somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বিতীয় জগৎ

১০ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

( ১ )
কিশোরদা আসলেই একটা হারামি। তার চমক দেখানোর দক্ষতায় যেমন মুগ্ধ হই তেমনি মাঝে মাঝে বেকায়দায় পড়তে হয়। কালকের চমক মনে হয় আমাকে বেকায়দাই ফেলে দিয়েছে না বেকায়দায় নয়, রীতিমত যন্ত্রনা। বিখ্যাত নায়িকার পর্নো, দেখবো না মুখে বললেও ‌সুপ্ত বাসনা মন থেকে সরাতে পরছিলাম না। অবশেষে বিজয়ের হাসি হেসে কিশোরদার চলে যাওয়ার পরই আমার সমস্যার ভয়াবহতার মাত্রা অনুধাবনের চেষ্টা করছি। আমি কোন সাধু সন্ন্যাসী না, তাই ও দেখার অভ্যাস একটু আধটু আগে থেকেই ছিল। কিন্তু আজকের এই অহেতুক কামভাব আস্তে আস্তে মাথাচারা দিয়ে উঠছে কেন বুঝতে পারছি না। নায়িকা বলে কি ?
না
তাহলে ?
তাহলে পরিত্রানের উপায় কি ?
একমাত্র উপায় সে জানে কান্তু তার ভয়াবহতা ও তার জানা, সে আগেও অনেক বার চেষ্টা করেছে কিন্তু বিশেষাঙ্গে একাধিক ক্ষত নিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে কাম চরিতার্থ হয় না। সে কথা ভাবতেই তার গাঁ শিরশির করে উঠলো। অন্য কোন উপায় ... ...
নিজেকে নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা তার বিস্ময় কর, তাহলে এমন হচ্ছে কেন ? ঘুর্নায়মান ফ্যানের দিকে তাকিয়ে কারণ খুজতে থাকে সে। একা ঘরে থাকলে কিছু মানসিক সমস্যা হয় তার কিন্তু আজ হয়নি কারণ আজ সে অনেক ক্ষণ কবিতা পড়েছে। হঠাৎ তার মনে পড়ে যায় তার হাতে কিছু টাকা আছে, হা তাইতো - টাকা মানুষ কি কোন ভাবে মানব ইন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন করতে পারে ?
হা, পারে।
কিভাবে ?
ঘুর্ণায়মান পাখার দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে সে। একা থাকার এই এক যন্ত্রনা। দুনিয়ার চিন্তা এসে ভর করে মাথায়। আজ সব চিন্তা ছাপিয়ে মাথা চারা দিয়ে উঠেছে এক আদিম প্রবৃত্তি, যা সে ভুলতে চাইছে তাই খেলচে তার মনে অবুঝ শিশুর মত নিষেদ অমান্য করার আদিমতা। না, সে পরাজিত হবে না- এক যুদ্ধে লিপ্ত হয় সে,
নিজের সাথে ?
মনের সাথে ?
শরীরের সাথে ?
সবই আজ তার শত্রু , এই মহূর্তে দরজার আড়ালে ডেকে আঙ্গুরের দেওয়া কিশোরি চুম্বনে সুখানুভুতির কথা সে ভাবতে চায় না। তার চেয়ে না খেয়ে কাটানো রাতে পাকস্থলির কান্না বা পয়সার
অভাবে দীর্ঘ পথ হাঁটার পর ব্যাথায় টনটন করা পায়ের কথা ভাবতে ভাল লাগে তার। হঠাৎ আনন্দে চোখ ঝলমল করে ওঠে তার, কারণ খুঁজে পেয়েছে সে, নিজের অভূতপুর্ব চিন্তা শক্তি দেখে মাঝে মাঝে নিজেকেই পুরষ্কিত করতে ইচ্ছা করে তার। সামর্থ হলে করেও ফেলতে পারে একদিন। ইদানিং এসব এন্থার হচ্ছে যাহোক – যখন পকেট ফাকা থাকে তখন ঘুমানোর আগে ভাবতে হয় সকালে কি খাব কোথায় পাব ? কোথাও যেতে হলে কিভাবে যাব গেলে কিভাবে আসব ? অথাৎ পক্ষাঘাত গ্রস্থ রোগির মত বিছানায় পরে রোগ মুক্তির জন্য তরপাতে হয় সুতরাং বৈষয়িক ভাবনার বাইরে অন্য ভাবনা ভাবা বা শরীরকে ইন্দ্রিয় ভাবনায় ভাবিত করার অবকাশ মানুষের হয় না।
তাহলে টাকাই ব্যক্তির নিয়ন্ত্রক ?
