somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই প্রতারক জিনের বাদশা গ্রেফতার!!!

২২ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে দুই প্রতারক জিনের বাদশা গ্রেফতার হয়েছে। নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের মকবুল হোসেন এর স্ত্রী মোছাঃ মমেনা বেগম (৩২) কে জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে মমেনা বেগমকে বিভিন্ন রকম প্রলোভন দেখিয়ে ২৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় জনতা টের পেয়ে কথিত জিনের বাদশা দুই প্রতারককে গণধোলাই দিয়ে ২২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার নাগেশ্বরী থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। কথিত জিনের বাদশারা হচ্ছে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হাতিয়াদহ গ্রামের মৃত তমছের আলীর ছেলে রমজান আলী (৪২) এবং রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার মাস্টার পাড়া গ্রামের শচীন চন্দ্রের ছেলে বলরাম চন্দ্র (৩৪)। এলাকাবাসী জানায় এই প্রতারকরা এভাবে বিভিন্নজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তবে কথা থেকে যাচ্ছে বিগত কয়েক বছর থেকে এই জীনের বাদশাদের বিভিন্ন ধরণের প্রতারণার কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা। বিভিন্ন অর্থলোভী মহিলা গুপ্ত ধনরত্ম পাওয়ার আশায় এই জিনের বাদশাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে গিয়ে নিজেরাই সর্বশান্ত হয়ে গেছেন। অনেক ইনছান তাদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য মিষ্টি খাবার হাদিয়া হিসেবে মোটা অংকের (জীনদের কাছে প্রায় তুচ্ছ) ২০/৩০ হাজার টাকা চেয়ে থাকেন। এই মহান জীনের বাদশাদের সন্তুষ্ট করে স্বর্ণে ভরা পাতিল পাওয়ার আশায় তাদেরকে মিষ্টি খাওয়ার জন্য উক্ত টাকা দিয়ে দেন। পরে যখন বুঝতে পারেন তাদের স্বপ্ন মিথ্যে তখন নিজের মাথা নিজেরাই আছরান।


আর কতকাল এই কথিত জীনের বাদশারা বাংলাদেশে রাজত্ব করবে? প্রশ্নটাকি জনগণের কাছে না এবার প্রশ্ন তুলছি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে। সরকার ইচেছ করলে গ্রাম পর্যায়ে জনসচেতনা বৃদ্ধি করে তাদের প্রতারনার হাত থেকে বাচাতে পারেন। কারন গ্রাম পর্যায়ে এখণ পর্যন্ত জনসচেতনা বৃদ্ধি পায়নি। তারা এই প্রতারক জীনের বাদশা সম্পর্কে না জানায় খুব সহজেই তাদের প্রতারানার ফাদে পা ফেলছেন। জীনের বাদশাদের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা অনেক পত্র পত্রিকা, টেলিভিশনে প্রচার করা হলেও দুর গ্রাম পর্যায়ে পেপার পত্রিকার ব্যবস্থা ও টিভি চ্যানেল নাই। তাই এই জীনের বাদশারা গ্রামের অশিক্ষিত মহিলাদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করে । এতে একদিকে যেমন পারিবারিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন অন্যদিকে অপরাধ বেড়েই চলেছে। তাই সর্বস্তরে জনসচেতনা বৃদ্ধির প্রয়োজন।


এবার দেখুন ভুক্তভোগী নিজেই থানায় যে ডায়েরী খানা করেছেন-

এই মর্মে এজাহার দায়ের করিতেছি যে, ১৬/১৭দিন পূর্বে রাত্রি অনুমান ০৩:০০ ঘটিকার দিকে আমার মোবাইল নাম্বারে একটি কল আসে যাহা মোবাইল নাম্বার ০১৭৬৫৭৫৩১৭১ আমি রিসিভ করিয়া সালাম দেওয়া মাত্র আমাকে বলে আমি জ্বীন জাতি, তুমি খুব ভাগ্যবতী, তুমি এক সপ্তাহের মধ্যে মহামূল্যবান জিনিস (৭টি স্বর্ণের পাতিল) পাবে। মিষ্টি খাওয়ার কথা
বলিয়া আমার নিকট ২৭,৪৭০/- (সাতাশ হাজার চারশত সত্তর) টাকা হাদিয়া চায়। আমাকে প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে ফোন করিয়া বলে আম্মাজী টাকা সংগ্রহ হইয়াছে? টাকা দিলে তুমি ৭টি স্বণের পাতিল পাইবে। আমি বিষয়টি আমার স্বামীকে সহ স্থানীয় লোকজনদের জানাই। গত ইং ২১/১১/২০১২ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪:০০ ঘটিকার দিকে একই নাম্বার হইতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন করিয়া বলে, আম্মাজী তোমার টাকা সংগ্রহ হইয়াছে। আমি বলি টাকা সংগ্রহ হইয়াছে। তখন সে আমাকে বলে আম্মাজী টাকাগুলি উক্ত তারিখ সন্ধ্যার পরে সন্ধ্যা অনুমান ০৭:০০ ঘটিকার দিকে বড়বাড়ী দাখিল মাদ্রাসার দক্ষিণ পার্শ্বে রাস্তায় জিগার গাছের নিকট রাখিয়া
যাও এবং সেখানে একটি মূল্যবান স¤পদ আছে তাহা নিয়া যাও। মূল্যবান স¤পদটি বাড়িতে রাখিলে ০৭টি স্বর্ণের পাতিল পাইবে। উক্ত বিষয়গুলি আমার সন্দেহ হওয়ার আমি আমাদের বাড়ির প্রতিবেশী আব্দুর রহিম মণ্ডল ও ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ আমিনুর ইসলামসহ আরও অনেককে জানাই।
আমাকে আবারও ফোন করিয়া বলে যে, আম্মাজী টাকাগুলি রাখিয়া এসেছো। আমি বলি রাখিয়া এসেছি। ইং ২১/১১/২০১২ তারিখ রাত্রি অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার দিকে অজ্ঞাতনামা ০৪(চার)জন ব্যক্তি বড়বাড়ী দাখিল মাদ্রাসার দক্ষিণপার্শ্বে স্তায় জিগার গাছের নিকট গিয়া টর্চলাইট দিয়া দেখি এবং একজন আমার কাছ থেকে ২৭৪৭০/- (সাতাশ হাজার চারশত সত্তর) টাকা গ্রহণ করে এবং আমাকে একটি মূর্তি দেয় (যাহা স্বণের বলিয়া জানায়)। আমি হাতে নিয়ে দেখি উহা পিতলের তৈরি মূর্তি। সঙ্গে সঙ্গে আমি
চিৎকার করিলে স্থানীয় লোকজন তাদের দুইজনকে আটক করে এবং দুইজন পালাইয়া যায়। আটক ব্যক্তিদের নাম ঠিকানার কথা জিজ্ঞাসা করিলে উল্লেখিত নাম ঠিকানা জানায় এবং পলাতক আসামী ১। আশরাফুল (৩৫), পিতা- মৃত ফজলার ২। রাজ্জাক, পিতা- মৃত নায়েব আলী, উভয় সাং- হাতিয়াদহ, থানাঃ গোবিন্দগঞ্জ, জেলাঃ গাইবান্ধা বলিয়া জানায় এবং তাহাদের বাকী দুইজন আমার উক্ত টাকা নিয়া পালাইয়া যায়।

(সূত্র: উপরের অংশটুকু আমার সাংবাদিক ভাইদের কাছে নেয়া আর বাকীটুকু আমার নিজের হাতেই এজাহার লেখা)
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×