somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অ আ আজকের লেখালেখি - ১৫৮ (আমাদের ক্রিকেট এবং আমাদের আবেগ)

২০ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা জাতি হিসেবে খুব ক্রিকেট পাগল । একসময় আমাদের মাঠে ঘাটে সবাই ফুটবল খেলা নিয়ে সবাই মেতে উঠত। আমি স্টেডিয়ামে গিয়ে মোহামেডান আবাহনীর ফাইনাল ম্যাচ দেখতে যেতাম। মোহামেডানের সর্মথক ছিলাম বলে মোহামেডানের গ্যালারীতে বসে প্রচন্ড উৎসাহ উদ্দীপনার নিয়ে খেলা দেখতাম। আজ সেগুলো সোনালী অতীত। আমাদের ফুটবল খেলার ভবিষ্যত বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে বলে আজকাল কেউ ফুটবল খেলা শিখতে চায় না।

জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ক্রিকেট অনেকখানি এগিয়ে গেছে। ক্রিকেটের জন্যে অন্তত বিশ্ববাসী জানতে পারে মানচিত্রে বাংলাদেশ বলে একটি দেশ আছে। বিশ্বের সব জায়গাতে সরকার নিযুক্ত বাংলাদেশী এম্বেসী রয়েছে যাদের কাজ হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাসপোর্ট নবায়ন করা এবং প্রবাসীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে দাওয়াত খেয়ে বেড়ানো। এজন্য বিদেশীরা আজও আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ইউ ফ্রম বাংলাদেশ? উইচ কান্ট্রি ইট ইজ? আমি তখন ৫২ থেকে আমাদের ইতিহাস টেনে আনি। ওরা তখন খুব মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনে তারপর বলে ওহ! ইউ গাইজ ফ্রম ইন্ডিয়া। আমি আবার তাদের ভুল সংশোধন করি, "ইন্ডিয়া ইজ আওয়ার নেইবর"। আজ ভারত, পাকিস্তান এর পাশাপাশি এশিয়াতে অন্যতম সেরা দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। ক্রিকেটের কল্যানে বাংলাদেশ একটি দেশের নাম সেটা সবাই জানে।

ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু বলে দাবী করে আসছে অথচ আমাদের ক্রিকেটরা ভারত থেকে কোন প্রকার সহায়তা পায় নি। আমাদের খেলেয়াড়রা কখনো ভারতে খেলার সুযোগ পায় নি। ভারতে রঞ্জী ট্রফির সমকক্ষ সকল ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা আমাদের অনেক দেশের অনেক খেলেয়াড়ের রয়েছে। এটির প্রমান সাকিব আইপিএল দেখিয়ে দিয়েছে। ভারত কখনো চায় নি বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতি করুক সেজন্য তারা বাংলাদেশের সাথে টেস্ট খেলতে নারাজ। বন্ধুদেশ ভারত আমাদের দেশের ক্রিকেটের অবদানের জন্যে কিছুতেই আগ্রহী নয় । ভারতের নজর আমাদের দেশের থেকে অর্থ উপাজর্নের বিষয়, সেজন্য বাংলাদেশে মিনি বিশ্বকাপের মতন টুর্নামেন্টের স্পন্সরের জন্যে সবাই ঝাপিয়ে পড়েছিল। অথচ সারা বছর ভারতের কোন খবর থাকে না, ভারতীয় মিডিয়াগুলো ব্যস্ত থাকে বাংলাদেশ নিন্দা নিয়ে সেজন্য ভারতের আদুরে বীরু আল্লাদ করে বলে, "ইংল্যান্ডতো আর বাংলাদেশ নয় যে বলে কয়ে একদিনে বিশ উইকেট নিব"।

তবে আমাদের দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হবে। আশার কথা, চারদিনের লিগ ম্যাচ হচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে, একটা ক্রিকেট জাতির শিকড়। আমাদের সেই শিকড়টা খুবই নড়বড়ে। সেইজন্য আমাদের সর্বশেষ টেস্টটা খেলেছিলাম এগারো মাস আগে। আমরা এক সহজ ম্যাচটা হাতছাড়া করে হেরে গেলাম। এখানে কাকে দোষারোপ করবেন, ব্যাটসম্যান নাকি ভাগ্যকে । টেস্ট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর ক্রিকেটারদের বয়স গড়ে ত্রিশ ছুইছুই এবং একেক জন কমপক্ষে পঞ্চাশের কাছাকাছি টেস্ট খেলে ফেলেছে এবং বাংলাদেশের টেস্ট খেলোয়াদের বয়স গড়ে পঁচিশ হয় নি। গড়ে খুব বেশী হলে দশটা করে টেস্ট খেলেছে। এই পরিসংখ্যন হিসেবে আমাদের রেজাল্ট খুব স্বাভাবিক। আমাদের ইনিংসে হেরে যাওয়াটা আমাদের ক্রিকেট ব্যাক্তিত্বদের অব্যবস্থাপনার প্রতীক। দীর্ঘ পরিসরের জন্যে অভিজ্ঞ এবং মানসিকভাবে বয়সের সাথে ভারসাম্য থাকা ক্রিকেট খেলোয়াড় বানানো হচ্ছে না। প্রতিবার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে দল বানানো হচ্ছে, টুয়েন্টি টুয়েন্টি এবং একদিনের ক্রিকেটের আদলে টেস্ট দল বানানো হচ্ছে। সেই জন্যে আমাদের টেস্ট খেলাগুলোতে প্রতিটা টেস্টের প্রথম দিন সবাই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে ওভার প্রতি গড়ে ৭ রান করে তুলে ফেলছে এবং নিজেরাই দেড় দিনের ভিতরেই অল আউট হয়ে যাচ্ছে। প্রথম ইনিংসে ভালো খেলে ফেলাতে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছে খেলোয়াড়রা তাই দ্বিতীয় ইনিংসে গোল্ডেন ডাক পেয়েও কোন অনুতাপ হচ্ছে না। এরকম ঘটনা অহরহ হচ্ছে। কেননা, প্রচন্ড মানসিক চাপ সামলানোর মতন বয়স হওয়ার আগে তাদের বলির পাঠা বানিয়ে পাঠানো হচ্ছে। যারা দল বানাচ্ছেন তারা আবেগের তোড়ে ভেসে গিয়ে দল বানাচ্ছেন। অতঃপর রেজাল্ট শূন্য । আর মাঝখানে আশাহত হচ্ছি আমরা ক্রিকেটকে ভালবাসি যারা।


১৮ ই নভেম্বর,২০১২
--------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজেক্ট ১৫৮/৩৬৫

(বিলম্বে আপলোডের জন্যে দুঃখিত)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৪৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×