টাকা প্রভু – প্রথম না দ্বিতীয় ?
নাহ্ ! নায়িকার নগ্ন শরীর তার ভিতর বড় দগদগ করছে। সুতরাং চিন্তা আরও গভীর করতে হবে-
আচ্ছা টাকার এই নিয়ন্ত্রন ক্ষমতাকে কি কোন বিখ্যাত ত্বাত্ত্বিক এর ত্বত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না ?
মার্ক্স তো পুঁজিবাদ আর শ্রেনী সংগ্রাম নিয়ে বহু ত্বত্ত্ব দিয়েছেন সেখানে কি পুঁজি বনাম মানব ( মন ও শরীর ) দুই এর মাঝে সংর্ঘষিক কোন ত্বত্ত্বের অবতারনা তিনি করেছেন ? নিজের ক্ষুদ্র জ্ঞান ভান্ডারের মধ্যে শুন্য ইঞ্চি ফাঁসের জাল দিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কিছু না পেয়ে হতাঁশ হয় সে। সাতাশ বছরের জীবনে কিছুই শেখে নি সে। তাহলে অন্য কোন ত্বত্ত্বিক ? আবার জাল ফেলে সে, একের পর এক ক্ষেও দিয়ে চলছে.. .. .. আচ্ছা ফুকো, মিশেল ফুকো দিয়ে কি ব্যাখ্যা করা যায় ? সে তো ক্ষমতা, ক্ষমতার দন্দ্ব আর রাজনীতি নিয়ে অস্থির। অর্থ শরীর নিয়ে ভাবার সময় কই ? না এরকম কোন ত্বত্ত্ব মিশেল.. .. .. ফুকো নিয়ে একটা মজার ঘটনা মনে পড়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কোন এক মৌখিক পরীক্ষায় তাকে করা প্রশ্নের উত্তরে সে একটি উদ্ধৃতি করেছিল। স্যার বললেন- কে বলেছেন ? স্যারের প্রশ্নে মজা পেয়ে গেল সে আর মজা ধরে রাকার প্রতি প্রচন্ড আসক্ত সে। উত্তর দিল- মাইকেল ফুকো।
হো হো.. . .. হা হা .. .. স্যার হাসছে, স্যারেরা হাসছে।
সেও হাসছে, তার মনে পড়ছে ছোট বেলার কথা। বানর খেলা দেখাত গ্রামে, বানর ঘুমিয়ে আছে। বানর ওয়ালা বলত- ও সখিনার মা ওঠো, হাটে থাইকা সখিনার বাপ আইছে। বানর ওঠে না। যখন বলা হয়- তোমার লাইগা দুল ফিতা আইনছে, তখন বানর মোচর দিয়ে উঠে একটা লম্বা হাসি হাসে। স্যারের হাসি সে রকম লাগছে।
হাসছো কেন ?- স্যারের ধমক। সে হাসছে কারণ, ফুকো এমন একজন ত্বাত্ত্বিক সমাজ বিজ্ঞান নিয়ে যে এক পৃষ্ঠা পড়াশোনা করেছে সেই তার নাম জানে আর স্নাতকোত্তর একজন ছাত্র ফুকোর নাম জানেনা এটা স্যাররা ভাবতে পারছে এবং ভেবে মজাও পাচ্ছে।
স্যার, মিশেল ফুকো।
না, মিশেল ফুকো দিয়ে হলো না। বিকল্প ভাবনা ভাবতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতির মত, তৃতীয় পক্ষের খোজ করতে হবে। কে সেই ত্বাত্ত্বিক যে তাকে মহা সমুদ্র থেকে উদ্ধার করথে পারে। বদ্ধ রুমটা আস্তে আস্তে গুমট হয়ে উঠছে, চার পাশে ছড়ানো বই গুলোর গন্ধ পচা ডিমের গন্ধের মত মনে হচ্ছে। হালকা শীত বলে বারান্দার দরজা বন্ধ, তার দমও কি বন্ধ হয়ে যাবে ? কিন্তু কে সেই ত্বত্ত্বিক, কে ?
