ইসলামে পীর তন্ত্র বলতে কিছু নেই। যেখানে এসব দেখবেন চোখ বুজে ধরে নিবেন এসব ভন্ডামী। পারলে প্রতিহত করুন, মানুষকে এসব ভন্ডামী থেকে সর্তক করুন। অসল পীর বা নকল পীর দূরে থাক, এদেরকে মুসলমান বলা যাবে কিনা সন্দেহ আছে। এরা মানুষকে আখিরাতে পার করানোর কথা বলে, কিন্তু এরা যে নিজেদের জায়গা জাহান্নাম করে নিয়েছে।
পীরদের মধ্যে যে নিজেকে হক্কানী পীর বলে দাবী করেন মাওলানা সৈয়দ মোহম্মদ এছহাক সাহেবর আক্বীদা দেথুন:
১. আল্লাহর আন্দাজ নাই... (ভেদে মারেফাত, ১৫পৃ
২. শরিয়ত কামেল পীর সাহেব যদি এমন হুকম দেন যাহা প্রকাশ্যে শরিয়তের খেলাফ হয়, তবুও তা নিরাপত্তিতে আদায় করিবে.... (আশেক মাশুক, ৩৫পৃ.)
৩. আমি এতবড় আলীশান খোদা, আমি জমিন ও আসমানে সামাই হই না, একমাত্র মোমেনের কলবে সামাই হই.... (ভেদে মারেফাত, ২১পৃ
৪. মনসুর হাল্লাজ আল্লাহপাকের মোরাকাবা করিতে করিতে আল্লাহর নূরের মধ্যে গরক হইয়া হঠাৎ একদিন বলিতে লাগিলেন আনাল হক (আমি খোদা)... (আশেক মাশুক, ৪২পৃ.)
৫. পীর সাহেব হলেন আখেরাতের উকিল স্বরূপ... (ভেদে মারেফাত, ৬০পৃ
৬.যেই ব্যক্তির পীর নাই, তাহার পীর শয়তান... (ভেদে মারেফাত, ২৩পৃ
৭. বান্দা অসংখ্য গুনাহ করার ফলে আল্লাহপাক তাহাকে কবুল করিতে চান না। পীর সাহেব আল্লাহপাকের দরবারে অনুনয় বিনয় করিয়া ঐ বান্দার জন্য দোয়া করিবেন, যাহাতে তিনি কবুল করিয়া নেন।... (ভেদে মারেফাত, ৩৪পৃ
৮. কাফন চোরের হাত আমার হাতের সঙ্গে লাগিয়াছে, এখন কেয়ামত দিবসে ওকে ছাড়িয়া আমি কেমনে পুল ছেরাত পার হইয়া যাইব? (ভেদে মারেফাত, ২৭-২৮পৃ
৯. পীরের মুরীদ হওয়া ফরজ। (মাওয়াযেজ এসহাকিয়া)
১০. যদি কারো দুইজন পীর হয় তবে দুই পীর তোমার দুই ডানা ধরে বেহেশতে নিয়ে যাবেন, কোনই ক্ষতি নেই। (মাওয়াযেজ এসহাকিয়া, ৫৫-৫৬পৃ
এগুলো কি মুসলমানের আক্বীদা? কোরাআন হাদীসের সাথে এসবের সম্পর্ক আছে কি? কয়েকটি উপমা দিলাম মাত্র। এরূপ হাজারটা দেয়া যাবে। হিন্দুরা তো না জেনে শিরক করে, কিন্তু এরা কেন করে জানেন? এক কথাই, এসব শুধুই ধান্দা। কারণ- ইরি ধান, বুরো ধান, মুরিদান, আয়ের শ্রেষ্ঠ তিন উপদান। সব ধান্দা ভাইয়েরা। কেও অজ্ঞনতার সহিত কুফরী করলো, আল্লাহপাক তাহাকে লগু শাস্তি দিবেন, হয়তো মাফও করতে পারেন। কিন্তু যে জেনে শুনে কুফরী করলো, সে মাফ পা্ওয়া তো দূরে থাক, তার শাস্ত হবে দ্বিগুন। কারণ সে ইচ্ছাকৃত কুফরী করলো।
যার আমল তার সাথে যাবে, কাউর কোন আমল কাউর কোন উপকারে আসবে না। ভালো কাজ করলে ভালো কাজের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত, বিপরীতে জাহান্নাম অরধারিত। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন: "যে ব্যক্তি গুনাহ করে, তা তারই দাযিত্বে থাকে। কেউ অপরের বোঝা বহন করিবে না।" (সূরা আনআম: ১৬৪) হযরত আবু হুরাইরা (রা থেকে বর্ণিত:
قَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ (وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ)، قَالَ: يَا مَعْشَرَ قرَيْشٍ, اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللهِ، لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مَنَ اللهِ شَيْئًا يَا عَبَّاسُ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لاَ أُغْنِي عَنْكَ مِنَ اللهِ شَيْئًا وَيَا صَفِيَّةُ عَمَّةَ رَسُولِ اللهِ لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللهِ شَيْئًا وَيَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم، سَلِيني مَا شِئْتِ مِنْ مَالِي، لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللهِ شَيْئًا. (رواه البخاري ومسلم)
"যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এই আয়াত (আপনি নিকটতম আত্মীয়দের সর্তক করে দিন) নাযিল করেন, তখন নবী করীম (স (নিজের আত্মীয় স্বজনকে) দাওয়াত দিতে উঠেন। তিনি বলেন, হে কোরাইশ সম্প্রদায়, নিজেকে আল্লাহর আযাব থেকে ক্রয় করিয়া ফেলো, আমি তোমাদেরকে আল্লাহর আযাব হইতে রক্ষা করতে পারবো না। হে আবদে মানাফের সন্তানরা, আমি তোমাদেরকে আল্লাহর আযাব হইতে বাঁচাতে পারবো না। হে আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব, আমি আপনাকে আল্লাহর আযাব হইতে রক্ষা করতে পারবো না। হে সাফিয়া, রাসূলের ফুফী, আমি আপনাকে আল্লাহর আযাব হইতে রক্ষা করতে পারবো না। হে ফাতেমা, মুহাম্মদের মেয়ে, আমার সম্পত্তি যাহা ইচ্ছা তুমি চাইতে পারো, কিন্তু আল্লাহর আযাব হইতে আমি তোমকে বাঁচাতে পারবো না। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)
যারা এসব পীরদের পিছনে সময় নষ্ট করছেন তাদের জন্য উপেরোক্ত হাদিসটি যতেষ্ট। যেখানে রাসূল (স তাঁর প্রতিবেশী, নিকট আত্মীয়, চাচা, মেয়ে, ফুফী কাউকে আল্লাহর আযাব হইতে বাঁচাতে পারবে না, সেখানে পীর আপনাকে কেমন করে বাঁচাবে? এসব ভন্ডদের পিছু ছেড়ে কোরআন সুন্নাহ অনুসরণ করুন।
নুসরণ করুন।
লেখাটা PeaceBD (শান্তির বাংলাদেশ) থেকে সংগ্রহ করা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:২৭