somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির নির্বাহী পরিচালক যা বললেন।ফায়ার সার্ভিস ও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির চুকতি

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি তখন আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত। এক সপ্তাহ আগে তাজরিন ফ্যাশনে আগুন লেগে সারা বিশ্বে হৈচৈ সৃষ্টি হয়েছিল। ফ্যাক্টরিতে ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে ফ্যাক্টরির অগ্নি নিরাপত্তা পরিদর্শনের জন্য ইন্সপেক্টর ও সহকারী পরিচালক এলেন। ওনাদেরকে সসম্মানে বসতে দেয়া হল। ওনারা একটি কাগজ ধরিয়ে দিলেন। এই কাগজে বিল্ডিং এ আগুন সংক্রান্ত কিছু তথ্য দেয়া আছে যা মানলে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুব কম। যদি আগুন লেগেই যায় তাহলে হতাহতের ঘটনা খুব কম হবে। একটা ফরম ফিলাপ করতে হল- ফ্যাক্টরির কোন তলায় কতজন লোক কাজ করেন, কয়টি সিঁড়ি, হোস পাইপ কয়টি, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র কয়টি ইত্যাদি। হিসাব করে দেখলাম আমাদের ফ্যাক্টরিতে যতগুলো ফায়ার ইশটিংগুইশার প্রয়োজন তার চেয়ে অনেক কম আছে। নির্দিষ্ট সময় পর পর এসব অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রিফিল করতে হয়। রিফিল করা মানে মেশিনের ভেতরে যে গ্যাস আছে তা বের করে নতুন গ্যাস ভরতে হয়। পুরানো গ্যাস দিয়ে আগুন নিভে না। ফায়ার ইন্সপেক্টর আধাঘন্টা কথা বলে যে রেজাল্ট বের হল তা নিম্নরূপঃ
কষ্ট করে রিফিল করার দরকার কী? অনেক টাকা লাগবে। বরং মেশিনের উপরের রিফিলের তারিখ নতুন করে লিখে দিন।
যেখানে মেশিন প্রয়োজন ২০টা সেখানে ছিল ১২টা, বাকীটা আমরা দেখিয়ে দেব। উল্লেখ্য ২০টা মেশিন না দেখালে সরকার ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেবে।
ভবনের নীচতলায় পানির ট্যাংকি থাকতে হবে। যেহেতু পানির ট্যাংকি করা ব্যায়বহুল ব্যপার তাই ওখানে শুধু শুধু টাকা খরচ না করে ফায়ার ইন্সপেক্টরের পেছনে খচর করাই ভাল!

এভাবে শেষ পর্যন্ত ফায়ারের লোকজন দশ হাজার টাকার বিনিময়ে এতগুলো শ্রমিকের জীবন রিস্কে ফেলে দিল।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে মালিকেরা করছে কী? ওনাদের কি দায়িত্ব নেই?
ফায়ার ইকুয়েপমেন্ট কোন ফ্যাক্টরিতে কতটুকু দরকার তা নির্ধারণ করে দেয় ঐ এলাকার ফায়ার অফিস। ফায়ার ইকুয়েপমেন্ট এর সাথে আরো অনেক কিছু জড়িত। রাজউক, বিজিএমইএ সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের ইন্সপেকশনের পরে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি রপ্তানীর সুযোগ পায়। ২২টি সার্টিফিকেট হাতে না পেলে সরকার কোন প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয় না। এই ২২টি সার্টিফিকেট বৈধ উপায়ে এই পর্যন্ত কেউ পায়নি। প্রত্যেকটা সার্টিফিকেট প্রচুর টাকা দিয়ে কিনতে হয়। আপনার ফ্যাক্টরি যদি শতভাগ আইন মেনে চালু করেন অথবা আইন না মেনে চালু করেন সার্টিফিকেট দেনেওয়ালারা মোটা অঙ্কের টাকা না পেলে সার্টিফিকেট দেয় না। কাউকে এই পর্যন্ত দেয় নাই। তখন কোন কোণ ফ্যাক্টরির মালিকেরা মনে করেন –টাকা দিয়েই যখন সার্টিফিকেট কিনতে হচ্ছে তাহলে শ্রমিকদের সুবিধা দিয়েই বা লাভ কী?
আর সার্টিফিকেট দেনেওলারা মনে করেন –টাকা যখন পেয়েই গেছি তখন আর ফ্যাক্টরি দেখে লাভ কী?
এভাবে টাকার ফাঁদে গরীব মানুষ গুলো বিক্রি হয়ে যায়।




from Facebook
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×