তার পুরুষাঙ্গে ব্যাথা করছে, টনটনে ব্যাথা-উহ ! সে ভেবেছিল এতক্ষনে নিস্তেজ হয়ে গেছে কিন্তু না, সে এখন কি করবে ?
তাহলে কি ফ্রয়েড ই শেষ ভরসা ? না ! সে আর ভাবতে পারছে না, শেষ পর্যন্ত কি ফ্রয়েড ই ভরসা ? হঠাৎ গাঁ ঝাড়া দায়ে উঠে দাঁড়ায় সে ঠিক পাখির গাঁয়ে পানি পড়লে যে ভাবে গাঁ ঝাড়ে সেভাবে তার পর ধীর পায়ে গিয়ে দরজা খোলে সে, বারান্দার রেলিং ধরে দাড়ায়। ঠান্ডা হাওয়ার প্রথম ঝাপটায় কেপে ওঠে শরীর অদ্ভুত অনুভুতি হয় তার, নারীর প্রথম আলিঙ্গনের মত। নাহ ! আবারও সেই, বুঝতে পারছে না সে কেন তার সব ভাবনা এক জায়গায় জমাট বাধছে ? সে রাতের ঢাকা দেখার চেষ্টা করে। আগে আকাশের দিকে তাকায় সে যদিও ঢাকার আকাশে নতুন করে দেখার মত কিছুই নেই, বার মাস একই রকম কাল কাল, মনে হয় বিষাক্ত কালো ধোয়া ছিটিয়ে রেখেছে সর্বত্র। না, ভাল লাগার কিছুই পায় না সে তার পর অভ্যাস বসতই তাকায় খানিক দূরের এক জানালায়। প্রতিটি পর্দার মাঝে একটু করে ফাঁকা যদিও নতুন নয়, সব সময় এরকমই থাকে কিন্তু ঘর ফাঁকা তাহলে কি এখনো সময় হয় নি ? রাত কটা বাজে, ঘড়িটা বিছানার উপর কিন্তু ঘরে যেতে ইচ্ছা করছে না বরং এখানে স্বস্তি পাচ্ছে সে। সুতরাং ঠায় দাড়িয়ে থাকে সে, অপেক্ষা করে।
অপেক্ষা এবং অপেক্ষা অধীর অপেক্ষা... ...
কঠিন সময়, অপারেশন থিয়েটারে রোগী রেখে বাইরে স্বজনদের উৎকন্ঠিত প্রতি মহূর্তের মতই সময় কাটছে তার। আজ দেখতে পারবে কি সেই অনিশ্চয়তাও তার মনে, কিন্তু কেন ? কি দেখে সে ? কিছুই না, পর্দার আড়ালে লাল পোশাকে আবৃত মূর্তির ক্ষনিক উপস্থিতি এবং এত দূর থেকে দেখে সে আজও নিশ্চত হতে পারে নি সে নারী কি না বা তার কর্মকান্ড কি ? তাহরে কিসের এত ব্যাকুলতা তার না কি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত সাময়িক যন্ত্রনা ভুলে থাকার চেষ্টা। প্রতীক্ষার পালা শেষ হয় তার, লাল আসে একই কাজ করে এবং চলে যায়। তার চরম কৌতুহল জন্ম নেয় আজ। আসলে সে কি করে ? গভীর ভাবে দেখার চেষ্টা করেও সে কিছুই দেখতে পারেনি বরং আজ আরও ঝাপসা দেখেছে। তবে কি চোখের কোন সমস্যা হল ? ভয় হচ্ছে, কালই একবার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। আগে থেকেই তার চোখের সমস্যা আছে সুতরাং অবহেলা করা উচিৎ হবে না।
চলবে.. .. ..


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×