somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাশকতার কলকাঠি বুয়েট থেকে

১৭ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাশকতার কলকাঠি বুয়েট থেকে
যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালে অরাজকতার নির্দেশ দেয়া হয় ইন্টারনেটে
নজমূল হক সরকার, হালিম মোহাম্মদ ও মুরাদ হোসেন : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) নিয়ন্ত্রণ করছে জামায়াত-শিবির ও হিযবুত তাহ্‌রীর। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ ভাগ শিক্ষক জামায়াত ও হিযবুত তাহ্‌রীর সমর্থক বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রযুক্তির দিক থেকে দেশের শীর্ষ এ প্রতিষ্ঠান থেকেই নিরাপদে ইন্টারনেটে ই-মেইল ও ফেসবুক ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালসহ অরাজকতা সৃষ্টিতে কাজ করছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নানা ধরনের নাশকতার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এমন ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে বুয়েটের শিক্ষক, ছাত্র, গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের কাছ থেকে।
ছাত্র শিবিরের বুয়েট শাখার সভাপতিসহ কয়েকজন নেতা ফেসবুক, ই-মেইল ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে কয়েকজন প্রভাবশালী শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করার তথ্য ও প্রমাণ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রয়েছে। জামায়াত-শিবির কীভাবে বুয়েটে আন্দোলন ও নাশকতা করবে, এরও পরিকল্পনা এঁটেছে। গ্রুপ করে কয়েক দফা বৈঠকে কর্মপন্থা নির্ধারণের বিভিন্ন তথ্য ও চিত্র পাওয়া গেছে।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুয়েটে প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষকের মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষক জামায়াত-শিবির ও হিযবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। নেতৃস্থানীয় শিক্ষকরা হচ্ছেন- যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত কারাবন্দি গোলাম আযমের তৎকালীন দেহরক্ষী বর্তমান শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব রাজ্জাক, তার স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া, মোহাম্মদ আলী, ফখরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, আফসানা ৱিগ্ধা, দীপ্তি ও বদরুল আমিন। তাদের নিয়ন্ত্রণে বুয়েটের ছাত্রাবাসের প্রায় অর্ধশত কক্ষ জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে নাশকতার আশঙ্কা করছে অনেকে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, বুয়েটে শিক্ষকদের মধ্যে ২২ ভাগ শিক্ষক বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী, ৭০ ভাগ শিক্ষক বিএনপি-জামায়াত ও হিযবুত তাহ্‌রীরের আদর্শপন্থী। অবশিষ্টরা নিরপেক্ষ মনোভাবাপন্ন এবং যেদিকে পরিবেশ অনুকূল মনে করেন সেদিকেই অবস্থান নেন।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) জামায়াত-শিবির ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের কর্মকাণ্ড বেপরোয়াভাবে চালানো হচ্ছে। বুয়েটের কয়েকজন শিক্ষকদের বাসা ও আবাসিক ছাত্রাবাসের প্রায় অর্ধশত কক্ষে অবস্থান করছেন শিবিরের ক্যাডাররা। ছাত্রাবাসে বসেই ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে চলছে জামাত-শিবিরের কার্যক্রম। তাদের সঙ্গে বুয়েটের বেশিরভাগ শিক্ষক সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ জড়িত থাকার অভিযোগ নিশ্চিত করে এসব শিক্ষক-ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। এ কারণে জামায়াত-শিবির মরিয়া হয়ে এখন তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরা সারাদেশে অস্থিতিশীল করে তুলতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি দেশব্যাপী জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব চালানোর সময় রাজধানীতে আটক শিবির ক্যাডার বুয়েট ছাত্র শফিকুল ইসলামের কম্পিউটার, ফেসবুক, ই-মেইলসহ কাগজপত্রই প্রমাণ করে দিল বুয়েটে জামায়াত-শিবির গড়ে তুলেছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। যেখানে একসঙ্গে কাজ করছে হিযবুত তাহ্‌রীর। ওই শফিকের কক্ষ থেকে গান পাউডার, রাম দা, ছোরা, হকিস্টিক, লাঠি এবং একাধিক ব্যক্তির পাসপোর্ট, সিডি এবং মৌলবাদী সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে লেখা বিপুল পরিমাণ বই জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলামসহ শিবিরের ৪ ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া বুয়েট আহসান উলৱাহ হলের শিবির ক্যাডার আমিনুল ইসলামের ১০৮ নম্বর কক্ষ থেকে গান পাউডার, রাম দা, ছোরা, হকিস্টিক, লাঠি এবং একাধিক ব্যক্তির পাসপোর্ট, সিডি, মৌলবাদী সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে লেখা বিপুল পরিমাণ বই এবং চাঁদা আদায়ের রশিদ বইসহ সংগঠনের কাগজপত্র জব্দ করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে শিবির ক্যাডারসহ ৭ জনকে। এদের ৪ জনই বুয়েট শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের হিযবুত তাহ্‌রীর ক্যাডার স্বীকার করে পুলিশকে বলেছে, জামায়াত-শিবিরের কার্যক্রমে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা জামায়াত-শিবির ও হিযবুত তাহ্‌রীরের ক্যাডার বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, বুয়েট তাদের কার্যক্রমের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। তাদের সঙ্গে বুয়েট শিক্ষকদের মধ্যে শতকরা ৭০ জনই তাদের পন্থী। বুয়েটের আন্দোলন ছিল জামায়াত-শিবিরের নীল-নকশা। এসব শিক্ষকদের আশ্রয়ে থেকেই তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বুয়েটে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষক বলে দাবি করলেও শিবির ক্যাডারসহ পুরো শিবিরের সঙ্গে অধিকাংশ শিক্ষকের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকার প্রমাণ পাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কদিন আগে যেসব শিক্ষক শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে ই-মেইল ও ফেসবুকের মাধ্যমে মিলিত হয়ে শিক্ষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা জামায়াত সমর্থক। অথচ তখন তারা বলেছিলেন, এ আন্দোলন মৌলবাদীদের নয়, বুয়েট রক্ষার। লালবাগ-চকবাজার (জোন) উপপুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, বুয়েটের আবাসিক ছাত্রাবাসে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা আত্মগোপনে রয়েছে। এ সংবাদে অভিযান চালিয়ে ছাত্রসহ প্রায় একশ জন শিবির ও হিযবুত তাহ্‌রীরের ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে আনা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে- গান পাউডার, রাম দা, ছোরা, হকিস্টিক, লাঠি, একাধিক ব্যক্তির পাসপোর্ট ও সিডি। পাশাপাশি মৌলবাদী সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে লেখা বিপুল পরিমাণ বই, চাঁদা আদায়ের রশিদবইসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। বাকি ক্যাডারদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বুয়েটের নিরাপত্তায় ফোর্স ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

বুয়েট উপাচার্য ড. এসএম নজরুল ইসলাম বলেন, এখনও জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বুয়েট থেকে বীরদর্পে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তাদের কেউ কেউ গা ঢাকা দিয়েছে। আবার কেউ ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে। বুয়েটে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে তিনি সরকারসহ দেশবাসীর সহায়তা কামনা করেন
Click This Link
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×