তে পারছেনা। তবে পুকুরের পানিতে কড়ই গাছ, মেহগনি গাছ বা কৃষ্ণচূড়া গাছের প্রতিবিম্ব দেখে মনে হয় পাড় ঘেঁষে থাকা জায়গার পানি সবুজ আর মধ্যপুকুরের পানি নীল। ওখানে শুধু আকাশের স্বাধীনতা।


আমি নীল অংশে থাকি। পুকুর খোঁড়ার সময়ই মাঝখানের কিছু জায়গা রেখে দিয়েছিলাম। পুকুরের মাঝে বাড়ি। কাঠের তৈরী, তাও আবার বেশ কায়দা করে দোতলা বাড়ি। নিচের তলায় তিনটা রুম, উপরে দুইটা। টীনের ছাদ। গরমের দিনে তাই উপরে খুব গরম, নিচের দিকেই তখন থাকা হয়। আর বর্ষায় চায়ের কাপ নিয়ে ঠিক দোতলায়, বারান্দার মত (আসলে একটা খোলা অংশ, টীন দিয়ে কোনরকমে ছাঊনি দেয়া) জায়গাটায় বসে থাকি। বৃষ্টি শুরু হলে টীনের চালে বৃষ্টির পানি পড়ার শব্দ, আবার পুকুরে পানিতেও অজস্র পানির ফোঁটা পড়তে দেখি। কোনটা বেশী সুন্দর ঠিক বলতে পারব না।


নীচতলার ওখান থেকে পুকুরে ছিপ ফেলারও ব্যবস্থা আছে। মাঝে মাঝে শখ হয় ছিপ ফেলি। ছিপ ফেলে বই পড়া আগে অনেক সৌখিন মানুষরা করত। আমি করি কারন আমার অনেক সময়ই কিছু করার থাকেনা। দুই জোড়া পায়রাও আছে এখানে। ছেড়ে রেখেছি, কিন্তু দেখা যায় দিনের বেশীরভাগ সময়ই টীনের চালের কাছেই ঘোরাঘুরি করে। সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে এখানে যখন থাকতে এসেছি তখন মোবাইল ফোন, টিভি সেট এসবের তোয়াক্কা করিনি। তবে ঠিকই এখানে ইলেক্ট্রিসিটির ব্যবস্থা করেছি। সপ্তাহ শেষে একবার করে বাজার করে আনতে হয়। এসব রাখার জন্যে তো রেফ্রিজেরটর দরকার। পুকুরের মাঝে আসা যাওয়া করার জন্যে ছোটমত একটা নৌকা আছে।


আধুনিকতার ছোঁয়া যতটা পেরেছি কম রাখার চেষ্টা করেছি। তবে একটা শখ পূরন করতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ করে কিছু ওয়ান-ওয়ে মিরর কিনে এনে দোতলায় একটা রুম বানিয়েছি, ওই রুমের ভিতরে শুয়ে শুয়ে বাইরের সব কিছু দেখব, কিন্তু কেউ আমাকে দেখবেনা। জানালার ফাঁক দিয়ে তো আকাশ-গাছপালা দেখা যায় কিন্তু এতে আমার হবেনা আমি জানতাম। এখনো যখন পূর্নিমা রাতে বিশাল চাঁদ ঊঠে, আমার পুকুরের চারপাশের গাছের দেয়ালও তাকে লুকিয়ে রাখতে পারেনা। আমি দুচোখ ভরে জ্যোৎস্না দেখি। একসময় খোলা মাঠে শুয়ে জ্যোৎস্না দেখার কথা ভাবতাম। এখন রূপালী জলরাশির উপর থেকে দেখি। দেখি জ্যোৎস্নালোকিত পৃথিবী।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৫৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×